loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ ২৯ মে

  • সিটিকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে রিয়াল

  • আর্সেনালকে বিদায় করে সেমিতে বায়ার্ন

  • ‘রাজকুমার’ যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যানাডার ৭৫ থিয়েটারে

  • ভারতের বিপক্ষে টাইগ্রেসদের দল ঘোষণা

ভাষাসৈনিক, সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী আর নেই


ভাষাসৈনিক, সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী আর নেই

ভাষাসৈনিক, বরেণ্য সাংবাদিক, কলাম লেখক ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরী আর নেই। লন্ডনে স্থানীয় সময় বুধবার (১৮ মে) রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। যুক্তরাজ্যে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন জাতীয় বার্তা সংস্থাকে তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। তিনি চার মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর স্ত্রী সেলিমা চৌধুরী লন্ডনের একটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

গাফফার চৌধুরীর ছেলে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক অনুপম চৌধুরীর বরাত দিয়ে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মুখপাত্র জানান, ‘তিনি শান্তিতে মারা গেছেন।’ এই কর্মকর্তা আরও বলেন, যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ মিশন গাফফার চৌধুরীর পরিবারের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছে। তাঁর দাফন ও শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছে।

আবদুল গাফফার চৌধুরী বায়ান্নোর ভাষা আন্দোলনের কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’-এর রচয়িতা। বিবিসি বাংলা সার্ভিসের শ্রোতাদের জরিপে গানটি তৃতীয় সেরা বাংলা গান হিসেবে বিবেচিত হয়।

গাফফার চৌধুরী স্বাধীনতা যুদ্ধে মুজিবনগর সরকারে মাধ্যমে নিবন্ধিত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা সাপ্তাহিক ‘জয় বাংলা’র প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক ছিলেন। তিনি ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের পরে লন্ডনেই স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছিলেন।

আবদুল গাফফার চৌধুরী ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশালের গ্রাম উলানিয়ার চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা হাজি ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা মোসাম্মৎ জহুরা খাতুন। তাঁরা তিন ভাই ও পাঁচ বোন।

তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

ছাত্রজীবনেই লেখালেখিতে হাতেখড়ি গাফফার চৌধুরীর। ১৯৪৯ সালে মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন সম্পাদিত ‘মাসিক সওগাত’ পত্রিকায় তাঁর গল্প প্রকাশিত হয়েছিল। ১৯৫২ সালে সাময়িকপত্রে প্রকাশিত হয় প্রথম উপন্যাস ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’।

১৯৫৬ সালে যোগ দেন তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া সম্পাদিত ‘দৈনিক ইত্তেফাক’-এ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী কলমযোদ্ধার ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ‘জয় বাংলা’ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।

গাফফার চৌধুরী সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা ও ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন। ‘ডানপিটে শওকত’, ‘নীল যমুনা’, ‘শেষ রজনীর চাঁদ’, ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশী’সহ তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা ৩০টির মতো।

এছাড়া, তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে রয়েছে – ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’, ‘একজন তাহমিনা’ ও ‘রক্তাক্ত আগস্ট’। তিনি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড নিয়ে ‘পলাশী থেকে ধানমন্ডি’ নামের একটি ফিল্মও প্রযোজনা করেন।

কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন গাফফার চৌধুরী। তিনি ১৯৬৩ সালে ইউনেস্কো পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া, বাংলা একাডেমি পদক, একুশে পদক, শেরেবাংলা পদক, বঙ্গবন্ধু পদকসহ আরও অনেক পদকে ভূষিত হয়েছেন।

বর্ষীয়ান এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Loading...