পাকিস্তান এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে পরাজয়ের মধুর প্রতিশোধ নিয়েছে। সুপার ফোরের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ভারত বড় স্কোর করলেও তাঁদের বোলিং ছিল একেবারেই সাদামাটা; ফিল্ডিংও ছিল দুর্বল। ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সহজ ক্যাচ মিস করেছেন ফিল্ডাররা। বোলাররা দিয়েছেন অতিরিক্ত রান। ফলশ্রুতিতে, মোহাম্মদ রিজওয়ান-মোহাম্মদ নওয়াজদের তৈরি করা মঞ্চে পাকিস্তানকে পাঁচ উইকেটের দারুণ জয় এনে দেন খুশদিল শাহ ও আসিফ আলি।
এর আগে, গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে পাঁচ উইকেটে হারিয়েছিল ভারত।
এদিন দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ভারতের করা সাত উইকেটে রান ১৮১ রান তাড়া করতে নেমে ভুবনেশ্বর কুমারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন রিজওয়ান। অবশ্য, এই ভালো শুরুটা বেশিক্ষণ ভালো থাকেনি। অধিনায়ক বাবর আজম টানা তৃতীয় ম্যাচে ব্যর্থ হলেন। রবি বিষ্ণোইয়ের বলে রোহিত শর্মার তালুবন্দি হয়ে ফেরেন ১৪ রান করে। দলের স্কোর তখন ২২। রিজওয়ান দারুণ খেলছিলেন। ফখর জামানের সঙ্গে তাঁর জুটি জমে উঠতেই ফের ভাঙন। যুজবেন্দ্র চাহালের বলে ভিরাট কোহলির হাতে ধরা পড়েন ফখর (১৫); ভাঙে ৩০ বলে ৪১ রানের জুটি।
এরপর মোহাম্মদ নওয়াজকে নিয়ে জুটি জমিয়ে তোলেন রিজওয়ান। তিনি ৩৭ বলে টানা দ্বিতীয় ফিফটি করেছেন। চাহালের করা পঞ্চদশ ওভারে তিন চারে এসেছে ১৬ রান। পরের ওভারেই তৃতীয় উইকেটে ৪১ বলে ৭৩ রানের দারুণ এই জুটি ভাঙে নওয়াজের বিদায়ে। ভুবনেশ্বর কুমারের বলে সীমানায় ধরা পড়েন ২০ বলে ছয় চার দুই ছক্কায় ৪২ রান করা নওয়াজ।
পাকিস্তানের শেষ চার ওভারে দরকার ছিল ৪৩ রান। ব্যাপক খরুচে হার্দিক এদিন চার ওভারে ৪৪ রান দিয়ে শিকার করেন রিজওয়ানের মহাগুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি। হার্দিকের করা সপ্তদশ ওভারের পঞ্চম বলে সূর্যকুমারের তালুবন্দি হন ৫১ বলে ছয় চার দুই ছক্কায় ৭১ রান করা রিজওয়ান।
পরের ওভারে আসিফ আলীর বিপক্ষে রিভিউ নিয়ে ব্যর্থ হয় ভারত। পরের বলেই আসিফের সহজ ক্যাচ ছাড়েন অর্শদিপ; ভারত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। ১২ বলে দরকার ছিল ২৫ রান। ঊনবিংশ ওভারে ভুবনেশ্বর বেদম মার খেলে শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল সাত রান; বোলার অর্শদীপ সিং। দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মেরে সমীকরণ আরও সহজ করে দেন আসিফ। কিন্তু, নাটকীয়তা আরও বাকি ছিল। চতুর্থ বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন আট বলে ১৬ করা আসিফ; রিভিউ নিয়ে বাঁচতে পারেননি তিনি। পঞ্চম বলে দুই রান নিয়ে দলের পাঁচ উইকেটে জয় নিশ্চিত করেন ইফতেখার আহমাদ।
এর আগে, ভারত টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ২০ ওভারে সাত উইকেটে ১৮১ রান করে। লোকেশ রাহুল ও অধিনায়ক রোহিত শর্মা দলকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। ভারতের ওপেনিং জুটি মাত্র ৪.২ ওভারে পঞ্চাশ ছুঁয়ে ফেলে। তবে ৫৪ রানেই এই জুটির অবসান হয়েছে। হারিস রউফের বলে খুশদিল শাহর তালুবন্দি হন ১৬ বলে ২৮ করা রোহিত শর্মা। এর পরপরই ২০ বলে এক চার, দুই ছক্কায় ২৮ রান করা লোকেশ রাহুল ফেরেন শাদাব খানের শিকার হয়ে।
সূর্য এ-ম্যাচে বেশি আলো ছড়াতে পারেননি। মোহাম্মদ নওয়াজের বলে আসিফ আলীর তালুবন্দি হয়ে থেমেছে তাঁর ১০ বলে ১৩ রানের ইনিংস।
এরপর কোহলির ব্যাটে একাদশ ওভারে ১০০ ছাড়ায় ভারতের স্কোর। রিশভ পান্থ ১২ বলে ১৪ করে শাদাব খানের শিকার হন; এরপরই ডাক মারেন হার্দিক পান্ডিয়া। একপ্রান্ত আগলে রাখা কোহলি মোহম্মদ হাসনাইনকে ছক্কা মেরে ক্যারিয়ারের ৩২ নম্বর ফিফটি তুলে নেন ৩৬ বলে। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে রান-আউট হয়ে থেমে যায় তাঁর ৪৪ বলে চার বাউন্ডারি এবং এক ছক্কায় গড়া ৬০ রানের ইনিংস।
শেষ দুই বলে দুই চার মেরে রবি দলের স্কোর ১৮১তে নিয়ে যান।
পাকিস্তানের শাদাব খান ৩১ রানে দুই উইকেট পেয়েছেন। নাসিম শাহ, মোহাম্মদ হাসনাইন, হারিস রউফ এবং মোহাম্মদ নওয়াজের ঝুলিতে এসেছে একটি করে উইকেট।