মহাকাশ অনুসন্ধানের গল্পগুলো শিশুদের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। এই দুঃসাহসিক কাজ, কৌতূহল এবং বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের গল্পগুলো কেবল বাচ্চাদের কল্পনাকেই বিমোহিত করে না, বরং তাঁদের জন্য এটি একটি মূল্যবান শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতাও। মহাকাশ বিজ্ঞান, স্পেস রোবটিক্স, স্পেস টেকনোলজি এবং ইনোভেশন, সোলার সিস্টেম, গ্যালাক্সি, স্পেস প্রোগ্রামিং এবং কসমোলজি নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহী করে গড়ে তুলতে বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরাম এবং স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্পের উদ্যোগে দেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো স্পেস এক্সপ্লোরেশন অলিম্পিয়াড-২০২৩ পাওয়ার্ড বাই এসিআই পিউর সল্ট।
৬ থেকে ৯, ১০ থেকে ১২ এবং ১৩ থেকে ১৪ বছর বয়সী ছাত্র-ছাত্রীরা তিনটি গ্রুপে এই অলিম্পিয়াডে অংশগ্রহণ করেছে। অলিম্পিয়াডকে কেন্দ্র করে সারাদেশের আটটি বিভাগে এস্ট্রোনট ক্যাম্প, ১৫০টি স্কুল ক্যাম্পেইন, জেলাভিত্তিক ডাটা বুটক্যাম্প হয়েছে। এছাড়া ওই আয়োজনে স্পেস সায়েন্টিস্ট, রিসার্চারগণ ১২টি স্পেস টক-এর মাধ্যমে বাচ্চাদের স্পেসবিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। প্রিপারেশন জন্য ছিল অনলাইন কুইজ প্যাকটিস এবং অত্যাধুনিক মক টেস্ট সফ্টওয়্যার যেখানে একজন প্রতিযোগী নিজেই নিজেই মেধা যাচাই এর সুযোগ পেয়েছেন।
ছাত্র-ছাত্রীদের বয়স অনুযায়ী দুইটি প্রিলিমিনারি এবং সেকেন্ডারি অনলাইন এক্সামের মাধ্যমে বাছাইকৃতদের নিয়ে শনিবার (২৭ এপ্রিল) অনুষ্ঠিত হলো চূড়ান্ত পর্ব। সারাদেশ থেকে ১৫০ জন্য ক্রু মেম্বার ফাইনাল এক্সামে অংশগ্রহণ করেন। শনিবার ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এক সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্বে তিন গ্রুপের নয়জন রানার্স আপ, দ্বিতীয় রানার্স আপ এবং চ্যাম্পিয়নসহ একজন পেয়েছে এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা হলো –
ক্যাটেগরি ৬-৯ বছর: দ্বিতীয় রানার্স আপ – সিভিল এভিয়েশন স্কুল এন্ড কলেজ, ঢাকা থেকে মোঃ সাফওয়ান হাসান, রানার্স আপ – এসএফএক্স গ্রিন হেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঢাকা থেকে আরহাম মোঃ নুসায়ের এবং চ্যাম্পিয়ন – সিডিএ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, চট্টগ্রাম থেকে নুসাইব হাসান লাবিব।
ক্যাটেগরি ১০-১২ বছর: দ্বিতীয় রানার্স আপ – প্লে-পেন স্কুল, ঢাকা থেকে আদইয়ান ওমাইর ইসলাম, রানার্স আপ – লর্ডস ইন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঢাকা থেকে সুবাহ সাফায়েত সিজদা এবং চ্যাম্পিয়ন – এন.আলম মেরিট কেয়ার স্কুল, ঢাকা থেকে আমিনুর রাহমান সাজিম।
ক্যাটেগরি ১৩-১৪ বছর: দ্বিতীয় রানার্স আপ – প্লে- পেন স্কুল, ঢাকা থেকে কাজী জরজিস নিভান, রানার্স আপ – ইউনিভার্সেল টিউটোরিয়াল, ঢাকা থেকে ওয়াফিক করিম, এবং চ্যাম্পিয়ন – মুন্সি আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, ঢাকা থেকে লিদিকা রাহমান।
এর বাইরে এক্সিলেন্স এওয়ার্ড পেয়েছে, নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, কুমিল্লা থেকে জাদেদা জাওয়াদ ত্রানা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এর নির্বাহী সেল ও পিইপিজেড-এর মহাপরিচালক শাহিদা সুলতানা। তিনি বলেন, “বিশ্বকে বদলে দেওয়ার ক্ষমতা ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের হাতে! তাঁরাই আগামীদিনে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর পড়াশোনায় পরিপূর্ণ আনন্দদায়ক করতে গেলে হাতে-কলমে বিজ্ঞান শিক্ষা খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত, মহাকাশ বিজ্ঞানের নতুন নতুন অন্বেষণ এই আজকের প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করার জন্য স্পেস এক্সপ্লোরেশন অলিম্পিয়াড সামনে আরও বেশি ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি।”
সভাপতির বক্তব্যে আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) প্রো ভাইস চ্যান্সেলর ডঃ মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, “এই ধরনের প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিশু-কিশোররা নতুন নতুন জিনিসগুলো শিখতে পারবে, যা তাঁদের একাডেমিক কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করবে। বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামের এ-সকল এক্টিভিটির সাথে আমরা সবসময় আছি এবং ভবিষতে থাকবোও।”
অলিম্পিয়াড-এর প্রধান সহযোগী এসিআই লিমিটেড-এর বিজনেস ম্যানেজার মোঃ জিসান রাহমান বলেন, “শিশুদের মেধা বিকাশে এসিআই দীর্ঘদিন যাবৎ কাজ করে যাচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় আমরা এই অলিম্পিয়াড-এর সাথে যুক্ত হয়েছি এবং আজকে যাঁরা ফাইনালেএওয়ার্ড পেয়েছে, তাঁদেরকে অভিনন্দন; সেই সাথে ভবিষতে এ-ধরনের এক্টিভিটির সাথে এসিআই-এর সর্বাত্নক সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।”
আয়োজনটিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরাম-এর প্রেসিডেন্ট আরিফুল হাসান অপু, এবং স্পেস এক্সপ্লোরেশন অলিম্পিয়াড-এর ইউএসএ, কান্ট্রি হেড, মোহাম্মাদ মাহদী উজ জামান।
এতে সহ-আয়োজক হিসাবে ছিলেন জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর, একাডেমিক পার্টনার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ (এআইইউবি) এবং নলেজ পার্টনার ক্রিয়েটিভ জুনিয়র, আইটি পার্টনার ই-সফ্ট।
– সংবাদ বিজ্ঞপ্তি