loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে টাইগ্রেসদের দল ঘোষণা

  • বার্সাকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিতে পিএসজি

  • অ্যাটলেটিকোকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে ডর্টমুন্ড

  • রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পাঠ্যক্রম যুগোপযোগী কর তাগিদ দিলেন

  • ক্যানাডায় আর্টসেলের আটটি কনসার্ট

আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে টাইগারদের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়


আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে টাইগারদের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়

বৃষ্টিপাতের কারণে ১৭ ওভারে কমিয়ে আনা ম্যাচটায় বাংলাদেশ যখন তিন উইকেটে ২০২ রান করে ফেলে, তখনই আসলে ম্যাচের ফলাফল অনুমান করা গিয়েছিল। তাড়া করতে নেমে সাকিবের এক স্পেলেই এলোমেলো হয়ে যায় আয়ারল্যান্ড; প্রথম ছয় ওভারেই হারিয়ে ফেলে ছয় উইকেট। ম্যাচটা তখনই টাইগারদের কাছে চলে আসে। ১৭ ওভার ব্যাট করে নয় উইকেটে ১২৪ রান করতে পেরেছে আয়ারল্যান্ড। ৭৭ রানের এই জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। রানের হিসেবে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবধানের জয়।

ওপেনার লিটন দাসের দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরির পরে অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের অসাধারণ বোলিংয়ে এক ম্যাচ বাকী রেখেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় নিশ্চিত করলো স্বাগতিক বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বুধবার (২৯ মার্চ) সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ ৭৭ রানে হারিয়েছে আয়ারল্যান্ডকে। এদিন নিজেদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে রানের দিক থেকে দ্বিতীয় বড় ব্যবধানে জয় পেলো টাইগাররা। পাশাপাশি, তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সাকিবের দল।

ব্যাট হাতে বাংলাদেশের পক্ষে ১৮ বলে দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন লিটন। ৪১ বলে ৮৩ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন লিটন। বল হাতে ২২ রানে পাঁচ উইকেট নেন সাকিব।

বাংলাদেশ এই ম্যাচেও টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে। টসের ১০ মিনিট পর বৃষ্টি শুরু হলে নির্ধারিত সময়ে শুরু হতে পারেনি ম্যাচটি। বৃষ্টির কারণে ১ ঘন্টা ৪০ মিনিট নষ্ট হওয়ায় ম্যাচটি ১৭ ওভারে নির্ধারিত হয়।

ব্যাট হাতে নেমে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন দুই ওপেনার লিটন ও রনি তালুকদার। ৩.৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ৫০ স্পর্শ করেন তাঁরা। যা টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম ৫০ রান বাংলাদেশের। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে ১ রান নিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দশম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লিটন। এজন্য ১৮ বল খেলেন তিনি। ২০০৭ সালে ২০ বলে করা মোহাম্মদ আশরাফুলের রেকর্ড ভেঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে দ্রুততম হাফ-সেঞ্চুরির নজির গড়েন লিটন।

লিটনের রেকর্ড হাফ-সেঞ্চুরিতে পাওয়ার প্লেতে ৮৩ রান পায় বাংলাদেশ। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে বাংলাদেশের রান ১০০ স্পর্শ করে। দশম ওভারের দ্বিতীয় বলে ভেঙে যায় বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। আয়ারল্যান্ডের লেগ স্পিনার বেন হোয়াইটের বলে লং-অনে মার্ক অ্যাডায়ারকে ক্যাচ দেন রনি। তিনটি চার ও দুইটি ছক্কায় ২৩ বলে ৪৪ রান করেন রনি। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৬ বলে ১২৪ রান করেন লিটন-রনি। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে উদ্বোধনী জুটিতে নতুন রেকর্ড এটি। সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪৩ বলে ৯১ রানের সূচনা করেছিলেন লিটন-রনি।

