loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • আগামী জাতীয় নির্বাচন সম্পূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু হবে: ব্রিটিশ এমপিকে প্রধান উপদেষ্টা

  • তাহসান খান বিয়ে করছেন

  • ফুলে-কান্নায় অভিনেত্রী অঞ্জনাকে বিদায়; বনানীতে সমাহিত

  • বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স’র ৫৩তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত

  • বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে যুক্ত হলো প্রাইম লিফ প্রসেসিং কোম্পানি

স্বাগত খ্রিস্ট্রীয় নববর্ষ-২০২৫


স্বাগত খ্রিস্ট্রীয় নববর্ষ-২০২৫

খ্রিস্ট্রীয় নতুন বছর-২০২৫কে স্বাগত। ঘড়ির কাঁটা মধ্যরাত স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বের প্রতিটি দেশ নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি অনুযায়ী ২০২৫ সালকে স্বাগত জানাচ্ছে। বর্ণিল আতশবাজি, আলোকসজ্জা ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে মানুষ নতুন বছরের আগমনে মেতে উঠেছে। বিশ্বে সময়-অঞ্চল অনুযায়ী, খ্রিষ্টীয় নববর্ষ উদযাপন প্রথম শুরু হয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্র কিরিবাতি ও টোঙ্গায়। এখানকার সময় অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর বিকেল চারটা (গ্রিনউইচ মান সময়) থেকে নতুন বছর শুরু হয়েছে। এছাড়া বিশ্বে সবার আগে নতুন সালকে স্বাগত জানানো দেশের তালিকায় রয়েছে – নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। অকল্যান্ডের স্কাই টাওয়ার এবং সিডনি হারবার ব্রিজের আতশবাজি দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ তৈরি করে – যা স্থানীয় ও পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ ছড়ায়।

ইউরোপ: আতশবাজিতে আলোর ঝলকানি
ইউরোপে নববর্ষ উদযাপনের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হলো – আলোকসজ্জা ও আতশবাজি। লন্ডনের বিগ বেন ও থেমস নদীর তীরে জমকালো আতশবাজি হাজারো মানুষকে আকৃষ্ট করে। প্যারিসের আইফেল টাওয়ারের আলোকিত সৌন্দর্য এবং রোমের ঐতিহাসিক স্থানে উৎসবের আমেজ সবাইকে আনন্দে ভাসায়।

আমেরিকা: বল ড্রপ ও প্যারেড
নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে বিখ্যাত বল ড্রপ ইভেন্ট বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়। হাজারো মানুষ একত্রিত হয়ে নতুন বছরের কাউন্টডাউন উদযাপন করে। পাশাপাশি, কনসার্ট, প্যারেড এবং পারিবারিক আয়োজনে দেশব্যাপী নববর্ষের উৎসব চলে।

এশিয়া: ঐতিহ্য ও আধুনিকতার সমন্বয়
এশিয়ার দেশগুলোতে নববর্ষ উদযাপন ভিন্নমাত্রা পায়। জাপানে মন্দিরে ঘণ্টাধ্বনি দিয়ে নতুন বছর শুরু হয়, আর চীনে পরিবারসহ সময় কাটানোর রীতি প্রচলিত। ভারত ও বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং রঙিন উৎসব নতুন বছরকে উজ্জ্বল করে তোলে।

মধ্যপ্রাচ্য: সংস্কৃতি আর আধুনিকতার মেলবন্ধন
মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে নববর্ষ উদযাপনের জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। দুবাইয়ের বুর্জ খলিফার চমৎকার আতশবাজি সারাবিশ্বের নজর কাড়ে। এছাড়া পরিবারকেন্দ্রিক অনুষ্ঠানও বাড়ছে।

ঢাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আতশবাজি
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র কঠোর নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে ব্যাপক আতশবাজি ফুটানো হয়েছে। সমগ্ৰ নগরী মঙ্গলবার রাত ১২টা বাজার সঙ্গে সঙ্গে আতশবাজিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে। আতশবাজির ছটায় রঙ্গিন হয়ে উঠে রাতের আকাশ। নববর্ষের শুরুতে আতশবাজির পাশাপাশি, ফানুস উড়ানো ও উচ্চস্বরে গান বাজানো ও প্রায় বাড়ির ছাদে রাতভর চলেছে ডিজে পার্টির উন্মাদনা। এতে শিশু রোগী, ও বৃদ্ধরা চরম বিপাকে পড়েন।

ডিএমপি’র নির্দেশনা অনুযায়ী, ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ছয়টা থেকে ১ জানুয়ারি সকাল আটটা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে যেকোনো অনুষ্ঠান, সভা-সমাবেশ, গণজমায়েত নিষিদ্ধ ছিল। পাশাপাশি, সব বার বন্ধ রাখা এবং হোটেলগুলোর সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠান আয়োজনের শর্ত জারি করা হয়। তবুও পুরান ঢাকার গেন্ডারিয়া, সুত্রাপুর, ওয়ারী, শাঁখারীবাজার, চকবাজার, লালবাগ, হাজারীবাগ, আজিমপুর, নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় আইন অমান্য করে উদযাপন চালিয়ে যাওয়া হয় বিভিন্ন পার্টি।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত থাকলেও উদযাপনে বাধা দেওয়া সম্ভব হয়নি। এছাড়া, এ-বছর ভ্রাম্যমাণ আদালত এসব কাজে বাধা দেওয়ার কথা থাকলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।

একজন তরুণ গণমাধ্যমকে বলেন, বছরে একবার নতুন বছর আসে। উদযাপন না-করলে খারাপ লাগে। আরেকজন জানান, এটা পুরান ঢাকার ঐতিহ্য। যেকোনো উৎসব তাঁরা বড় করে পালন করেন। স্থানীয়দের মতে, উৎসবের এই আয়োজন পুরান ঢাকার দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যের অংশ হলেও এতে আইন অমান্যের বিষয়টি স্পষ্ট।

ঐতিহ্য বনাম আইন পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী উদযাপন ও আধুনিক শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার মধ্যে এই বিরোধ বারবার সামনে আসছে। জনসাধারণের আনন্দ উদযাপনের অধিকার ও আইন প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

পুরান ঢাকার এই নববর্ষ উদযাপন শহরের ঐতিহ্যের এক অনন্য উদাহরণ হলেও, আইন ভঙ্গ এবং নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকে তা মুক্ত নয়। তবে, ঐতিহ্য ও নিরাপত্তার সমন্বয় ঘটিয়ে ভবিষ্যতে এমন উদযাপনকে নিয়মের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস খ্রিস্ট্রীয় নতুন বছর-২০২৫ উপলক্ষ্যে দেশবাসী এবং প্রবাসী বাঙালিসহ বিশ্ববাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বাণীতে তিনি বলেন, নতুনের আগমনী বার্তা আমাদের উদ্বেলিত করে, নবোদ্যমে সুন্দর আগামীর পথচলার জন্য অনুপ্রেরণা জোগায়। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নতুন বছরের এই মাহেন্দ্রক্ষণে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে নতুন সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উন্নতির নতুন শিখরে আরোহণে অঙ্গীকারাবদ্ধ।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার লাখো শহিদের রক্ত ও জুলাই-অগাস্টের ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অর্জিত স্বাধীনতাকে সর্বদা সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করছে। আমরা দেশকে ভালোবাসবো, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করবো এবং যেকোনো সন্ত্রাসবাদকে প্রতিহত করবো।

নতুন বছরে মানুষে-মানুষে সম্প্রীতি, সৌহার্দ ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও জোরদার হোক – এই কামনা করে তিনি বলেন, খ্রিষ্টীয় নতুন বছর ২০২৫ সবার জীবনে বয়ে আনুক অনাবিল সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি।

Loading...