অমর একুশে বইমেলা ২০২৫-এর পঞ্চম দিনে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) নতুন বই এসেছে মোট ৯৮টি। এরমধ্যে গল্প ১৩টি, উপন্যাস ১৮টি, প্রবন্ধ ৬টি,কবিতা ৩৩টি, গবেষণা চারটি, শিশুসাহিত্য দুইটি, জীবনী দুইটি, রচনাবলি একটি, নাটক তিনটি, বিজ্ঞান দুইটি, ভ্রমণ একটি, ইতিহাস তিনটি, রাজনীতি দুইটি, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য একটি, ভাষা একটি, ধর্মীয় একটি,অনুবাদ একটি ও অন্যান্য চারটি।
বইমেলার মূলমঞ্চে বুধবার অনুষ্ঠিত হয় ‘হোসেনউদ্দীন হোসেন: প্রান্তবাসী বিরল সাহিত্য সাধক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। শহীদ ইকবালের সভাপতিত্বে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আহমেদ মাওলা এবং আলোচনায় অংশ নেন আবুল ফজল।
প্রাবন্ধিক বলেন, গভীর জীবনবোধ, ইতিহাসচেতনা এবং অগ্রসর চিন্তাশক্তির হোসেনউদ্দীন হোসেনকে সৃষ্টিশীল ও বিরল সাহিত্য ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। কৃষক পরিবারের সন্তান হিসেবে তিনি নিজেকে কৃষক পরিচয় দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। হোসেনউদ্দীন হোসেনের কর্মজীবন যেমন বৈচিত্র্যময়, লেখালেখির ক্ষেত্রেও ছিলেন বহুমুখী। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, জীবনীমূলক রচনা ইত্যাদি বিষয়ে স্বতন্ত্র চিন্তার মৌলিকগ্রন্থ রয়েছে তাঁর। গভীর জীবনবোধ ও বাস্তবতার বিনির্মাণ, রূপক তৈরির কুশলতা তাঁকে কালোত্তীর্ণ শিল্পীর মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছে। তিনি ইতিহাসের দায়বদ্ধতা থেকে নিবিড় পর্যবেক্ষকের দৃষ্টিতে বাংলার সংগ্রামী চেতনাকে দেখেছেন।
আলোচক বলেন, হোসেনউদ্দীন হোসেন মানুষ হিসেবে ছিলেন অত্যন্ত সাধারণ। বিস্তৃত পঠনপাঠন ও জ্ঞানের গভীরতা তাঁর লেখালেখির জগৎকে সমৃদ্ধ করেছে। চিন্তার গভীরতায় ও জ্ঞানের পরিশীলনে তিনি ছিলেন মৌলিক। সাহিত্যচর্চার পাশাপাশি সাহিত্যের নানাবিধ বিষয় নিয়ে যেমন তিনি তাঁর গভীর প্রজ্ঞার আলো ছড়িয়েছেন, তেমনি এদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিষয়েও তাঁর নিবিড় পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছেন।
সভাপতির বক্তব্যে শহীদ ইকবাল বলেন, হোসেনউদ্দীন হোসেন ছিলেন একজন সহজাত লেখক। কবিতা দিয়ে সাহিত্যজীবন শুরু করলেও গদ্যের জগতে নিজ প্রতিভার উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন তিনি। তাঁর লেখায় বুদ্ধিবৃত্তি ও মননশীলতার ছাপ স্পষ্ট। লেখক হতে গেলে যে সততা, নিবিষ্টতা ও একাগ্রতা দরকার, তিনি আজীবন তার চর্চা করে গেছেন।
লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন – কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন এবং কথাসাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক শিবলী আজাদ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন – কবি আতাহার খান এবং আলমগীর হুছাইন। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী রানা আহমেদ এবং কাজী সামিউল আজিজ। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী বুলবুল ইসলাম, মো. আরিফুর রহমান, তাপসী রায়, পাপড়ি বড়ুয়া, ফারাহ হাসান মৌটুসী, মো. হারুনুর রশিদ, কামাল আহমেদ এবং নুসরাত বিনতে নূর। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন – রবীন্দ্রনাথ পাল (তবলা), মো. রিফাত হোসেন (কি-বোর্ড), অসিত বিশ্বাস (এসরাজ) এবং মো. হাসান আলী (বাঁশি)।