loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • শেষ মুহূর্তের গোলে ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

  • আর্সেনালের কাছে পাঁচ গোলে উড়িয়ে গেলো চেল্সি

  • হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

  • বেপজা অর্থনৈতিক জোনে চীনা কোম্পানির ১৯.৯৭ মি. ডলার বিনিয়োগ

  • কাতারের আমিরের ঢাকা ত্যাগ

মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক-বিপ্লব শুরু করতে রাষ্ট্রপতির আহ্বান


মাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক-বিপ্লব শুরু করতে রাষ্ট্রপতির আহ্বান

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সোমবার (২৭ জানুয়ারি) কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে তাঁর ভাষণে মাদকের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে বিপ্লব করতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। একটি নীরব-সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার উপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে মাদকদ্রব্য ব্যবহারের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী প্রেরণাদায়ী অভিযান শুরু করতে হবে। তিনি বলেন, “শিক্ষার্থীদেরকেই মাদকের বিরুদ্ধে একটি নীরব সামাজিক বিপ্লব শুরু করতে হবে। মানুষকে ভালো করতে মাদকের বিরুদ্ধে প্রেরণামূলক প্রচারণা চালিয়ে তোমদেরকে সমাজে পরিবর্তন আনতে হবে, অন্যথায় দেশটা ধ্বংস হয়ে যাবে।”

হেরোইন ও ইয়াবা ট্যাবলেটসহ এক ডজনেরও বেশি নিষিদ্ধ ড্রাগসের নাম উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, কুমিল্লা হচ্ছে দেশে মাদক পাচারের অন্যতম রুটগুলোর একটি। “তাই তোমাদেরকে অবশ্যই সজাগ থাকতে হবে এবং তোমরা সেইসব অবৈধ মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলো।’ সমাজে যাতে কেউ এই নিষিদ্ধ ড্রাগস ব্যবহার করতে না পারে - সে-লক্ষ্যে রাষ্ট্রপ্রধান স্নাতকদের যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মো. আবদুল হামিদ, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্যে নতুন স্নাতকদেরকে শুধু নিজের স্বার্থের কথা জন্য চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, বরং পরিবার, সমাজ ও জাতীয় কল্যাণে নিজেকে নিযুক্ত করো। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে তোমাদের কাছে জাতির প্রত্যাশা, তোমরা কখনো অর্জিত ডিগ্রির মর্যাদা, ব্যক্তিগত সম্মানবোধ আর নৈতিকতাকে ভূলুণ্ঠিত করবে না। বিবেকের কাছে কখনো পরাজিত হবে না। 

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া ও জ্ঞানার্জনের স্থান। টাকা-পয়সা রোজগারের জায়গা নয়। বাবা-মা অনেক কষ্ট করে এমনকি অনেকে সর্বস্ব ত্যাগ করে তোমাদের লেখাপড়ার খরচ যোগায়। তাই খেয়ালের বসে বা লোভ-লালসায় পড়ে নিজেদের জীবন নষ্ট করবে না এবং পরিবার ও সমাজের জন্যও বিপর্যয় ডেকে আনবে না।

রাষ্ট্রপতি বলেন, “অতীতকে মনে রেখে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখবে। মানবতার কল্যাণ করবে। জীবনের চড়াই-উৎরাই পথে হতাশ হবে না। বরং সাহসের সাথে মোকাবিলা করবে।”

তিনি বলেন, “জাতির পিতা ১৯৭২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি রামগতিতে কৃষি বিপ্লবের ডাক দিয়ে বলেছিলেন, সংগ্রাম এখনো শেষ হয়নি, মূলতঃ সংগ্রাম মাত্র শুরু হয়েছে। এবারের সংগ্রাম সোনার বাংলা গড়ে তোলার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শকে তোমরা বুকে ধারণ করে দেশ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করবে, এই প্রত্যাশা করি। কর্মজীবনে তোমরা সফল হও, সার্থক হও। তোমাদের ভবিষ্যৎ চলার পথ সাফল্যে ভরে উঠুক - এই কামনা করি।”

রাষ্ট্রপতি, শিক্ষকদেরকে তাঁদের পেশা ও মর্যাদাকে সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আপনারা উন্নত জাতি তৈরির মহান কারিগর। একজন শিক্ষক জাতির পথপ্রদর্শক। সুশিক্ষা, মানবিকতা, মূল্যবোধ, আদর্শ প্রভৃতির মাধ্যমে সুন্দর সমাজ গঠনে একজন শিক্ষকই কেবল জাতিকে সঠিক দিক-নির্দেশনা দিতে পারেন। তাই, একজন শিক্ষকের কাজ শুধু শ্রেণিকক্ষে পাঠদানে সীমাবদ্ধ নয়, তিনি জাতির বুদ্ধি ও বিবেককে জাগ্রত করে অন্তরে জ্ঞানের মশাল প্রজ্জ্বলিত করেন। তাই, একজন শিক্ষককে হতে হবে আদর্শ ও ন্যায়নীতির প্রতীক। রাষ্ট্রপতি, স্নাতক ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে এই উদ্যোগ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।”

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, এম.পি। সমাবর্তনে ৩,৫৬১ জন স্নাতককে ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও, শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের অসাধারণ অবদানের জন্য ১৪টি স্বর্ণপদক ও ৫২টি ডিন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, এম.পি, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহিদুল্লাহ, উপাচার্য প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী প্রমুখ সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় নেতৃবৃন্দ, সংসদ সদস্যগণ, রাষ্ট্রপতির সচিবগণ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সিনিয়র বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।

Loading...