বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের নন্দিত নায়ক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান (ফারুক)-কে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা-ভালোবাসা ও অশ্রুতে শেষ বিদায় জানিয়েছে সর্বস্তরের মানুষ। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মঙ্গলবার (১৬ মে) বেলা পৌনে ১২টা থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন স্তরের মানুষ তাঁর মরদেহে শ্রদ্ধা জানায়। চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন, ফেরদৌস, নিপুণ, জায়েদ খানসহ ঢাকাই সিনেমার নবীন প্রবীণ বহু মুখ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে উপস্থিত ছিলেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
শ্রদ্ধা নিবেদন পর্বে প্রথমে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পক্ষে লেফটেন্যান্ট কর্নেল সৈয়দ মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ শ্রদ্ধা জানান। এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে কমোডর এমএম নাঈম রহমান তাঁর কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলের নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা এ-সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, “চিত্রনায়ক ফারুক আজীবন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে গেছেন। আদর্শের প্রশ্নে তিনি ছিলেন অবিচল, অনড় ও আপসহীন। আদর্শের প্রশ্নে তিনি সংকটেও দিশেহারা হননি।”
জাসদ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় কবিতা পরিষদ, জয় বাংলা সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, আওয়ামী শিল্পী গোষ্ঠী, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রয়াত এই অভিনয়শিল্পী ও সংসদ সদস্যের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার সকালে মৃত্যু হয় ফারুকের। রক্তে সংক্রমণজনিত জটিলতা নিয়ে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর।
মঙ্গলবার সকালে ইউএস বাংলার একটি ফ্লাইটে ঢাকা পৌঁছায় ফারুকের কফিন। সেখানে থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় উত্তরার বাসায়।
দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্ব শেষে বেলা পৌনে ১টার দিকে ফারুকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর দীর্ঘদিনের কর্মস্থল এফডিসিতে। সেখনে তাঁর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান এক সময়ের সহকর্মী শিল্পী, কলাকুশলীরা।
বেলা সাড়ে তিনটায় এফডিসিতে জানাজার পরে ফারুকের মরদেহ নেওয়া হয় চ্যানেল আই-এর কার্যালয়ে। বিকেল পাঁচটায় গুলশান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আরেক দফা জানাজা হয়।
পরে, ফারুকের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুরের কালীগঞ্জের তুমুলিয়া দক্ষিণ সোম গ্রামে। সেখানে সোমটিওরী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় তাঁকে।