বাংলাদেশের অলরাউন্ডার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ভারতের বিপক্ষে চলমান তিন ম্যাচের সিরিজ শেষে টি-টোয়েন্টি সংস্করণ থেকে অবসর নেবেন। তিনি দিল্লিতে বুধবার (৯ অক্টোবর) সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের অবসরের কথা জানান। মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘এই সিরিজ শেষে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেবো আমি।’
টাইগাররা গোয়ালিয়রে সিরিজের প্রথম ম্যাচে সাত উইকেটে পরাজিত হয়েছে। মাহমুদুল্লাহ ঐ ম্যাচে মাত্র এক রান করে ভারতের অভিষিক্ত পেসার মায়াঙ্ক যাদবের শিকার হন। মাহমুদুল্লাহ আরও বলেন, ‘এই সিরিজের আগেই অবসর নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি। এ-বিষয়ে পরিবারের সাথে কথা বলেছি এবং দলের কোচ, অধিনায়ক, নির্বাচক এবং বোর্ড সভাপতিকেও সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। আমি মনে করি, এটাই সঠিক সময় এই সংস্করণ থেকে সরে যাওয়ার এবং শুধুমাত্র ওয়ানডের দিকে মনোযোগী হওয়ার।’
মাহমুদুল্লাহ ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের ম্যাচ শেষে টেস্ট ফরম্যাট থেকে অবসর নিয়েছিলেন। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে তরুণদের নিয়ে এখন থেকেই দল সাজানোর কাজ করবে। ৩৮ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘এই ফরম্যাটে এখনই এগিয়ে যাওয়ার সময়। বাংলাদেশ ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য দল গড়ার চেষ্টা করছে। অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে, যাঁরা জায়গা স্থায়ী করার সামর্থ্য রাখে।’
টি-টোয়েন্টিতে মাহমুদুল্লাহর অভিষেক হয়েছিল ২০০৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে। তিনি এখন পর্যন্ত দেশের হয়ে সর্বোচ্চ ১৩৯টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন।
মাহমুদুল্লাহর বিদায়ে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ‘পঞ্চপাণ্ডব’ যুগের সমাপ্তি হলো। মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল্লাহ – বাংলাদেশ ক্রিকেটের সেরা জনপ্রিয় পাঁচ ক্রিকেটার।
সাকিব কানপুরে ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসর নিয়েছেন।
২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে পরাজয় মাহমুদুল্লাহর টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সবচেয়ে হতাশাজনক অধ্যায়। আর ২০১৮ সালে নিদাস ট্রফি মাহমুদুল্লাহর ক্যারিয়ারের সেরা মুহূর্ত।
২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে জিততে তিন বলে দুই রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। সে-সময় উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন মাহমুদুল্লাহ। পরে ঐ ম্যাচে টাইগারদেরকে পরাজয় বরণ করে নিতে হয়।
দুই বছর পরে নিদাহাস ট্রফিতে তিনি স্বাগতিক শ্রীলংকার বিপক্ষে ১৮ বলে ৪৩ রানের এক ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে ফাইনালে তোলেন। টাইগাররা ফাইনালে ভারতের কাছে পরাজিত হয়। ঐ আসরে তাঁর ১৫৭.৩৮ স্ট্রাইক রেট ছিল।
মাহমুদুল্লাহ টি-টোয়েন্টিতে ১৩৯ ম্যাচে ২৩.৪৮ গড় ও ১১৭.৭৪ স্ট্রাইক রেটে ২,৩৯৫ রান করেছেন। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ডও তাঁরই। টাইগাররা মাহমুদুল্লাহর অধীনে ৪৩ ম্যাচ খেলে ১৬টিতে জিতেছে ও ২৬টিতে হেরেছে।