loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • শেষ মুহূর্তের গোলে ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

  • আর্সেনালের কাছে পাঁচ গোলে উড়িয়ে গেলো চেল্সি

  • হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

  • বেপজা অর্থনৈতিক জোনে চীনা কোম্পানির ১৯.৯৭ মি. ডলার বিনিয়োগ

  • কাতারের আমিরের ঢাকা ত্যাগ

সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আর নেই


সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আর নেই

চলে গেলেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।

ভারতীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, গত ২৬ জানুয়ারি বুধবার সন্ধ্যায় অসুস্থ হয়ে পড়েন কিংবদন্তি এই সঙ্গীতশিল্পী। পরের দিন তাঁকে গ্রিন করিডোর করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসকরা জানান, তাঁর ফুসফুসে সংক্রমণ হয়েছিল। এর দুই দিন আগেই পদ্মশ্রী সম্মান প্রত্যাখ্যান করেছিলেন তিনি।

সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কন্ঠে মুগ্ধ হয়েছে কয়েক প্রজন্ম। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরব বিভিন্ন ভাষার সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন তিনি। সিনেমার গানের পাশাপাশি বাংলা আধুনিক গান ও ধ্রুপদী সঙ্গীতে পারদর্শী ছিলেন তিনি। ‘কে তুমি আমারে দেখো', ‘তুমি না হয় রাখিতে কাছে', ‘ঝিকিমিকি তাঁরা', ‘ওগো মোর গীতিময়’ কিংবা ‘তীর বেঁধা পাখি’, ‘হয়তো কিছুই নাহি পাবো’, ‘আয় বৃষ্টি ঝেপে ধান দেবো মেপে’, ‘মায়াবতী মেঘে এল তন্দ্রা’, ‘শঙ্খ বাজিয়ে মাকে ঘরে এনেছি’, ‘চম্পা চামেলি গোলাপেরই’ গানের মতো অসংখ্য গান গেয়ে আজও বাঙালির মনে-প্রাণে-অস্তিত্বে মিশে আছেন তিনি।

বড়ে গুলাম আলি খাঁর শিষ্যা ছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। ১৯৩১ সালের ৪ অক্টোবর দক্ষিণ কলকাতার ঢাকুরিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। সঙ্গীতে শিক্ষার মূলে ছিলেন দাদা রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। ১৯৪৫ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে প্রথম গান রেকর্ড করেন। ১৯৪৮ সালে প্রথমবার রাইচাঁদ বড়ালের সঙ্গীত পরিচালনায় প্লেব্যাক করেন ‘অঞ্জনগড়’ সিনেমায়।

১৯৫০ সালে মুম্বাই পাড়ি দিয়েছিলেন আধুনিক গানের সম্রাজ্ঞী সন্ধ্যা। মোট ১৭ টি হিন্দি সিনেমায় প্লেব্যাক করেন তিনি। শচীন দেববর্মনের সুরে প্লেব্যাকের সুযোগ হয় অনিল বিশ্বাসের ‘তারানা’ ছবিতে। রাইচাঁদ বড়াল, শচীন দেব বর্মন  থেকে শুরু করে সলিল চৌধুরী, নচিকেতা ঘোষ, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়সহ সেই সময়ের সব দিকপাল সঙ্গীত পরিচালকের সঙ্গেই কাজ করেছেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। 

উত্তম সুচিত্রার লিপে তাঁর ও হেমন্তের  রোমান্টিক গান আজও সমান জনপ্রিয়। ‘এই পথ যদি না শেষ হয়’, ‘এ শুধু গানের দিন’, ‘এই মধুরাত’ গানগুলো আজও বাঙালির কাছে রোমান্টিসিজমের সমার্থক।

সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় ১৯৭১ সালে ‘জয়জয়ন্তী’ ও ‘নিশিপদ্ম’ ছবিতে গান গেয়ে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১১ সালে বঙ্গবিভূষণ সম্মান পান তিনি। ২০২২ সালে তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ দিতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার; কিন্তু এতদিন পরে এই সম্মান দেওয়ায়, অভিমানে পদ্মশ্রী নিতে অস্বীকার করেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি ও  প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

পৃথক শোকবার্তায় রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার-প্রধান বলেন, উপমহাদেশে গানের মুগ্ধতা ছড়ানোর পাশাপাশি মহান মুক্তিযুদ্ধে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে তাঁর অবদান এদেশের জনগণ চিরদিন শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।

তাঁরা সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের আত্মার শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

Loading...