loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে এনসিপির মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা

  • ‘আগামী নির্বাচন হবে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো নির্বাচন

  • এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে আটটায় কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে

  • বেনফিকাকে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টারে চেল্সি

  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষিত

জনগণকে অতিরিক্ত পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী


জনগণকে অতিরিক্ত পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য শস্যের মজুদ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘অযথা আতঙ্কিত হয়ে বেশি করে পণ্য কিনে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ানো গর্হিত কাজ। সবাইকে এই ধরণের অপতৎপরতা থেকে বিরত থাকতে হবে।’

এ-প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নোভেল করোনাভাইরাসের সুযোগ নিয়ে কেউ যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত করতে না পারে সেদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং জনগণকে নজরদারি বাড়াতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শনিবার (২১ মার্চ) সকালে ঢাকা-১০ আসনে জাতীয় সংসদ উপ-নির্বাচনে ঢাকা সিটি কলেজ কেন্দ্র ভোট প্রদানের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ-কথা বলেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করছি যে, আতঙ্কিত হয়ে কিছু লোক অতিরিক্ত মাত্রায় খাদ্যদ্রব্য কিনে সংরক্ষণ করছে। তবে, আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই যে, আমাদের কোনো খাদ্য সমস্যা নেই। আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। তাই, আতঙ্কিত হয়ে অতিরিক্ত খাদ্যদ্রব্য কেনার দরকার নেই।’

তিনি বলেন, তিনি ইতোমধ্যে এই বিষয়ে অর্থমন্ত্রী, অর্থ সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সাথে বৈঠক করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যে রিজার্ভ রয়েছে তা দিয়ে আগামী এক বছরের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্য কেনার সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। সুতরাং এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই।’

সরকার-প্রধান বলেন, সরকারি গুদামগুলোতে সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন গম ছাড়াও ১৭ লাখ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। এর পাশাপাশি, বেসরকারি রাইস মিলগুলোতে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যশস্য রয়েছে। তিনি বলেন, ‘তাই, আমি সকলকে যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু খাদ্যদ্রব্য কিনতে অনুরোধ জানাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ভোক্তারা অতিরিক্ত নিত্যপণ্য কিনলে বাজারে চাপ সৃষ্টি হয়। এর ফলে প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যায়। যাঁদের পর্যাপ্ত অর্থ আছে তাঁরা এক সাথে অনেক পণ্য কিনতে পারেন। কিন্তু সাধারণ ও সীমিত আয়ের মানুষদের এক সাথে এতো পণ্য কেনার মতো সামর্থ নেই।

তিনি আরও বলেন, ‘কাজেই অন্যের কষ্ট বাড়ানোর কোনো অধিকার কারো নেই।’

একটি উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি টেলিভিশনে দেখলাম যে একজন বলছেন, তিনি ৩০ কেজি লবন কিনেছেন। আমি জানি না তিনি এই লবন কত দিনে খাবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, এর আগে অনেকেই বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ কিনেছিল। তখন এর দাম বেড়ে গিয়েছিল। ‘কিন্তু পেঁয়াজ পচনশীল হওয়ায় সেগুলো তাঁদেরকে আবর্জনার স্তুপে ফেলতে হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের পাশাপাশি জনগণকেও সতর্ক থাকতে হবে যাতে করে কেউ করোনা প্রাদুর্ভাবের অজুহাতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য মজুদ করতে না পারে। অতিরিক্ত পণ্য কিনে বাজারের উপর চাপ সৃষ্টি করা ঠিক হবে না। 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই সবাই স্বাভাবিক জীবন যাপন করুক। আমরা বাংলাদেশের নাগরিক। আমাদের মাটি আছে, আমাদের সব আছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত রাখতে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।

‘চীনে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পরার পরপরই আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা তখন চীন থেকে ৩১৫ জন শিক্ষার্থীকে দেশে ফিরিয়ে আনি এবং কোয়ারেন্টাইনে ১৪ দিন রাখার পরে তাঁদের ছেড়ে দেই।’

শেখ হাসিনা বলেন, বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে বিদেশ থেকে আগতদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। ‘যদি কাউকে এই ভাইরাসে সংক্রমণ বলে সন্দেহ করা হয়, তবে তাঁকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হচ্ছে।’ 

এ-ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, যারা বিদেশ থেকে দেশে ফিরছেন, তাঁদেরকে তাঁদের পরিবারের সদস্য ও অন্যান্যদের নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই অন্তত ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।

স্বাস্থ্য বিভাগ ও আইইডিসিআর সতর্ক আছে এবং দেশে প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে নিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা এই সব পদক্ষেপ নিচ্ছি যাতে মানুষ সতর্ক থাকে এবং এক্ষেত্রে আমরা বলতে পারি যে বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ভালো।’

সরকার-প্রধান বলেন, সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগীদের জন্য বেশ কয়েকটি বিশেষায়িত হাসপাতাল করেছে। তিনি বলেন, ‘আমরা চিকিৎসক ও নার্সসহ হাসপাতালগুলোতে কর্মরত অন্যান্যদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চিকিৎসক ও নার্সদের মাস্ক ও পার্সোনাল প্রোটেক্টিভ ইকুয়েপমেন্ট (পিপিই) আমদানি ও তৈরি করছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার টেলিভিশন, বেতার ও অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রাণঘাতী ভাইরাস সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করতে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে।

‘আমি আশা করি দেশবাসী সরকারের নির্দেশনা মেনে চলবেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার জনগণকে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস থেকে রক্ষা করতে এক স্থানে কয়েকজনের সমাগমকে নিষিদ্ধ করেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষির্কীর অনেক অনুষ্ঠান বাতিল করেছি এবং এর মধ্য দিয়ে আপনারা বুঝতেই পারছেন যে - আমরা জনগণের নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যের প্রতি কতটা গুরুত্ব দিচ্ছি।’

Loading...