ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে এশিয়া অঞ্চলের (ঢাকা সাইট) আন্তর্জাতিক মর্যাদাপূর্ণ প্রোগ্রামিং কনটেস্ট ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট (আইসিপিসি)-২০২৪ শনিবার (৭ ডিসেম্বর) ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। আইসিপিসি’র ইতিহাসে এটাই এযাবৎকালের সর্ববৃহৎ অন সাইট কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। এতে বাংলাদেশের ১৪৮টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও আইটি ইন্সটিটিউটের ৩০৬ টি দল (প্রতিটি দলে তিন জন করে প্রতিযোগী) অংশগ্রহণ করে। এই প্রতিযোগিতার সেরা তিনটি দল ২০২৫ সালে অনুষ্ঠিত আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনাল্স-এর মূলপর্বে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের আইসিটি ডিভিশন ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সহযোগিতায় এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় ও ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেডের টেকনিক্যাল ও হার্ডওয়্যার সহযোগিতায় বাংলাদেশে এই মেগা ইভেন্টের আয়োজন করা হয়।
আইসিপিসি ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর বিল পাউচার সকাল ১০টায় জমকালো এই প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচর্য প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে প্রতিযোগিতার নির্দেশনাসমূহ প্রদান করেন এশিয়া অঞ্চলের (ঢাকা সাইট) কনটেস্ট ডিরেক্টর অধ্যাপক ড. সৈয়দ আকতার হোসেন ও কনটেস্টের প্রধান বিচারক অধ্যাপক ড. শাহরিয়ার মঞ্জুর। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট কমিউনিটির প্রেসিডেন্ট দয়াল কুমার বড়ুয়া এবং ইউসিএসআই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট চ্যান জো জিম।
বিকেল পাঁচটায় সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন করেন বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি ডিভিশনের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, এনডিসি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাচ বাংলা ব্যাংক পিএলসি’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মোঃ শিরিন ও বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক ড. মোহাম্মদ মেহেদী হাসান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন কনটেস্ট ডিরেক্টর অধ্যাপক ডঃ সৈয়দ আকতার হোসেন এবং ফলাফল ঘোষণা করেন কনটেস্টের প্রধান বিচারক অধ্যাপক ড. শাহরিয়ার মঞ্জুর।
এবারের প্রোগ্রামিং কনটেস্টটিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় করে রাখার জন্য আয়োজকদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা ছিল এবং এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আগামী আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালে ভালো করার দৃঢ় প্রত্যয় গ্রহণ করা হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমান বলেন, বর্তমান সময় হচ্ছে প্রযুক্তির সময়। এ-সময়ে প্রযুক্তির জ্ঞান থেকে দূরে থাকলে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে হবে। আমরা চাই-না – আমাদের শিক্ষার্থীরা কোনো প্রতিযাগিতায় পিছিয়ে পড়ুক। এজন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মেধাভিত্তিক বিভিন্ন প্রতিযোগিতার নিয়মিত আয়োজন করে থাকে। বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থীদেরকে প্রযুক্তির জ্ঞানে দক্ষ করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। তিনি আরও বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে পেরে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি গর্ববোধ করছে। আগামীতে আইসিপিসির ওয়ার্ল্ড ফাইনাল প্রতিযোগিতা ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞান, সমকালীন শিক্ষার অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে সর্বজনস্বীকৃত। আর এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে শুরু থেকেই ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে আসছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক কর্মকাণ্ডে তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার নিশ্চিত করেছে; যাতে করে শিক্ষার্থীরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাকরি বাজারের প্রতিযোাগিতায় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পেছনে ফেলে নিজেদের অবস্থানকে সুসংহত করতে পারে। তিনি আরও বলেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি একটি ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি হিসাবে নিয়মিতভাবে এই ধরনের প্রতিযোগিতা আয়োজন করে আসছে।
এবারের প্রতিযোগিতায় সর্বাধিক সাতটি সমস্যা সমাধান করে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাস্ট ফ্যানাটিকস দল। সাতটি সমস্যা সমাধান করে প্রথম রানার আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিইউ সিংগুলারিটি এবং ছয়টি সমস্যা সমাধান করে দ্বিতীয় রানার আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিইউ প্রিমরডিয়াস দল।
এবারই প্রথম স্কুল পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার প্রযুক্তি শিক্ষায় আগ্রহী করে তোলার লক্ষ্যে এই জমকালো কম্পিউটার প্রোগ্রামিং কনটেস্টের পাশাপাশি বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজনে করা হয়েছিল ‘জুনিয়র কম্পিউটার প্রোগ্রামিং কনটেস্ট’, যেখানে সারাদেশ থেকে ১০টি স্কুলের শতাধিক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেছে। ‘জুনিয়র কম্পিউটার প্রোগ্রামিং কনটেস্ট’-এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সাউথ ব্রিজ স্কুলের তাজোয়ার আমান খান, দ্বিতীয় ড্যাফোডিল ইন্টান্যাশনাল স্কুলের ফাইজিন হক, তৃতীয় ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি স্কুল অ্যান্ড কলেজের স্কুলের শাহীর কুদরত রাফান, চতুর্থ ড্যাফোডিল ইন্টান্যাশনাল স্কুলের মোহাম্মদ সোলাইমান, পঞ্চম ড্যাফোডিল ইন্টান্যাশনাল স্কুলের মোহাম্মদ জুনাইদ ইব্রাহীম, ষষ্ঠ ড্যাফোডিল ইন্টান্যাশনাল স্কুলের আরমান শুদ্ধ হোসেন, সপ্তম ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ইলহাম সাজিদ, অষ্টম ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের ফারহান একরাম, নবম ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের আবরার ফাইয়াজ খান এবং দশম হয়েছে ড্যাফোডিল ইন্টান্যাশনাল স্কুলের মাহির তাজওয়ার।
এছাড়া ছিল টেকনিক্যাল টক্স, সিএসআইএস, ফান ইভেন্টস, খেলাধুলা ও পুরস্কার বিতরণী এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
– সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
