loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • লিভারপুল হারলো এভারটনের কাছে, ম্যানইউ-এর শেফিল্ড-বাধা অতিক্রম

  • শুরু হলো স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা ২০২৪

  • জাভি এই মৌসুম শেষেই বার্সা ছাড়বেন না

  • নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি

  • ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

যশোরে ই-কমার্স মেলায় সর্বসাধারণের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ


যশোরে ই-কমার্স মেলায় সর্বসাধারণের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ

যশোরে শেখ হাসিনা সফ্টওয়ার অ্যান্ড টেকনোলজি পার্কে শনিবার (৭ মার্চ) অনুষ্ঠিত হয়েছে ই-বাণিজ্যের মেলা - ই-কমার্সের ডাক। মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ও তথ্যআপা (২য় প্রকল্প)-এর যৌথ উদ্যোগে আট বিভাগে এই মেলা হচ্ছে।

এদিন সকালে উদ্বোধন হওয়ার আগে থেকেই মেলা প্রাঙ্গনে আসতে থাকেন উৎসুক মানুষ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মমতাজ বেগম। বিশেষ অতিথি ছিলেন যশোরের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শফিউল আরিফ, যশোরের পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম, বাকোর প্রেসিডেন্ট ওয়াহিদুর রহমান শরীফ, সাহাব উদ্দীন শিপন, ভাইস-প্রেসিডেন্ট, ই-ক্যাব, জিয়া আশরাফ, ডিরেক্টর ই-ক্যাব, আবু তালেব, পোস্ট মাস্টার জেনারেল, অতিরিক্ত সচিব কাজল ইসলাম, মুহাম্মদ শহীদুল ইসলাম, যুগ্ন সচিব ও উপপ্রকল্প পরিচালক তথ্যআপা এবং আনোয়ারা বেগম মহিলা প্রকল্প পরিচালক ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

ই-ক্যাব-এর প্রেসিডেন্ট শমী কায়সারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন অধ্যাপক মমতাজ বেগম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ই-ক্যাবের ডিরেক্টর আসিফ আহনাফ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মামুনুর রশিদ।

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করে প্রধান অতিথি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নের যাত্রা শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে তিনি যুদ্ধবিধস্ত বাংলাদেশে এর সূচনা করেছিলেন। তাঁর সে-যাত্রাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি তথ্যআপার মতো একটি যুগোপযোগী প্রকল্প গঠন করে গ্রামীণ নারীদের তথ্যপ্রাপ্তি ও নেতৃত্বের মূলস্রোতে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। আমাদের এই মেলার আয়োজনের মাধ্যমে গ্রামীণ নারী ও তথ্য আপাদেরকে ই-কমার্স ও ই-লার্নিং এর সাথে যুক্ত করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

যশোরের জেলা প্রশাসক তাঁর বক্তব্যে দারাজসহ বিভিন্ন অনলাইন শপে কেনাকাটার ইতিবাচক অভিজ্ঞতা এবং দিন দিন অনলাইন কেনাকাটা বৃদ্ধিতে ই-কমার্স ও অনলাইন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পেশাদারিত্বের প্রশংসা করেন।

ডাক বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, দুই বছর আগে যখন ই-পোস্ট চালু হয়েছিল, তখন দৈনিক ২/৪টি করে ডেলিভারি প্রসেস করা হতো। সেখানে বর্তমানে দৈনিক ১৩-১৪শ ই-কমার্স ডেলিভারি প্রসেস করা হয়। সর্বোচ্চ ৩৫শ পর্যন্ত ডেলিভারি প্রসেস করার দক্ষতা দেখিয়েছে ডাক বিভাগ।

জেলা পুলিশ সুপার তাঁর বক্তব্যে অনলাইন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানসমূহকে সততা বজায় রেখে সেবা প্রদানের অনুরোধ জানান। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন চালডাল দারাজ, রকমারিসহ বিভিন্ন অনলাইন শপ থেকে তাঁদের কেনাকাটার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন।

ই-ক্যাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাহাব উদ্দীন শিপন বলেন, আমরা যে-গতিতে অগ্রসর হচ্ছি তাতে শুধু দুই বিলিয়ন ডলারের মার্কেট নয় বরং এটা দশ বিলিয়ন ডলারের মার্কেটে উন্নীত করা সম্ভব, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে। সেজন্য আমাদের প্রয়োজন সরকারি-বেসরকারি সংস্থাসমূহের যৌথ প্রয়াস।

