করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিপর্যস্ত এখন সারাবিশ্ব। প্রতিনিয়তই বাড়ছে করোনা-আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। মৃত্যুর মিছিলও থামছে না। ইউরোপসহ পৃথিবীর প্রায় সব ফুটবল লিগই তাই স্থগিত হয়ে গেছে। শিগগিরই বল মাঠে গড়ানোর লক্ষণও নেই। সবকিছু মিলিয়ে তাই চলতি ২০১৯-২০ মৌসুমই বাতিল হয়ে যাওয়ার জোরালো শঙ্কা দেখছেন ইউয়েফা সভাপতি আলেকসান্দার সেফ্রিন। খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের।
অথচ কয়েকদিন আগেও ইউরোপের লিগগুলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করার জন্য চাপ দিয়েছিলেন সেফ্রিন। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ কমিটিসহ প্রায় সব লিগের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসেছিলেন। কিন্তু তাতে ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। বিশ্বের এমন অবস্থায় মাঠে ফুটবল খেলার মতো ঝুঁকি নেওয়ার মতো অবস্থায় নেই ক্লাবগুলো। এমনকি দর্শকশূন্য মাঠেও নয়।
বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে সামনে কী হবে - তার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না সেফ্রিন। আর মহামারি ক্রমেই যেভাবে বিধ্বংসী হচ্ছে, তাতে বর্তমান মৌসুম শেষ করা প্রায় অসম্ভব হবে বলে মনে করছেন তিনি, ‘কেউ জানে না, এই বৈশ্বিক মহামারিটি কবে-কখন শেষ হবে। আমাদের প্ল্যান এ, বি এমনকি সি-ও আছে, মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে (মৌসুম) শুরু করে জুনে কিংবা জুনের শেষ দিকে ইতি টানার।’
‘যদি এই সময়ের মধ্যে শেষ না করা যায়, তাহলে হয়তো এই মৌসুম আমরা হারিয়ে ফেলবো। আরও একটা সম্ভাবনা আছে। আগামী মৌসুমের শুরুতে করার। তাহলে পরের মৌসুমটি একটু দেরিতে শুরু হবে। আমরা লিগ ও ক্লাবগুলোর সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অন্য সব সেক্টরের মতো আমাদেরও অপেক্ষা করতে হবে।’
তবে শেষ পর্যন্ত মৌসুম বাতিল হয়ে গেলে বড় ধরনের আর্থিক-ক্ষতির মুখে পড়বে ফুটবলবিশ্ব, বিশেষ করে ক্লাবগুলো। কারণ, খেলোয়াড় ও কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খেতে হতে পারে তাঁদের। পৃষ্ঠপোষকদের অর্থ পাওয়া নিয়েও ঝামেলা রয়েছে। খেলা না হলে, টাকা না-ও দিতে চাইতে পারেন তাঁরা। সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়বেন চুক্তির বাইরে থাকা খেলোয়াড় ও কর্মীরা। তাঁদের বেতন-ভাতা হয়তাে এক প্রকার বন্ধই হয়ে যাবে।
উদ্ভূত সংকটে মাঠে ফুটবল গড়ানোর কোনো পরিস্থিতিই খুঁজে পাচ্ছেন না ইউয়েফা সভাপতি।
‘বন্ধ স্টেডিয়ামে দর্শকশূন্য অবস্থায় ফুটবল খেলা চিন্তা করা অনেক কঠিন। তবে আমরা এই মুহূর্তে ভাবতে পারছি না, এটা শুরু করতে পারবো কি-না, দর্শকদের নিয়ে কিংবা ছাড়া। যদি আর কোনো উপায় না পাই, তাহলে এই মৌসুম বাতিল করে দেওয়াই ভালো হবে। আমি বলতে পারি, ইউরোপিয়ান কাপের ফাইনাল দর্শকশূন্য মাঠে আয়োজনের চিন্তাই করছি না।’