বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)’র সভাপতি ফারুক হাসান মনে করেন, মার্কিন ভিসা-নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগ এ-মুহূর্তে রপ্তানিতে কোনো ধরনের প্রভাব ফেলবে না। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, ভিসা নীতিতে এমন কোনো পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্র নেবে না, যা-তে যেসব শ্রমিক পোশাক তৈরি করে, সে-শ্রমিক কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বিজিএমইএ সভাপতি মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে পোশাক খাতের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরার পাশাপাশি গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সাবেক দুই সভাপতি এবং বর্তমান সংসদ সদস্য সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও আব্দুস সালাম মুর্শেদী বক্তব্য রাখেন। সহ-সভাপতি শহিদ উল্লাহ আজিমসহ বর্তমান কমিটির নেতাগণ এ-সময় উপস্থিত ছিলেন। খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
রপ্তানি বাণিজ্যে এ-মুহূর্তে মার্কিন ভিসা নীতির প্রভাব না পড়ার কারণ ব্যাখ্যায় বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ভিসা নিষেধাজ্ঞা ব্যক্তির ওপর দেওয়া হয়েছে, দেশের ওপর দেওয়া হয়নি। কোনো ব্যবসায়ীর ওপর ভিসা-নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও ব্যবসা-বাণিজ্যে কোনো সমস্যা হবে না। কারণ, করোনাকালীন অভিজ্ঞতা বলছে – রপ্তানি বাজারে সশরীরে না গিয়েও ব্যবসা করা সম্ভব। ফারুক হাসান বলেন, ব্যবসায়ীদের কাজ হলো – ব্যবসা-সংক্রান্ত কাজগুলো ঠিকভাবে সম্পন্ন করা।
সম্প্রতি মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি ইউএসটিআর-এর কর্মকর্তারা বিমানবন্দর থেকে সরাসরি বিজিএমইএ অফিসে এসেছেন। সেখানে তাঁরা নভেম্বরের মধ্যে শ্রমআইন সংশোধন এবং শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন। বিজিএমইএ এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছে।
সম্প্রতি পোশাক রপ্তানির আড়ালে ১০টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৫৩ লাখ ৬৬ হাজার ৯১৮ মার্কিন ডলার পাচার-সংক্রান্ত সংবাদ প্রসঙ্গে ফারুক হাসান বলেন, পাচারের অভিযোগ সঠিক নয়। এ-বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ করার মাধ্যমে দেশের ইমেজ ক্ষুন্ন করা হয়েছে; ক্রেতাদের কাছে উদ্যোক্তাদের ছোট করা হয়েছে। এর পেছনে একটি চক্র কাজ করছে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা – যা এখনো তদন্তই হয়নি, সেগুলো নিয়ে সমগ্র শিল্প খাতকে ঘিরে ঢালাও মন্তব্য মোটেও কাম্য নয়। যদি কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তাঁদের যেন বিচারের আওতায় আনা হয়।
এ-প্রসঙ্গে সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, এই মিথ্যাচারের মাধ্যমে আইনের ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। তিনি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, যে-সব কারখানার মালিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের পাশে রয়েছে দুই সংগঠন – বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ।
মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও কেন বিজিএমইএ’র পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচন হচ্ছে না – এমন প্রশ্নের উত্তরে আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে এই সংগঠনগুলোর নির্বাচন কোনো পক্ষই চায় না। সবাই চায় – এই মুহূর্তে ব্যবসা সঠিকভাবে চলুক।
পোশাক খাতের আগামীর চ্যালেঞ্জ হিসেবে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) কাতার থেকে উত্তরণ, উদ্ভাবনী পণ্যের চাহিদা যোগানসহ অন্যান্য চ্যালেঞ্জের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরা হয়।