ভারতে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে মেলায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন ই-ক্যাবের সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল ওয়াহেদ তমাল।  তিনি বলেন - ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ, এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন। আজ আমরা স্বাধীন বাংলাদেশে ডিজিটাল দেশ গড়ার লক্ষ্যে ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে ই-কমার্সের ডাক দিচ্ছি। এই মেলা সফল করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে মেলা সফল করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

চালডালের সিইও জিয়া আশরাফ বলেন, একসময় আমরা যখন জনসম্মুখে কথা বলতাম তখন ই-কমার্স সেটা আগে বুঝিয়ে বলতে হতো। এখন আর সেটা কাউকে বুঝিয়ে বলতে হয় না। ই-ক্যাব ও সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগে সেই সচেতনতা তৈরী হয়েছে এবং চালডালের মতো বিভিন্ন কোম্পানি সঠিক সেবা দিয়ে ক্রেতাদের আস্থা ও অভ্যাস তৈরীতে বিশাল ভূমিকা রাখছে - যার সুফল ভোগ করবো আমরা সবাই।

মেলায় বিভিন্ন পেশার দর্শনার্থীরা এসেছেন। ই-পোস্টের স্টলে অনেকে ডাক বিভাগের বিভিন্ন তথ্য জানতে চেয়েছেন। তথ্যআপার স্টলে তথ্য জানতে ভিড় করেছেন নারীরা। রকমারি ও বইঘরের স্টলে ছিল উৎসুক দর্শনার্থীদের দিনভর আনাগোনা। বিশেষ করে চালডাল-এর নতুন অফার সম্পর্কে জানতে বিপুল সংখ্যক লোক চালডালের স্টলে এসেছে। সকালে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি দিয়ে যে-মেলা শুরু হয়েছিল - দিনের মধ্যপ্রহরে ধীরে ধীরে তা স্থানীয় দর্শনার্থীদের জন্য এক সত্যিকার মেলায় পরিণত হয়।

শমী কায়সার তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার উদ্যোক্তা তৈরী যে-উদ্যোগ নিয়েছে, ই-ক্যাব সরকারের পাশে থেকে সে-কাজে সহযোগিতা করছে। তিনি বলেন, আমরা শুধু উদ্যোক্তা তৈরী করছি না - আমরা তৈরী করছি ডিজিটাল উদ্যোক্তা, যা একদিকে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নকে সফল করবে, অন্যদিকে সরকারের ‘গ্রাম হবে শহর’ স্লোগানকে সফল করে তুলবে।

বক্তারা ই-ক্যাবকে এ-ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান এবং যশোরে এই মেলা আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানান।

এই মেলায় প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে ছিল - অনলাইন বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান দারাজ। এছাড়া গোল্ড স্পন্সর ইভ্যালি ও চালডাল। মেলায় পার্টনার হিসেবে ছিল এসএসএল কমার্জ, ই-পোস্ট, সুন্দরবন কুরিয়ার, ফ্লাইট এক্সপার্ট, প্রিয়শপ ও কম্পিউটার জগৎ। বাংলা নববর্ষ ও ঈদ উপলক্ষ্যে কোম্পানিগুলোর থাকবে বিশেষ অফার।

মেলায় ফটোগ্রাফি পার্টনার ছিলো কে এম এ তাহের ফটোগ্রাফি সিনেমাটোগ্রাফি।

দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে মেলায় অংশ নিয়েছে - দারাজ, ইভ্যালী, চালডাল, এস এস এল কমার্জ, প্রিয়শপ, ফ্লাইট এক্সপার্ট, সুন্দরবন কুরিয়ার, রকমারি, আজকের ডিল, সেবা এক্সওয়াইজেড, কক্সবাজার শপ, ক্লিক্সকো, বইঘর, এসটিআইটিবিডি, শপআপ, সূর্যমূখী, ফেমাস ফুড, এরিয়া ৭১, আমার শপ, ইনভেন্টক্রাফ্ট, কাবুলিয়ালা, পিকাবো, এয়ার পোস্ট, ক্রাফট ভিশনসহ দেশসেরা এবং বহু স্থানীয় অনলাইন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। 

এছাড়া, বিভিন্ন সেশনে ই-কমার্স, উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও ই-কমার্সে নারীদের সম্পৃক্ততা প্রভৃতি বিষয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেমিনারসমূহ লাইভ সম্প্রচার করেছে কমজগৎ টেকনোলজি।

– সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

Loading...