loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • রিয়ালেই যোগ দেবেন এমবাপে?

  • প্রিমিয়ার লিগ শিরোপার কাছে ম্যানসিটি

  • জয় বাংলা ম্যারাথন ৭ জুন, রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম উদ্বোধন

  • ফ্রান্সের বর্ষসেরা খেলোয়াড় এমবাপে

  • অলিভিয়ে জিরু মিলান ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে

শেখ জামালের ৭১তম জন্মদিন পালিত


শেখ জামালের ৭১তম জন্মদিন পালিত

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের ৭১তম জন্মদিন পালিত হয়েছে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, কবর জিয়ারত, রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল এবং ফাতিহা পাঠের মধ্যদিয়ে। রাজধানীর বনানী কবরস্থানে রোববার (২৮ এপ্রিল) সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রথমে শেখ জামালের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তিনি দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগের পক্ষে শেখ জামালের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

এ-সময়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা.মোস্তাফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি ও আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আফজাল হোসেন ও সুজিত রায় নন্দী, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শ্রদ্ধা নিবেদনের পর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নেতৃবৃন্দ, দলের সহযোগী সংগঠন ও বিভিন্ন সামাজিক ও ক্রীড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এরপর একে একে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শহীদ শেখ জামালের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

জন্মদিন উপলক্ষ্যে শেখ জামালের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। রোববার সকালে শহীদ শেখ জামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর সমাধিতে ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মেয়র শহীদ শেখ জামালের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন এবং তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনায় ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করেন। এ-সময় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ডা. দিলীপ কুমার রায়, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ কামাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

শেখ জামালের জন্মদিন উপলক্ষ্যে বনানী কবরস্থানে তাঁর কবরসহ ১৫ই অগাস্টের সকল শহীদের কবরে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিলের নেতৃত্বে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

এছাড়াও জন্মদিন উপলক্ষ্যে শেখ জামালের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সংগঠনের সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু ও সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর নেতৃত্বে এই পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দ্বিতীয় পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহী লেফটেন্যান্ট শেখ জামালের ৭১তম জন্মদিনে যাত্রাবাড়ীর কাঠেরপুলে দুস্থ, অসহায় ও এতিম শিশু-কিশোরদের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য মশিউর রহমান মোল্লা সজল। এতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শহীদ শেখ জামালের জন্মদিন উপলক্ষ্যে শ্রমিক ও রিকশা চালকদের মাঝে ছাতা, খাবার স্যালাইন ও পানির বোতল বিতরণ করেছেন ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু ও সাধারণ সম্পাদক হাজী আবুল হোসেন।

শেখ জামাল ১৯৫৪ সালের ২৮ এপ্রিল তৎকালীন গোপালগঞ্জ মহকুমা বর্তমানে জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি ছিলেন সংস্কৃতি প্রেমী এবং একজন ক্রীড়াবিদ।

১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে শেখ জামালও গৃহবন্দী ছিলেন। সেখান থেকে পালিয়ে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে নেতৃত্ব দেন। শেখ জামাল ধানমন্ডি থেকে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পথচলা শেষে ভারতের আগরতলা পৌঁছান এবং সেখানে মুজিববাহিনীতে যোগদান করে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তিযুদ্ধের নয় নম্বর সেক্টরে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেন।

শেখ জামাল ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক চৌকস-মেধাবী সেনা অফিসার। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের প্রথম ব্যাচের কমিশন্ডপ্রাপ্ত অফিসার। ১৯৭৪ সালে শেখ জামাল যুগোস্লাভিয়ার মিলিটারি একাডেমিতে ক্যাডেট হিসেবে প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে অংশগ্রহণ করেন। এরপর ব্রিটেনের স্যান্ডহার্স্ট একাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে ঢাকা সেনানিবাসস্থ দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট পদে যোগদান করেন।

দ্বিতীয় ইস্ট বেঙ্গলে চাকরিকালে স্বল্প সময়েই অফিসার ও সৈনিকদের মাঝে তিনি অসাধারণ পেশাগত দক্ষতা ও আন্তরিকতার ছাপ রেখেছিলেন। কয়েক সপ্তাহেই শেখ জামাল অফিসার ও সৈনিকদের মধ্যে তাঁদেরই একজন হয়ে যান। ট্রেনিং গ্রাউন্ডে, রণকৌশলের ক্লাসে, অবস্টাকল ক্রসিংয়ে অংশ নিয়ে সৈনিকদের মুগ্ধ করেন। ব্যাটালিয়ন বক্সিং টিমের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দিতেন।

তিনি ১৯৭৫ সালের ১৪ অগাস্ট ব্যাটালিয়ন ডিউটি অফিসার হিসেবে ক্যান্টনমেন্টে নিজ দায়িত্ব পালন করেন। ওই দিন রাতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে ফিরে আসেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট কালোরাত্রিতে ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে নৃশংসভাবে খুন হন।

Loading...