অমর একুশে বইমেলা-২০২৫-এর সপ্তদশ দিনে (সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি) নতুন বই এসেছে ১১৩টি। এদিন বইমেলায় এসেছে গল্প ২১টি, উপন্যাস ১৪টি, প্রবন্ধ ছয়টি, কবিতা ৪১টি, গবেষণা দুইটি, ছড়া দুইটি, শিশুসাহিত্য পাঁচটি, জীবনী তিনটি, মুক্তিযুদ্ধ দুইটি, ভ্রমণ দুইটি, ইতিহাস চারটি, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য দুইটি, ধর্মীয় তিনটি ও অন্যান্য ছয়টি।
এদিন বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে (বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন) আয়োজন করা হবে ‘জীবন ও কর্ম: শহীদ কাদরী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন তারানা নূপুর। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন শামস আল মমীন এবং আহমাদ মাযহার। সভাপতিত্ব করবেন হাসান হাফিজ।
সোমবার নির্ধারিত আয়োজনে বিকেল চারটায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘আল মাহমুদ: জীবন ও কবিতা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মজিদ মাহমুদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মুসা আল হাফিজ এবং কাজী নাসির মামুন। সভাপতিত্ব করেন মাহবুব সাদিক।
প্রাবন্ধিক বলেন, আল মাহমুদ বাংলা সাহিত্যের এমন এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ের কবি, যখন বাঙালি, তথা পূর্ব-বঙ্গের মানুষের আত্ম-পরিচয়ের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। তিনি একজন চারণ কবির মতো প্রেরণায় ভর করে স্বদেশ ও স্বজাতির কথা বর্ণনা করে গেছেন। কৃষকের কাছে যেমন তাঁর ভূমি, কৃষি উৎপাদন, স্ত্রী, সন্তান, গবাদিপশু জীবনের অবিচ্ছেদ্য উপকরণ, তেমনি আল মাহমুদের কাছে তাঁর স্বদেশ চেতনা জীবনের অপরিহার্য সহায়। তিনি কবিতায় শহর ও নগর জীবনের পার্থক্য ঘুচিয়ে দিয়েছেন। তাঁর কাব্যভাষায় একটি জাতির হাজার বছরের ক্রিয়াভিত্তিক শব্দরাজি পরম সফলতার সঙ্গে ধরা দিয়েছে।
আলোচকদ্বয় বলেন, কবি আল মাহমুদ তাঁর সমকালীন বাস্তবতা, আবহমান জীবন ও ঐতিহ্য থেকেই উঠে এসেছেন। তাঁর কবিতার প্রকৃতি, নারী, লোকায়ত জীবন, আধুনিকতা, সমসাময়িক বৈশ্বিক প্রবণতা নিজস্ব রূপে হাজির হয়েছে। মানবজীবনের পটভূমিতে তিনি প্রকৃতিকে জীবন্তরূপে তুলে ধরেছেন। তিনি শব্দের প্রচলিত অর্থকে অতিক্রম করেছেন এবং নতুন অর্থ নির্মাণ করেছেন। রাজনৈতিক চেতনা চোরাস্রোতের মতো তাঁর কবিতায় প্রবাহিত হয়েছে।
সভাপতির বক্তব্যে মাহবুব সাদিক বলেন, কবি আল মাহমুদ ছিলেন ঐতিহ্য ও ইতিহাস সচেতন আপাদমস্তক একজন কবি। তাঁর কবিতা আমাদের স্বপ্ন দেখতে উদ্বুদ্ধ করে। বাংলা সাহিত্যে আল মাহমুদ উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়ে টিকে থাকবেন।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন – কবি মতিন বৈরাগী এবং কবি ফজলুল হক তুহিন।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এদিন ছিল ঝর্ণা আলমগীরের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী’ এবং রূপশ্রী চক্রবর্তী’র পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘শিল্প বাংলা’-এর পরিবেশনা।
সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী এ টি এম আশরাফ হোসেন, ওয়াদুদুর রহমান রাহুল, সোমা সরকার, নিপা আক্তার, সানজিদা ইয়াসমিন লাভলী, মাসুদুল হক, মো. আলী হোসাইন, মমতা দাসী এবং মোখলেসুর রহমান মিন্টু। যন্ত্রানুষঙ্গে ছিলেন আব্দুল আজিজ (তবলা), মো. বজরুল ইসলাম বিজু (কী-বোর্ড), মো. আতিকুল ইসলাম (বাঁশি) আকাশ আহমেদ কবির (বাংলা ঢোল) ও বিশ্বজিৎ সেন (মন্দিরা)।
– তথ্যসূত্র: বাংলা একাডেমি’র সংবাদ বিজ্ঞপ্তি