একেই বোধহয় বলে মধুর প্রতিশোধ! এই শ্রীলঙ্কাই কয়েকদিন আগেই গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে পরাজিত হয়েছিল। শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) নেওয়া হয়ে গেলো তারই বদলা। দু’দিন আগে বাংলাদেশকে হারিয়ে উজ্জীবিত দলটি এশিয়া কাপ টি-টোয়েন্টির সুপার ফাের পর্বে পাঁচ বল হাতে রেখেই আফগানদের হারিয়ে দিয়েছে চার উইকেটের ব্যবধানে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজায় অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ছিল টানটান উত্তেজনা। বারবার ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বদল হচ্ছিলো। যাহােক, নির্ভীক ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত জয় হলো শ্রীলঙ্কার। আর আফগানিস্তান পেলো টুর্নামেন্টে প্রথম পরাজয়ের তিক্ত স্বাদ।
এদিন টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে ছয় উইকেটে ১৭৫ রান সংগ্রহ করে আফগানিস্তান। ৪৬ রানের ভালো ওপেনিং জুটি উপহার দেন হজরতুল্লাহ জাজাই এবং রহমানুল্লাহ গুর্বাজ। পঞ্চম ওভারে ১৬ বলে ১৩ রান করা জাজাই বোল্ড হলে ভাঙে জুটি। শিকারী দিলশান মাদুশাঙ্কা। মাত্র ২২ বলে ফিফটি করেন রহমানুল্লাহ। দ্বিতীয় উইকেটে ইব্রাহিম জাদ্রানের সঙ্গে তাঁর জুটি জমে ওঠে।
ত্রয়োদশ ওভারে তিন অংক স্পর্শ করে আফগানদের স্কোর। দারুণ ব্যাটিংয়ে রহমানুল্লা এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। মনে হচ্ছিলো, আসরের প্রথম সেঞ্চুরিটা এদিনই দেখা যাবে। কিন্তু, তা হয়নি। ৪৫ বলে ৮৪ রান করে আসিথা ফার্নান্দোকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ধরা পড়েন হাসারাঙ্গার হাতে। তাঁর ইনিংসে ছিল চার বাউন্ডারি আর ছয়টি ছক্কার মার। এর সাথে অবসান হয় ৬৪ বলে ৯৩ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটির। ১০ বলে ১৭ করা নাজিবুল্লাহ জারদান রান-আউট হয়ে যান।
ঊনবিংশ ওভারে দুইবার আঘাত হানেন মহিশ থিকশানা। চতুর্থ বলে ফিরিয়ে দেন ৪০ রান করা (৩৮ বল) ইব্রাহিম জাদ্রানকে। পরের বলেই কট অ্যান্ড বোল্ড হয়ে ফেরেন আফগান-অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি (১)। শেষ ওভারের শেষ বলে আফগানদের ষষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটে রশিদ খানের (৯) রান-আউটে।
৩৭ রানে দুইটি উইকেট শিকার করেছেন মাদুশাঙ্কা। একটি করে পেয়েছেন মহিশ থিকশানা এবং আসিথা ফার্নান্দো।
জবাবে, রান তাড়ায় নেমে ফজলহক ফারুকীর করা ইনিংসের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান পাথুম নিশাঙ্কা। ৬.২ ওভারে ওপেনিং জুটিতে চলে আসে ৬২ রান। ১৯ বলে দুই চার তিন ছক্কায় ৩৬ রান করা কুশল মেন্ডিস নাভিন উল হকের শিকার হলে এই জুটির অবসান হয়। পাথুম নিশাঙ্কা ফেরেন ২৮ বলে ৩৫ করে। উইকেট কমতে থাকলেও শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা আক্রমণাত্নক মানিসকতা থেকে একবিন্দুও সরেনি; দলের প্রায় সবাই আফগান বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলেছেন।
রশিদ খানের বলে বোল্ড হওয়ার আগে দানুশকা গুনাথিলাকা করেছেন ২০ বলে ৩৩ রান। ভানুকা রাজাপক্ষের ১৪ বলে ৩১ রানের গুরুত্ব অপরিসীম। হাসরাঙ্গার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ঊনবিংশ ওভারেই স্কোর সমান হয়ে যায়। ফলে, শেষ ওভারে দরকার ছিল মাত্র ১ রান। ফজল হক ফারুকীর করা শেষ ওভারের প্রথম বলটিই সীমানাছাড়া করে দলকে চার উইকেটে জয়ে এনে দেন হাসারাঙ্গা। তিনি অপরাজিত ছিলেন নয় বলে ১৬ রান করে।
আগামী ৬ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে শ্রীলংকা ও ৭ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলবে আফগানিস্তান। এর আগে, রোবরার (৪ সেপ্টেম্বর) আবার ভারত-পাকিস্তান হাইভোল্টেজ ম্যাচ।