loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • শিল্পকলায় তিনদিনব্যাপী ‘লালন স্মরণোৎসব’

  • দ. আফ্রিকা টেস্টে সাকিবের নাম ঘোষণা; ঢাকায় কোচ ফিল সিমন্স

  • দরিদ্রসীমার নিচের পরিবার পাবে অর্থ ও জীবিকা সহায়তা

  • আদমজী ইপিজেড-এ ৫.৮৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে চীনা কোম্পানি

  • বলিভিয়াকে আর্জেন্টিনার ছয় গোল; জিতেছে ব্রাজিলও

চাকরিতে কোটা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে প্রজ্ঞাপন জারি


চাকরিতে কোটা নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে প্রজ্ঞাপন জারি

আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, এমপি বলেছেন, সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের আলোকে সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, স্ব-শাসিত ও সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষের এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি সংশোধন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। তিনি মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) রাজধানীর গুলশানে তাঁর সরকারি বাসভবনে এক ব্রিফিংয়ে এ-কথা জানান। এ-সময় শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী এবং আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সরওয়ার উপস্থিত ছিলেন। খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

আইনমন্ত্রী বলেন, চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা ভিত্তিক ৯৩ ভাগ, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ ভাগ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ১ ভাগ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ ভাগ কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্ধারিত কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে শূন্যপদসমূহ সাধারণ মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জারি করা প্রজ্ঞাপন রহিত করা হয়েছে। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণ করা হয়েছে। তাঁদের দাবি ছিল – আন্দোলন করতে গিয়ে যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা। মন্ত্রী বলেন, যেসব শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন, তাঁদের চিকিৎসার বিষয়ে সরকার দেখভাল করবে। তাঁদের আরো একটি দাবি ছিল – আন্দোলনে সহিংস ঘটনায় আনা মামলায় যেসব শিক্ষার্থীকে সম্পৃক্ত করা হয়েছে, তা থেকে তাঁদেরকে মুক্ত করা।

আইনমন্ত্রী বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনের কারণে যেসব শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, তার তথ্যাদি সরকারের কাছে দাখিল করলে শিক্ষার্থীদের বিষয়টি দেখা হবে। শিক্ষার পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। সহিংসতার ঘটনা তদন্তে এক সদস্য বিশিষ্ট একটি বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটি কার্যক্রম শুরু করেছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে কমিটি বিভিন্ন ঘটনাস্থলে তদন্তে যাবে।

আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এক প্রশ্নের উত্তরে আইনমন্ত্রী বলেন, কোটা নিয়ে দেশে কোনো আইন ছিল না। এটি প্রজ্ঞাপন বা পরিপত্রের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। এটি সরকারের পলিসি মেটার। সর্বোচ্চ আদালত সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুসরণ করে কোটা সংশোধন-সংক্রান্ত রায়টি দিয়েছে।

তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত তথা আপিল বিভাগের রায়ের একটি সেমিকোলন, কমা বদলানোর ক্ষমতা আমাদের নেই। সর্বোচ্চ আদালত যেভাবে রায় দিয়েছেন – সেটিই প্রতিপালন করছে সরকার।

আইনমন্ত্রী বলেন, কোটাবিরোধীদের আন্দোলন ছিল কোটা সংস্কার করা; তাঁদের সেই দাবি এখন পূরণ হয়েছে। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, তাঁরা এখন স্ব-স্ব জায়গায় গিয়ে পড়াশুনা শুরু করবেন।

এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, সকল নিয়োগের ক্ষেত্রে এই প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করা হবে। তিনি সর্বোচ্চ আদালতের রায়টিকে যুগান্তকারী বলে মন্তব্য করেন। এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, কোটা আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত শিবির ও জঙ্গিরা সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে। তাঁরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে। সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সরকার প্রস্তুত রয়েছে।

শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ভুল তথ্য ও গুজব এবং তথ্যের বিভ্রাট ব্যবহার করে জনমনে আবেগ, উত্তেজনা ব্যবহার করে নাশকতামূলক কার্যক্রম ঘটানো হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতি পরিবর্তনের পরে এসব ঘটনায় কাঁরা কাঁরা শিক্ষার্থী ছিলেন এবং কোন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী – তা নিরূপণ করা যাবে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রী ফরহাদ হোসেন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সাধারণ ছুটি বাড়ানোর বিষয়টি পরে জানানো হবে।

তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, কিছু আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় আমাদের দেশ সম্পর্কে ভুল তথ্য পরিবেশন করে সংবাদ প্রচার করা হচ্ছে। তিনি সঠিক তথ্য ও সংবাদ পরিবেশনে এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় ভুল সংবাদ পরিবেশনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেশের সকল গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ইন্টারনেটের অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে একটি মহল অপতৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।

তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, সেতু ভবন, টোল প্লাজা, বিটিভি, ডেটা সেন্টার সহিংসতাকারীদের দ্বারা আক্রান্ত ছিল। বিটিভি থেকে ফোন পাচ্ছিলাম – তাঁরা কাঁদছে; তাঁদের জীবন বিপন্ন। তারা বাঁচার আকুতি জানাচ্ছিল। তাদের রক্ষায় পুলিশ পাঠানো হলে পুলিশও আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত হলে আত্মরক্ষায় প্রতিরোধ করতে হয়। এতে সংঘর্ষ হয় এবং এতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। প্রতিটি হতাহতের ঘটনার জন্য আক্রমণকারীরা দায়ী। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে এর নিন্দা জানান। তিনি বলেন, জড়িতরা যেই হোক – তাদের বিচার করে সাজার আওতায় আনা হবে।

Loading...