শহীদ বুদ্ধিজীবী মুনীর চৌধুরীর স্ত্রী ও প্রয়াত মিশুক মুনীরের মা, বিশিষ্ট নাট্যাভিনেত্রী লিলি চৌধুরী আর নেই। সোমবার (১ মার্চ) বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বনানীর বাসভবনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
লিলি চৌধুরীর দাফন মঙ্গলবার বাদজোহর বনানী কবরস্থানে হবে। লিলি চৌধুরীর ছেলে আসিফ মুনীর গণমাধ্যমকে জানান, আত্মীয়-স্বজনদের শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মরদেহ বনানীর বাসভবনে রাখা হবে। এরপর, সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত লিলি চৌধুরীর মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে। বাদজোহর বনানী কবরস্থানে জানাজা শেষে তাঁকে ছেলে মিশুক মুনীরের কবরের পাশে দাফন করা হবে।
লিলি চৌধুরী ১৯২৮ সালের ৩১ অগাস্ট টাঙ্গাইলের জাঙ্গালিয়া গ্রামে নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৯ সালে মুনীর চৌধুরীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের শেষ ভাগে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী তাঁদের এ-দেশীয় দোসরদের সহায়তায় শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাংবাদিকসহ হাজারো বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। ১৪ ডিসেম্বর আলবদরবাহিনী মুনীর চৌধুরীকে ধরে নিয়ে যায়। স্বামীর সঙ্গে সেই লিলির শেষ দেখা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করা লিলি চৌধুরীকে সদ্যস্বাধীন দেশে কঠিন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। তিনি চাকরির পাশাপাশি অভিনয় করেছেন বেতার, মঞ্চ ও টেলিভিশনে। মুনীর চৌধুরীর শুরু করা টেনেসি উইলিয়ামসের ‘স্ট্রিট কার নেম্ড ডিজায়ার’ নাটকের অসমাপ্ত অনুবাদের কাজ লিলিই শেষ করেন।
স্বামীর সঙ্গে তাঁর পত্রালাপ আর দু’জনের লেখা ডায়েরির সংকলন প্রকাশিত হয়েছে ‘দিনপঞ্জি-মনপঞ্জি-ডাকঘর’ শিরোনামে।
কাজের স্বীকৃতি হিসেবে নাট্যকার-নাট্যশিল্পী সংসদ, টেলিভিশন নাট্যশিল্পী নাট্যকার সংসদ ও বাংলাদেশ মানবাধিকার নাট্য পরিষদের সম্মাননা পেয়েছেন লিলি চৌধুরী।