বাংলাদেশ বিনিয়োগ সম্মেলন-২০২৫ এ স্থানীয় উদ্যোক্তাদের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। এতো বেশি মানুষ উপস্থিত হয়েছেন যে, তাঁদের সবার স্থান সংকুলান সম্ভব হয়নি। এর কারণ, আমরা যাঁদের দাওয়াত দিয়েছি – তাঁরা সকলেই উপস্থিত হয়েছেন। আমাদেরও ধারণা ছিল-না যে – এতো মানুষ উপস্থিত হবেন। আগামীতে আমরা বড় করে চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে বিনিয়োগ সামিট করবো। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)’র নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বিনিয়োগ সামিটের তৃতীয় দিনের কর্মকাণ্ড নিয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে বুধবার (৯ এপ্রিল) এসব কথা বলেন। খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, অনেক বিনিয়োগকারী, উপদেষ্টা, সচিব আজ সারাদিন এখানে ছিলেন। এছাড়া উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সাইডলাইনে আরও অনেকগুলো সভা সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে কিছু বিনিয়োগকারী প্রধান উপদেষ্টার সাথে বৈঠক করেছেন। জারা, লাফার্জ সিমেন্ট ও জার্মান প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এছাড়া, ডিপি ওয়াল্ডের সিইও’র সাথে বৈঠক হয়েছে।
ডিপি ওয়াল্ডের সিইও বাংলাদেশে ফ্রি ট্রেড জোন করার প্রস্তাব দিয়েছেন; এটি হলে ব্যবসা বাণিজ্যের সম্প্রসারণ হবে। আমরা বলেছি, এটা আমাদের জন্য নতুন। ফ্রি ট্রেড জোন করার আগে আমাদের অভিজ্ঞতা নিতে হবে। এজন্য শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধি দল পাঠানো হবে।
লাফার্জ সিমেন্টের প্রতিনিধি কিছু সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন, আমরা সেগুলো এড্রেস করার চেষ্টা করবো বলে জানিয়েছি। জার্মান প্রতিনিধিদের আমরা বলেছি, আমরা আর কি করতে পারি? তাঁরা বলেছেন, এ-ধরনের সামিট-এ আরও বেশি জার্মান আনতে হবে। আমরা তাঁদের বলেছি, বড় পরিসরে না-হলেও সারাবছরই ছোট করে বিনিয়োগ সম্মেলন হতে পারে; সেই চেষ্টা করবো। যুক্তরাজ্যের প্রতিনিধিরা আমাদের শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন।
এছাড়া এফডিআই আকর্ষণ করতে শ্রমিকদের জীবনের মানোন্নয়নের জন্য বুধবার আইএলও এর সাথে বিডার একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। আমাদের শ্রমমান অনেক নিচে। এটিকে আমরা আরও উপরে নিতে চাই, যাতে শ্রম অধিকারগুলো সুসংহত থাকে। এছাড়া চীনা একটি টেক্সটাইল কোম্পানির সাথে চুক্তি হয়েছে, তাঁরা বাংলাদেশ ১৫০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এতে প্রায় ১৫,০০০ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। চীনা বিনিয়োগকারীরা আরও জানিয়েছেন, তাঁরা শিগগিরই ২০০ বিনিয়োগকারী নিয়ে বাংলাদেশে আবার আসবে।
বিডা’র নির্বাহী চেয়ারম্যান আরও বলেন, এবারের বিনিয়োগ সামিটে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সাথে রাজনীতিবীদদেরও সংযোগ স্থাপন করে দেওয়া হয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের সাথে আলোচনার সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল – বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)’র প্রতিনিধিবৃন্দ তাঁদের কিছু উপহারও দেন।
বিনিয়োগকারীরা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জানতে চেয়েছেন, যদি তাঁরা ক্ষমতায় আসেন, তাহলে বর্তমান সরকার যেসব নীতি-পলিসি ঘোষণা করছে, সেগুলো ঠিক থাকবে কি-না।
চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন আরও বলেন, এই সম্মেলনে বেশিরভাগ বিনিয়োগকারী টেক্সটাইল, গার্মেন্ট, নাবায়নযোগ্য জ্বালানি ও লাইট ইঞ্জিনিয়ারিংখাতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছেন।