loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইগ্রেসদের দল ঘোষণা

  • বার্সাকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে পিএসজি

  • অ্যাটলেটিকোকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে ডর্টমুন্ড

  • রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী কর তাগিদ দিলেন

  • ক্যানাডায় আর্টসেলের আটটি কনসার্ট

নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ছোঁয়ার দিন আজ?


নারী সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা ছোঁয়ার দিন আজ?

সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ)-এর ট্রফি নিয়ে ফটো সেশনে দুই অধিনায়ক – বাংলাদেশের ‘গোলমেশিন’সাবিনা খাতুন (ডানে) ও নেপালের আনজিলা সুব্বা।

সাফ উইমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) স্বাগতিক নেপালের বিরুদ্ধে লড়বে বাংলাদেশ। আসরের ফাইনালে এই প্রথমবার পরস্পরের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে এই দুই দেশ। কাঠমান্ডুর দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে বিকেল সোয়া পাঁচটায় শুরু হবে ম্যাচটি। টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এটাই প্রথম ভারতবিহীন ফাইনাল। নেপাল-বাংলাদেশ এর আগে কোনো আসরে শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি। নেপালের সাবিত্রা ভান্ডারি দক্ষিণ এশিয়ায় অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। অন্যদিকে, বাংলাদেশের সাবিনা-মণিকা-সিরাত-কৃষ্ণারা রয়েছেন দারুণ ফর্মে। ফলে, নারীদের জাতীয় দল প্রথমবারের মতো সাফ-এর শিরোপা জিতলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না।

পুরুষ দল সাফ শিরোপা জিতেছে, সেটাও ১৯ বছর হয়ে গেছে। ২০০৩ সালের সেই স্বাদ প্রায় ভুলেই গেছে দেশের মানুষ। মেয়েরা বয়সভিত্তিক পর্যায়ে জিতেছে, ছেলেরাও। কিন্তু, মূল সাফ শিরোপার তৃষ্ণা কী তাতে মেটে? এই অঞ্চলে ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব যে এই একটি আসরেই! এবার, নারী দল সেই সিংহাসনে বসবে – বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে কান পাতলে এই আশাবাদই শোনা যাচ্ছে। সাবিনা খাতুনের দল গত কয়েক দিনে আশার এই রেণু ছড়িয়েছে। নেপালের দশরথ রঙ্গশালা স্টেডিয়ামে স্বাগতিক দলকে স্তব্ধ করে দিয়ে সোমবার তাঁরা শিরোপায় হাত ছোঁয়াবেন – এটিই বোধ হয় ফুটবলভক্তদের এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় চাওয়া।

গত এক যুগে বাংলাদেশ এ-মঞ্চে উঠেছিল আরও একবার। ২০১৬ সালে, শিলিগুড়িতে ভারতের বিপক্ষে ছিল সেই ফাইনাল। কিন্তু, এতটা শিরোপাকাতর ছিল না সেই বাংলাদেশ। একে তো সামনে ভারত, তার ওপর প্রথম ফাইনালে পা রাখাও তখন ছিল বিরাট অর্জন। তবে, এবার বাংলাদেশ পেছনের সব রেকর্ড-ইতিহাস গুঁড়িয়ে নতুন কাব্য লিখে চলেছে। সন্দেহ নেই – গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয়ই এই বাংলাদেশ দলের সামর্থ্যের সবচেয়ে স্পষ্ট ছবি। সোমবারের ফাইনালের প্রতিপক্ষ নেপালও প্রথমবার ভারতকে হারিয়েই উঠেছে ফাইনালে; তবে, তাঁরা জিতেছে ১-০ ব্যবধানে।

বাংলাদেশ নারী দল এই টুর্নামেন্টে নিজেদের শক্তিমত্তা জানাতে কার্পণ্য করেনি একটুও। তাঁরা চার ম্যাচে প্রতিপক্ষের জালে ২০ বার বল পাঠিয়েছেন; সেটিও নিজেদের গোলপোস্ট সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রেখে। 

অন্যদিকে, নেপাল গ্রুপ পর্বে ভুটানকে হারিয়েছিল ৪-০ গোলে। আর একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে দ্বিগুণ ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ।

এটা ঠিক যে, ইতিহাস বাংলাদেশের পক্ষে নয়। সাফ-এ এর আগে প্রতিবারের দেখাতেই নেপালের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। সিনিয়র পর্যায়ে কোনো ম্যাচেই নেপালিদের এখনো পরাজিত করতে পারেনি লাল-সবুজ দল। কিন্তু, বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বয়সভিত্তিক পর্যায়ের সাফল্যগুলো ভুলছেন না। বয়সভিত্তিক ধাপগুলো ভেঙে মেয়েরা এই পর্যায়ে উঠেছে, সেই উত্তরণকেও তিনি দেখছেন এই ম্যাচের প্রেরণা হিসেবেই।

“এই নেপালের মাটিতে নেপালকে হারিয়ে আমরা এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ শিরোপা জিতেছিলাম; এই মারিয়ারাই খেলেছিল। পরের বছর, তাজিকিস্তানে ওঁদের ৯ গোল দিই। তারপর, ভুটানে অনূর্ধ্ব-১৮তে ওঁদের হারিয়েছি। তো, এই মেয়েদের অভিজ্ঞতা কিন্তু কম নয়। আমার আশা, তাঁরা নিজেদের সর্বোচ্চটা মেলে দিয়ে নতুন কিছু দেবে দেশকে।”

রব্বানী যেমন নিজদেশের নারী ফুটবলের গোড়ার খবর জানেন, নেপালের কুমার থাপা ততটা নন; দ্বিতীয়বারের মতো তিনি নেপালের মেয়েদের দায়িত্বে। তাঁর প্রথমবারের অভিজ্ঞতা ভালো ছিল না। নেপাল যে-একবার এই আসরের ফাইনালে উঠতে পারেনি – সেই ২০১৬ সালে তিনিই ছিলেন কোচ। অবশ্য, এবার কুমারের অধীনেই প্রথমবারের মতো ভারত-বাধা পেরিয়েছে দল। তিনিও তাই আশাবাদী।

“আমাদের পরিকল্পনা ঠিক আছে। মেয়েরা কঠোর পরিশ্রম করছে, আর ঘরের সমর্থনও থাকবে। এই ট্রফি তাই আমরা নেপালের বাইরে যেতে দেবো না।”

তবে, কুমারের বিচারে এই বাংলাদেশ অন্য যেকোনোবারের চেয়ে সেরা। দুই দলের সামনেই প্রথম শিরোপার হাতছানি। বাংলাদেশ কোচও বলেছেন, “ম্যাচটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।”

রূপনা-আঁখি-মারিয়া-মণিকা-সান্জিদা-মাসুরা-শামসুুন্নাহাররা শেষ ধাপে এসে নিজেদের হারিয়ে ফেলবেন, না-কি শিরোপা জিতে দেশে ফিরবেন – সেটা জানতে সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেই হবে।

ফাইনাল শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকেল সোয়া পাঁচটায়।

Loading...