ছন্নছাড়া ইন্টার মিলান ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)’র কাছে একদম পাত্তা পায়নি। পিএসজি রীতিমতো গোল উৎসব করে দীর্ঘ অপেক্ষার পালা শেষ করলো। ফ্রান্সের ক্লাবটি স্মরণীয় নৈপুণ্যে প্রথমবারের মতো ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয়ের উল্লাসে মেতে উঠলো। লুইস এনরিকের শিষ্যরা জার্মানির মিউনিখের আলিয়াঞ্জ অ্যারেনায় শনিবার (৩১ মে) রাতে অনুষ্ঠিত একপেশে ফাইনালে ইতালিয়ান প্রতিপক্ষকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছেন। ব্যবধান এর চেয়ে বড় হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকতো-না।
এদিন আশরাফ হাকিমির গোলে লিড পাওয়ার পরে ১৯ বছর বয়সী দিজিরে দুয়ে দুইটি গোল করেন। এরপর খাভিচা খাভারাতস্খেলিয়া ও সেনি মায়ুলু জাল স্পর্শ করলে তৈরি হয়ে যায় রেকর্ড।
১৯৯২ সালে ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ নাম গ্রহণের পরে (সাবেক ইউরোপিয়ান কাপ) এটাই কোনো দলের ফাইনালে সবচেয়ে বড় জয়ের রেকর্ড। পিএসজি’র আগে কীর্তিটি ছিল ইন্টারের নগর-প্রতিদ্বন্দ্বী এসি মিলানের দখলে। তাঁরা ১৯৯৪ সালের ফাইনালে স্প্যানিশ ক্লাব এফসি বার্সেলোনাকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল।
কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্টস ২০১১ সালে পিএসজিকে কিনে নেওয়ার পর থেকে দলটি একটি লক্ষ্যের পেছনেই ছুটছিল, আর তা হলো – চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ট্রফি। দলটি এবার অসাধারণ নৈপুণ্যে দেখিয়ে সেই স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি সদ্যসমাপ্ত ২০২৪-২৫ মৌসুমে ট্রেবল জয়ের স্বাদও পেলো। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের আগে দলটি জিতেছে – ফরাসি লিগ ওয়ান ও ফরাসি কাপ।
প্রথমার্ধেই গোলমুখে ১৩টি শট নেয় জ্বলে ওঠা পিএসজি; যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল পাঁচটি। অন্যদিকে, ইন্টার দুইটি শট নিয়ে কোনোটিই লক্ষ্যে রাখতে পারেনি।
‘নেরাজ্জুরি’ দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ানোর পথ খুঁজে বের করার বদলে আরও মলিন হয়ে যায়। পক্ষান্তরে, পিএসজি আক্রমণের তীব্র ঝাপটা অব্যাহত রেখে আরও তিনবার গোলের আনন্দ ভক্ত-সমর্থকদের উপহার দেয়।
এই অর্ধে সিমোনে ইনজাগির শিষ্যরা দুটি শট লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে, তবে পিএসজি’র গোলরক্ষক জানলুইজি ডোন্নারুমাকে ফাঁকি দেওয়া সম্ভব হয়নি। সব মিলিয়ে চরম হতাশা নিয়ে মৌসুম শেষ করতে হলো দলটিকে। গত মাসেও টিকেছিল দলটির ট্রেবল জয়ের সম্ভাবনা; কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছুই মিললো-না। দলটি এই বিব্রতকর পরাজয়ের আগে নাপোলির কাছে সিরি আ ও মিলানের কাছে ইতালিয়ান কাপের শিরোপা খুইয়েছে।
পিএসজি দ্বিতীয় ফরাসি ক্লাব হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতলো। এর আগে এই কীর্তি ছিল শুধুই অলিম্পিক মার্শেইয়ের। ক্লাবটি ১৯৯৩ সালে মিউনিখের অলিম্পিয়া স্টেডিয়ামে এসি মিলানকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।