কিংবদন্তি বাংলাদেশি অভিনেতা প্রবীর মিত্রের (মোহাম্মদ হাসান ইমাম) দাফন ঢাকার আজিমপুরে সোমবার (৬ জানুয়ারি) সম্পন্ন হয়েছে। এদিন দুপুরে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি)-তে তাঁর প্রথম জানাজা হয়। পরে, দুপুর ২টা ৪০ মিনিটে চ্যানেল আইয়ে দ্বিতীয় জানাজা হয়। এরপর বিকেলে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়। খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
গত রোববার এই অভিনেতা ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই তিনি কোন ধর্ম পালন করতেন – সেই প্রশ্নটি উঠেছিল। উত্তর পাওয়া গেলো এফডিসিতে অনুষ্ঠিত প্রথম জানাজার আগে। প্রবীর মিত্রের বড় ছেলে মিঠুন বলেন, তাঁর বাবা একটি হিন্দু পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তাঁর মাকে বিয়ে করার সময় মুসলিম হয়ে মোহাম্মদ হাসান ইমাম নাম নেন। কিন্তু তিনি যেহেতু প্রবীর মিত্র নামেই বেশি খ্যাতিমান ছিলেন, সেই কারণে এই নামটা ব্যবহার করতেন। আর যেহেতু তিনি মুসলিম হয়েছেন, সেই কারণে দাফনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বরেণ্য অভিনেতা প্রবীর মিত্রকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এফডিসিতে এসেছিলেন নায়ক আলমগীর, উজ্জ্বল, পরিচালক দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, ছটকু আহমেদ, মিশা সওদাগর, শাহীন সুমন, বাপ্পী চৌধুরী, নায়ক ইমন, আরজুসহ অনেকেই। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস), চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতি ও পরিচালক সমিতিও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
বাংলা চলচ্চিত্রের খ্যাতিমান অভিনেতা প্রবীর মিত্র রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার (৫ জানুয়ারি) মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তাঁকে বেশ কিছু অসুস্থতার কারণে গত ২২ ডিসেম্বর রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।
প্রবীর মিত্র ১৯৪৩ সালের ১৮ অগাস্ট কুমিল্লার চান্দিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নাম প্রবীর কুমার মিত্র। পুরান ঢাকায় বড় হওয়া প্রবীর মিত্র স্কুলজীবন থেকেই নাট্যচর্চার সঙ্গে যুক্ত হন।
প্রবীর মিত্র ১৯৬৯ সালে প্রয়াত এইচ আকবরের 'জলছবি' চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান। অবশ্য, চলচ্চিত্রটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি।
প্রবীর মিত্র অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলো হলো – 'তিতাস একটি নদীর নাম', 'জীবন তৃষ্ণা', 'সেয়ানা', 'জালিয়াত', 'ফরিয়াদ', 'রক্ত শপথ', 'চরিত্রহীন', 'জয় পরাজয়', 'অঙ্গার', 'মিন্টু আমার নাম', 'ফকির মজনু শাহ', 'মধুমিতা', 'অশান্ত ঢেউ', 'অলংকার', 'অনুরাগ', 'প্রতিজ্ঞা' ইত্যাদি।