দ্বাদশ ওভারের শেষ বলে থামেন লিটন। হোয়াইটের বলে উইকেটরক্ষক লরকান টাকারকে ক্যাচ দিয়ে ৪১ বল খেলে ১০টি চার ও তিনটি ছক্কায় ৮৩ রান করে আউট হন লিটন। টি-টোয়েন্টিতে এটিই তাঁর সেরা ইনিংস।

দলীয় ১৩৮ রানে লিটন ফেরার পরে বাংলাদেশের রানের চাকা দ্রুত ঘুরিয়েছেন অধিনায়ক সাকিব ও তাওহিদ হৃদয়। তৃতীয় উইকেটে ২৯ বলে ৬১ রান করে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেন তাঁরা। নির্ধারিত ১৭ ওভারে ৩ উইকেটে ২০২ রান করে বাংলাদেশ। এর আগের ম্যাচেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯.২ ওভারে পাঁচ উইকেটে ২০৭ রান করেছিল বাংলাদেশ।

তিনটি চার ও দুইটি ছক্কায় ২৪ বলে অপরাজিত ৩৮ রান করেন সাকিব। ১৩ বলে তিনটি চার ও একটি ছক্কায় ২৪ রানে ফেরেন হৃদয়। সাকিবের সাথে দুই রানে অপরাজিত ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। 

আয়ারল্যান্ডের হোয়াইট দুইটি এবং মার্ক অ্যাডায়ার একটি উইকেট শিকার করেন।

১৭ ওভারে ২০৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে প্রথম বলেই উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। পেসার তাসকিনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে খালি হাতে ফেরেন আইরিশ অধিনায়ক পল স্টার্লিং।

তাসকিনের মতো দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে উইকেট শিকার করেন সাকিবও। রনিকে ক্যাচ দিয়ে সাকিবকে প্রথম উইকেট দেন ছয় রান করা লরকান টাকার। 

নিজের দ্বিতীয় ওভারে দুই উইকেট তুলে নেন সাকিব। রস্ অ্যাডায়ার ও গ্যারেথ ডেলানিকে ছয় রানে আউট করেন টাইগার-দলপতি।

নিজের তৃতীয় ওভারেও দুইবার আঘাত হানেন সাকিব। এবার জর্জ ডক্রেল দুই ও হ্যারি টেক্টরকে ২২ রানে বিদায় দেন সাকিব। ফলে, তিন ওভারে ১৪ রানে পাঁচ উইকেট শিকার হয় সাকিব। ১১৪ ম্যাচের টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয়বারের মতো ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিলেন সাকিব। তিনি ২০১৮ সালে মিরপুরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম পাঁচ উইকেট শিকার করেছিলেন।

টেক্টরকে শিকার করে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের পেসার টিম সাউদিকে সরিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হলেন সাকিব। ১১৪ ম্যাচে সাকিবের উইকেট এখন ১৩৬টি; ১০৭ ম্যাচে সাউদি শিকার ১৩৪ উইকেট।

সাকিবের ঘূর্ণিতে ৪৩ রানে ছয় উইকেট হারিয়ে কার্যত ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে আয়ারল্যান্ড। এতে দ্রুত গুটিয়ে যাওয়ার শংকায় পড়ে সফরকারী দল। অবশ্য, সাত নম্বরে ব্যাট হাতে নামা কার্টিস ক্যাম্ফার ঝড় তোলেন। ২৯ বলে হাফ-সেঞ্চুরি করে দলের রান ১০০ অতিক্রম করান তিনি।

পঞ্চদশ ওভারে তাসকিনের বলে আউট হন ক্যাম্ফার। তিনটি করে চার-ছক্কায় ৩০ বলে ৫০ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত, ১৭ ওভারে নয় উইকেটে ১২৫ রানে শেষ হয় আয়ারল্যান্ড ইনিংস। 

সাকিব ২২ রানে পাঁচটি ও তাসকিন ২৮ রানে তিন উইকেট শিকার করেন।

আগামী ৩১ মার্চ একই ভেনুতে হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ।

Loading...