প্রকৃতিতে শরৎ এসেছে আরও আগেই। তবুও ব্যস্ত নাগরিক জীবনে সাদা মেঘ আর কাশফুলের কথা মনে করিয়ে দিতে শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হলো শরৎ উৎসব। এতে এই ঋতুর সৌন্দর্য্য ও শুভ্রতার বন্দনায় মেতেছিলেন শিল্পীরা। ছুটির দিনে শরতের নৈসর্গিক রূপবন্দনাই ছিল উৎসবের সংগীতে, নৃত্যে। মঞ্চও সাজানো হয়েছিল মেঘ আর কাশফুলের ছবি দিয়ে। সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী আয়োজন করেছিল এই উৎসবের। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
অসিত বিশ্বাসের সেতার বাদন দিয়ে শুরু হয় উৎসব। এরপর সুরবিহারের শিল্পীরা ‘আমার নয়ন-ভুলানো এলে’ সমবেত কণ্ঠে গানটি পরিবেশন করেন। আয়োজক সংগঠন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীরা শোনান ‘দেখো দেখো, দেখো, শুকতারা আঁখি মেলি চায়’ গানটি। ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীবৃন্দ শোনান ‘একি অপরূপ রূপে মা তোমায় হেরিনু পল্লী-জননী’ গানটি।
অনুষ্ঠানে এককভাবে গান শোনান বিশ্বজিৎ রায়, সালমা আকবর, অণিমা রায়, তানভীর সজিব, রত্না সরকার, আবিদা রহমান, মাহমুদা মৌমিতা। তাঁদের পরিবেশনায় ছিল ‘তোমরা যা বলো তাই বলো, আমার লাগে না মনে’, ‘আগমনী গান শোনা যায়’, ‘এবার অবগুণ্ঠন খোলো’, ‘সারদপ্রাতে ঝিলের জলে শাপলা’ প্রভৃতি গান।
একক ও দলীয় গানের ফাঁকে ফাঁকে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে স্পন্দন, বাংলাদেশ একাডেমি অফ ফাইন আর্টস, নৃত্যজন ও স্বপ্ন বিকাশ কলাকেন্দ্রের শিল্পীরা। একক আবৃত্তি করেন আহকাম উল্লাহ, নায়লা তারাননুম চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ বলেন, “সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে আমরা চেষ্টা করছি একেবারে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত আমাদের এই কর্মকান্ড পৌঁছে দিতে। দিগন্ত ছোঁয়া আকাশ, উদার প্রান্তর, কূল ছাপানো নদী। এসব নিয়েই শরৎ প্রশান্তিময় হোক।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি, রবীন্দ্রগবেষক ও লেখক হায়াৎ মামুদ। বকুলতলায় সকালের পর্ব শেষ হলে চারুকলা অনুষদের বারান্দায় শুরু হয় শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতার বিষয়বস্তু ‘শরৎ ঋতু’। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয় সাড়ে চারটায়। এতে দলীয় গান পরিবেশন করেন কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, উদয়ন, উজান, সুর সাগর ললিতকলা একাডেমি ও সমস্বরের শিল্পীরা। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন বুলবুল ললিতকলা একাডেমি, স্বপ্ন বিকাশ কলাকেন্দ্র, স্কেচ, অঙ্গীকার, ভোরের পাখি নৃত্যকলা কেন্দ্র ও বেনুকা ললিতকলা একাডেমির শিল্পীবৃন্দ।
এছাড়া, একক গান পরিবেশন করেন মহাদেব ঘোষ, মহিউজ্জামান চৌধুরী, ফাহিম হোসেন চৌধুরী, সরদার রহমত উল্লাহ, খগেন্দ্র নাথ সরকার, আকরামুল ইসলাম, খন্দকার মুজিবুল কাইয়ুম, তানজিলা তমা, শাহনেওয়াজ পারভীন, তামান্না নিগার, সমর বড়ুয়া প্রমুখ।