অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস শিক্ষার্থীদের নতুন এক বিশ্ব গড়ার স্বপ্ন দেখার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বুধবার (১৪ মে) ভাষণদানকালে বলেন, ‘আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত নতুন কিছু গড়ার সক্ষমতা রাখি।’ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি হয়েছে। খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
মুহাম্মদ ইউনূস সমাবর্তন ভাষণে বলেন, ‘আমরা চাইলে আমাদের মতো করে এক নতুন বিশ্ব গড়ে তুলতে পারি।’ তবে তিনি বলেন, প্রত্যেকেরই স্বপ্ন থাকা দরকার – কেমন পরিবেশ ও সমাজ তারা প্রতিষ্ঠা করতে চায় – সেই সম্পর্কে।
প্রধান উপদেষ্টা গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পটভূমি স্মরণ করে বলেন, বর্তমানে যে-সভ্যতা চলছে – তা একটি ধ্বংসাত্মক অর্থনীতির সভ্যতা। তিনি বলেন, ‘আমরা যে-অর্থনীতি তৈরি করেছি – তা মানুষের জন্য নয়, বরং ব্যবসার জন্য।’ তিনি উল্লেখ করেন, ব্যবসাকেন্দ্রিক এই সভ্যতা আত্মঘাতী এবং তা টিকবে-না।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি দীর্ঘদিন পরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে আনন্দিত। তিনি স্মরণ করেন, ১৯৭২ সালে চবিতে শিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ এবং কিভাবে গ্রামীণ ব্যাংক চট্টগ্রামে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষদের সহায়তা করতে গঠিত হয়েছিল – তা তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের জন্ম হয়েছিল – চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে।
অনুষ্ঠানে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যাপক ইউনূসকে ক্ষুদ্র ঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচন এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদানের জন্য সম্মানসূচক ডক্টরেট অফ লিটারেচার (ডি লিট) উপাধিতে ভূষিত করে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইয়াহিয়া আখতার অধ্যাপক ইউনূসের হাতে ডি লিট সনদ তুলে দেন।
সমাবর্তনে শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফয়েজসহ অন্যান্যরাও বক্তব্য রাখেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান এবং উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মো. কামাল উদ্দিনও এ-সময় উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় বুধবার দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ সমাবর্তনের আয়োজন করেছিল, যেখানে ২২,৫৮৬ জন শিক্ষার্থীকে সনদ প্রদান করা হয়েছে।