বস্ত্র ও পাট এবং বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেইটে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেপিডিসি)’র সম্মেলন কক্ষে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ওভারভিউ অফ টেক্সটাইল সেক্টর ইন বাংলাদেশ: প্রবলেম, পারসপেক্টস এন্ড স্মার্ট ওয়ে আউট ’ শীর্ষক এক সেমিনারে এই আহ্বান জানান। জাতীয় বস্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই সেমিনারের এবারের প্রতিপাদ্য – ‘বস্ত্র শিল্পের আধুনিকায়ন, বাংলাদেশের উন্নয়ন।’ খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে নৈরাজ্য চলছে – এ-কথা ঠিক আছে। তবে আমার অনুরোধ থাকবে – আসুন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি। তাহলে এই সমস্যা সমাধান করা কঠিন কোনো কাজ হবে-না।’ তিনি বলেন, দেশের তৈরি পোশাক শিল্পে কোনো কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠানে বেতনের সমস্যা রয়েছে – এ-কথা অস্বীকার করা যাবে-না। তবে এই খাতের সকল প্রতিষ্ঠানকে জেনারালাইজড (সাধারণীকিকরণ) করা ঠিক হবে-না।
বস্ত্রখাতের বিভিন্ন শিল্পের গ্যাস ও বিদ্যুতের সমস্যার বিষয়ে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ গ্যাস সংযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। অবৈধ গ্যাস সংযোগের লাইন যত কমবে, গ্যাসের সমস্যার তত বেশি সমাধান হবে। এই খাতের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ইতোমধ্যে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
সোলার পাওয়ার ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বস্ত্রখাতে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। এই খাতের খরচ কমাতে সোলার পাওয়ার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, এলডিসি গ্রাজুয়েশনে দেশের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। প্রণোদনা কমানো নিয়ে যে-পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল – সেটা সঠিক ছিল। তবে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরে আর কোনো প্রণোদনা থাকবে-না। রপ্তানি বাজারেও আমাদের শুল্ক দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। এলডিসি গ্রাজুয়েট দেশ হিসেবে আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অফ ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজি (বিইউএফটি)’র উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আইয়ুব নবী খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বস্ত্র অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম এবং বিকেএমইএ সভাপতি মো. হাতেম। তাঁরা বস্ত্রখাতে পাঁচ অথবা দশ বছরের একটি নীতিমালা তৈরি করার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন।
মূল বক্তব্য উপস্থাপনের পরে সেমিনারে বস্ত্রখাত সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা এইখাতের বিভিন্ন সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতার কথা তুলে ধরেন।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন – বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুব্রত শিকদার, আরিফুর রহমান খান, তসলিমা কানিজ নাহিদা, বিটিএমসি’র চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জিয়াউল হক, বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বাংলাদেশ কটন এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা মুহাম্মদ আইয়ুব ও বাংলাদেশ গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এন্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শাহরিয়ার।