ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয়ে নগরীর রমনা বটমূলে গানে গানে ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উদ্যাপিত হয়েছে। ডিএমপি জানিয়েছে, সোমবার (১৪ এপ্রিল) পহেলা বৈশাখের সকালের সূর্যোদয়ের পরপরই রমনা বটমূলে শুরু হয় ছায়ানটের বর্ষবরণের আয়োজন। বাংলা ১৪৩২ সনকে গানে গানে বরণ করে নেওয়া হয়।
ভোর সোয়া ছয়টার দিকে শুরু হয় বঙ্গাব্দ ১৪৩২ সনকে বরণ করে নেওয়ার জন্য ছায়ানটের ঐতিহ্যবাহী আয়োজন। ভৈরব সুরে শুরু হওয়া বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত মধ্য দিয়ে। সকাল সাড়ে আটটার দিকে ছায়ানটের শিল্পীরা এবারের আয়োজনের সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
ডিএমপি’র ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেইজে এক পোস্টে জানানো হয়, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে রোববার রাত থেকেই রমনা বটমূলের পুরো এলাকায় নিরাপত্তা-ব্যবস্থা জোরদার করে। যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ইউনিফর্ম ও সাদা পেশাকে মোতায়েন ছিল ডিএমপি’র বিপুলসংখ্যক সদস্য। অনুষ্ঠানস্থল ডগ স্কোয়াড দ্বারা সুইপিং করা হয় এবং অনুষ্ঠানস্থলের প্রবেশ গেটে আর্চওয়ে ও হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে তল্লাশির ব্যবস্থা করা হয়।
এতে বলা হয়, ডিএমপি অনুষ্ঠানস্থলসহ পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরা, স্টিল ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা ও ড্রোন ক্যামেরা দ্বারা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করাসহ অন্যান্য সকল নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল।
অন্যদিকে বঙ্গাব্দ-১৪৩২ কে স্বাগত জানিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ও নির্বিঘ্নে শেষ হয় ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল – ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে ছিল ডিএমপি’র নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি সোমবার সকাল নয়টায় শুরু হয়। শাহবাগ মোড়, টিএসসি মোড়, শহীদ মিনার, শারীরিক শিক্ষাকেন্দ্র ও দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলা একাডেমির সামনের রাস্তা দিয়ে পুনরায় চারুকলা অনুষদের সামনে এসে শেষ হয় বর্ণাঢ্য এই আনন্দ শোভাযাত্রা।
পহেলা বৈশাখের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। এবারের আনন্দ শোভাযাত্রায় ২৮টি জাতিগোষ্ঠী, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনসহ সর্বস্তরের সাধারণ জনগণ ও বিভিন্ন দেশের অতিথিরা অংশগ্রহণ করেন। ডিএমপি এই শোভাযাত্রাকে ঘিরে আগেরদিন রাত থেকেই টিএসসিসহ পুরো ক্যাম্পাস এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা-ব্যবস্থা গ্রহণ করে। যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে সবখানে মোতায়েন ছিল ডিএমপি’র বিপুলসংখ্যক সদস্য।
উল্লেখ্য, পহেলা বৈশাখ আনন্দঘন, উৎসবমুখর ও নিরাপদে উদ্যাপনের লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরীকে ২১টি সেক্টরে ভাগ করে ডিএমপি’র পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।