অমর একুশে বইমেলা ২০২৫-এর সপ্তম দিন (৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫/২৪শে মাঘ ১৪৩১ শুক্রবার) মেলা সকাল ১১টায় শুরু হয়ে চলেছে রাত নয়টা পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত মেলায় ছিল শিশুপ্রহর। এদিন নতুন বই এসেছে ১৮৪টি।
অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে সকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের প্রাচ্যকলা বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুস সাত্তার। এতে ‘ক’ শাখায় ৩০৩, ‘খ’ শাখায় ৩২৫ এবং ‘গ’ শাখায় ১২২ জন সর্বমোট ৭৫০জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন।
সকাল ১০টায় বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ‘ক’ শাখায় ১৪১ জন, ‘খ’ শাখায় ২০৭ জন এবং ‘গ’ শাখায় ৮৫ জন সর্বমোট ৪৩৩ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন। বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. তারিক মনজুর, অধ্যাপক শায়লা আহমেদ এবং বাচিকশিল্পী শফিকুর রহমান বাহার।
বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘সাংস্কৃতিক ইতিহাসের দর্পণে গোলাম মুরশিদ পাঠ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সামজীর আহমেদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন স্বরোচিষ সরকার এবং গাজী মো. মাহবুব মুর্শিদ। সভাপতিত্ব করেন মোরশেদ শফিউল হাসান।
প্রাবন্ধিক বলেন, গোলাম মুরশিদের ইতিহাসভিত্তিক আলোচনা বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস-চর্চায় পথিকৃৎ সমতুল্য। বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক ইতিহাস প্রাতিষ্ঠানিকতা পেলে গোলাম মুরশিদ হবেন তার পুরোধা ব্যক্তি। তাঁর ইতিহাস-চর্চার প্রধানতম বৈশিষ্ট্যগুলো হলো – উপেক্ষিতের প্রতি নজর, আন্তঃশৃঙ্খলাধর্মীতা এবং ব্যক্তিকে ইতিহাসের কর্তাসত্তায় অধিষ্ঠিত করা। বাংলাদেশে প্রথাগত ইতিহাস—চর্চায় তাঁর নাম যতটা উজ্জ্বল, এর চেয়ে সাংস্কৃতিক ইতিহাসে তিনি দারুণ শক্তিমান। বাংলা সাহিত্যের প্রত্যক্ষ ইতিহাস না লিখলেও তাঁর ইতিহাস-চর্চা বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছে।
আলোচকদ্বয় বলেন, গোলাম মুরশিদের গবেষণা ও লেখালেখির জগৎ ছিল বিস্তৃত এবং বৈচিত্র্যময়। তিনি ছিলেন গভীর অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন এবং প্রজ্ঞাময় একজন গবেষক। অত্যন্ত নির্মোহভাবে তিনি ইতিহাসকে দেখার চেষ্টা করেছেন। সাহিত্য বিশ্লেষণ করে ইতিহাস ও জীবনী অনুসন্ধানে আত্মনিয়োগ করেছিলেন গোলাম মুরশিদ। সমাজ-ভাষাবিজ্ঞানের ইতিহাস ও রাজনৈতিক ইতিহাস চর্চা ছাড়াও অভিধান চর্চার দিক থেকেও গোলাম মুরশিদ উজ্জ্বলতম নাম হয়ে থাকবেন।
সভাপতির বক্তব্যে মোরশেদ শফিউল হাসান বলেন, বৈচিত্র্যসন্ধানী, গভীরস্পর্শী ও পরিশ্রমী গবেষক গোলাম মুরশিদ বাংলাদেশের গবেষণা জগতে শ্রেষ্ঠ গবেষকদের একজন। বিদ্যাচর্চা ও গবেষণার ক্ষেত্রে তিনি আমাদের ও ভবিষ্যৎ গবেষকদের জন্য বাতিঘর হয়ে থাকবেন।
জুলাই’র গল্প মঞ্চ
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ২০২৪-এর শহিদ স্মরণে এদিনের অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। সঞ্চালানায় ছিলেন লেখক ও সাংবাদিক জুবায়ের ইবনে কামাল।
লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন – কবি ও কথাসাহিত্যিক ইকতিজা আহসান ও কবি মৃদুল মাহবুব।
– তথ্যসূত্র: বাংলা একাডেমি’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তি