বাংলাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ১১,৪৩৯টি নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও ২,৩৮১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে শনাক্তের সংখ্যা হলো ৪৯,৫৩৪। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। ফলে, এ-পর্যন্ত মৃতে সংখ্যা ৬৭২। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ৮১৬ জন। এ-পর্যন্ত সুস্থ হলেন ১০,৫৯৭ জন।
আজ সোমবার দুপুরে করোনা-পরিস্থিতি নিয়ে অনলাইনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দৈনন্দিন স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ-তথ্য জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের ৫২টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০.৮১ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ১৯ জন পুরুষ ও তিনজন নারী। তাঁদের মধ্যে একজনের বয়স ২১-৩০ বছরের মধ্যে, আটজনের বয়স ৪১-৫০ বছরের মধ্যে, চারজনের বয়স ৫১-৬০ বছরের মধ্যে, সাতজনের বয়স ৬১-৭০ বছরের মধ্যে ও দুইজনের বয়স ৭১-৮০ বছরের মধ্যে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের আটজন, সিলেট বিভাগে দুইজন ও বরিশাল বিভাগের একজন রয়েছেন।
বাড়িতে মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের, হাসপাতালে ১৫ জনের এবং মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন একজন।
ডা. নাসিমা জানান, এ-পর্যন্ত তিন লাখ ২০ হাজার ৩৬৯টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বুলেটিনে জানানো হয়, দেশে মোট করোনা-শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১.৩৯ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১.৩৬ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে এসেছেন ৪৪৯ জন, ছাড়া পেয়েছেন ২২২ জন। এ-পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৩,২৩৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ৬,০২১ জন।
সারাদেশে বর্তমানে আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩,২৮৪টি। প্রস্তুত করা হচ্ছে আরও ৭০০ শয্যা। ঢাকার ভেতরে রয়েছে ৭,২৫০টি শয্যা। ঢাকা শহরের বাইরে ৬,০৩৪টি শয্যা রয়েছে। আইসিইউ রয়েছে ৩৯৯টি, ডায়ালাসিস ইউনিট ১১২টি।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ২,৭০৭ জনকে, ছাড়া পেয়েছেন ৩,৭৫২ জন। এ-পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার ৮৭৯ জনকে। এ-পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ২ লাখ ২৮ হাজার ৭৪৩ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৯,১৩৬ জন।
দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যায় ৩১,৯৯১ জনকে।
অতিরিক্ত মহাপরিচালক জানান, কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) গত ২৪ ঘণ্টায় সংগৃহীত হয়েছে ১৯,১০৭টি, বিতরণ করা হয়েছে ২৯,৯০০ টি। এ-পর্যন্ত সংগ্রহ করা হয়েছে ২৪ লাখ ৮৯ হাজার ১৬২টি, বিতরণ করা হয়েছে ২১ লাখ ৪০ হাজার ২৯৩টি। বর্তমানে ৩ লাখ ৪৮ হাজার ৮৬৯টি পিপিই মজুদ রয়েছে।
গত ২৪ ঘন্টায় হটলাইন নম্বরে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৮৯টি এবং এ-পর্যন্ত প্রায় ৮৮ লাখ ৯৭ হাজার ৮১টি ফোন কল রিসিভ করে স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তিনি জানান, করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ-পর্যন্ত ১৬,২৪৭ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। ২৪ ঘন্টায় আরও ১০ জন চিকিৎসক প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪,২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিআর হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে সাতদিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন।
ডা. নাসিমা জানান, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৫৬০ জনসহ এ-পর্যন্ত বাংলাদেশে আগত ৭ লাখ ২ হাজার ৫৯৩ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩১ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনা-আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১১,০৫৪ জন। এ-পর্যন্ত শনাক্ত হলেন ২ লাখ ৬০ হাজার ৫৭৯ জন। মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৭৪ জনের এবং এ-পর্যন্ত ৭,৪৩১ জনের।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৩১ মে পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, সারাবিশ্বে ২৪ ঘন্টায় করোনা-আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৫৫১ জন। এ-পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছেন ৫৯ লাখ ৩৪ হাজার ৯৩৬ জন। গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যু হয়েছে ৪,৪৬১ জনের এবং এ পর্যন্ত ৩ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৬ জনের।
উল্লেখ্য, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয় বলে জানায় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। আর ১৮ মার্চ প্রথম একজনের মৃত্যুর সংবাদ জানানো হয়।
‘আপনার সুস্থতা আপনার হাতে’ উল্লেখ করে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে মেনে চলতে বুরটিনে সকলের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
