একজন পূর্ণমন্ত্রী ১৯৯০ সালের পরে আবারো যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। একই সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন গত বৃহস্পতিবার শপথের পর মন্ত্রী হিসেবে রোববার (১৪ জানুয়ারি) প্রথম কর্মদিবস কাটালেন। তিনি সকালে এসেছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে; দুপুরের গিয়েছেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে। নতুন ক্রীড়ামন্ত্রী বিভিন্ন ফেডারেশেনের কর্মকর্তাসহ সর্বস্তরের মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন। এদিন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সম্মেলন কক্ষে পা ফেলার ঠাঁইও ছিল না। সাম্প্রতিকালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের কোনো দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীর আগমনে এত জনসমাগম হয়নি। খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদেরও চেয়ারম্যান। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ সাধারণত স্টেডিয়াম-অবকাঠামো নির্মাণে ব্যস্ত থাকে। নতুন চেয়ারম্যান স্টেডিয়াম নির্মাণের চেয়ে মাঠকে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছেন। তিনি মনে করেন, স্টেডিয়াম তো রয়েছে। কিন্তু মাঠ কোথায়? মাঠ না-থাকলে মানুষ খেলবে কোথায়? তাই আমার কাছে স্টেডিয়ামের চেয়ে মাঠ বেশি প্রয়োজন। ঢাকায় মাঠ- সংকটের বিষয়টি উল্লেখ করে ক্রিকেটের সমস্যাও সামনে আনলেন মন্ত্রী। মিরপুর স্টেডিয়াম ছাড়া ঢাকায় সেভাবে মাঠ নেই। ফলে, মিরপুরে অনেক চাপ পড়ছে এবং এজন্য উইকেটের মানও ভালো হচ্ছে না।
স্টেডিয়াম নির্মাণ ও সংস্কার রক্ষণাবেক্ষণ যথাযথ হয় না...। বিষয়টিও তুলে ধরে ক্রীড়ামন্ত্রী বলেন, স্টেডিয়াম কিন্তু আমাদের অনেক রয়েছে। অনেক স্টেডিয়াম তালাবদ্ধ; খেলা হয় না। আবার অনেক স্টেডিয়াম সকলের জন্য উন্মুক্ত নয়। তাই তিনি এই বিষয়গুলো পর্যালোচনা করার তাগিদ অনুভব করেছেন। আমাদের আগে দেখতে হবে স্টেডিয়ামের সংখ্যা কত এবং এর মধ্যে সক্রিয় কয়টি। এরপর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের বাজেট হাজার কোটি টাকার একটু বেশি। এর মধ্যে যুব খাতেই চলে যায় অনেক অর্থ। ক্রীড়াঙ্গনে যে-টাকা থাকে, এর আবার সিংহভাগ অবকাঠামো নির্মাণ ও প্রশাসনিক ব্যয়। ক্রীড়ার প্রশিক্ষণে তুলনামূলক বেশি বরাদ্দ থাকে না। প্রশিক্ষণের পাশাপাশি অবকাঠামো নির্মাণও প্রয়োজন বলে মনে করেন মন্ত্রী। ...প্রশিক্ষণ যেমন দরকার, তেমনি প্রয়োজন অবকাঠামো নির্মাণও। খেলোয়াড়দের জন্য ভালো এবং উন্নতমানের জায়গা দেওয়া দরকার প্রশিক্ষণ করানোর জন্য...।
সকল ধরনের খেলাধুলাকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে মন্ত্রী বলেন, ফুটবল ক্রিকেটসহ অন্যান্য খেলাতেও আমাদের ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে আমাদের অগ্রাধিকার ঠিক করতে হবে। বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনগুলো, যাঁরা আমাদের থেকে আর্থিক সহায়তা নিয়ে থাকে – তাঁদের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। আগামী তিন বছর পরে তাঁরা কোথায় যেতে চায়, কি অর্জন করতে চায় – সেটি তাঁদের জানাতে হবে। তিনি শীঘ্রই ইনডিভিজুয়ালি প্রতিটি ফেডারেশনের সাথে বসে তাঁদের সমস্যা ও সম্ভাবনার কথা শুনবেন বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, “আমাদের অনেক ফেডারেশন ভালো ফলাফল করছে। আমাদের ফুটবল এগিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে, নারী ফুটবলাররা ভালো করছে। ছেলেরাও উন্নতি করেছে। শুটিং, আর্চারিসহ আরও অনেকে উন্নতি করছে।”
মন্ত্রী জানান, ক্রিকেটের মতো অন্যান্য খেলাকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সব রকম সহযোগিতা করা হবে। এ-সময়ে দেশের যুবগোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করা হবে।