অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে – বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো নির্বাচন। তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মূল উদ্দেশ্য হলো – দেশে যাতে গণতন্ত্র ফিরে আসে। অন্তর্বর্তী সরকার এজন্য একটি ফ্রি এন্ড ফেয়ার নির্বাচনের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। শফিকুল আলম শনিবার (২৮ জুন) বিকেলে খুলনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে খুলনার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ-কথা বলেন। খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
প্রেস সচিব বলেন, খুলনার দিকে বর্তমান সরকারের যথেষ্ট দৃষ্টি রয়েছে। যদিও তাৎক্ষণিকভাবে এর ফলাফল দেখা যাচ্ছে-না; তবে, আগামীতে ভালো ফলাফল দেখা যাবে। তিনি বলেন, বিগত আওয়ামী সরকার একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি রেখে গেছে, যে-কারণে খুলনার জুট ও চিংড়ি সেক্টরে প্রত্যাশিত গ্রোথ হয়নি; বরং জুট মিলগুলো যেভাবে বন্ধ করেছে – তা নিয়েও অনেক প্রশ্ন রয়েছে। তবে, খুলনায় একাধিক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বেড়েছে। বর্তমান সরকার খুলনার একটিসহ দেশের তিনটি জুট মিলের স্কুল সরকারি করেছে। দেশের প্রত্যেকটা জুট মিলের স্কুল সরকারি করা হবে বলেও তিনি জানান।
তিনি মোংলা বন্দর কেন্দ্রিক একটি ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার জন্য কাজ চলছে উল্লেখ করে বলেন, এজন্য প্রাইভেট সেক্টরকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরকালে ইতোমধ্যে এ-বিষয়ে তাঁদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আগামী দশক খুলনার জন্য গ্রোথের দশক হবে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, খুলনা আবার ঘুরে দাঁড়াবে, পুরনো গৌরব ফিরে পাবে।
খুলনা অঞ্চলের উপকূলের বেড়িবাঁধ রক্ষা এবং ভবদহ নিয়েও সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও গাবুরায় স্থাপনকৃত সুপেয় পানির প্রজেক্ট বাড়িয়ে সকল উপকূলীয় এলাকায় চালুর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া ক্ষতিগ্রস্তদের জন্যও একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রেস সচিব খুলনা অঞ্চলে পাইপ লাইনে গ্যাস সরবরাহ না-থাকা-সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, গ্যাস ছাড়াও অনেক কারখানা পরিচালিত হচ্ছে। বিশেষ করে খুলনায় জুতা এবং ব্যাটারি সেক্টর অনেক সম্ভাবনা তৈরি করেছে। সুতরাং, গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল না-হয়ে দক্ষ শ্রমিক দিয়ে কিভাবে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা যায় – সরকার সেদিকে জোর দিচ্ছে।
তিনি জানান, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সার্চ কমিটির মাধ্যমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)-এ ভিসি নিয়োগ দিয়ে সমস্যার সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি খুলনাসহ দেশের সার্বিক আইনশৃংখলা পরিস্থিতির উন্নতির কথা উল্লেখ করে বলেন, যাঁরা ক্রাইম করবে – তাঁদের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স রয়েছে।
শফিকুল আলম সরকারের মৌলিক সংস্কারের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে সংস্কারের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ফিরে এসেছে। একইসঙ্গে সুশাসনও প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার ও প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
