‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট’ (বিগ) ২০২৩ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এবার সেরা ৫২টি স্টার্টআপকে মোট সাত কোটি টাকার অনুদান প্রদান করা হয়েছে। তরুণ উদ্যোক্তা, অর্থাৎ স্টার্টআপদের অনুপ্রাণিত করতে ‘উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প’ তৃতীয়বারের মতো এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করে। তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এই প্রতিযোগিতার আয়োজক। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শনিবার (১৭ জুন) গ্র্যান্ড ফিনালে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান; সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। বিশেষ অতিথি ছিলেন, তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে, বিসিসি’র নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার ও স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। স্বাগত বক্তব্য দেন আইডিয়া প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আলতাফ হোসেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
‘বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্য্যান্ট (বিগ)’ আয়োজনের প্রধান লক্ষ্য হলো – তরুণ উদ্যোক্তাদের উদ্ভাবনী ধারণা উৎসাহিত করে দেশে স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা। ‘ডেয়ার টু স্ট্যান্ড বিগ’ স্লোগানটি নিয়ে আয়োজিত বিগ ২০২৩-এর সারাদেশে ক্যাম্পেইন শেষে প্রাথমিক পর্যায়ে ৬,৮৪৬টি স্টার্টআপ ও উদ্ভাবক এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে আবেদন করে। সবশেষে, বিগ ২০২৩ এর সেরাদের সেরা স্টার্টআপ হিসেবে যৌথ বিজয়ী হয় ‘ফ্যাব্রিক লাগবে লিমিটেড’ এবং ‘মার্কোপলো এআই’।
ওয়ান বিগ উইনার ২০২৩ হিসেবে এই যৌথ বিজয়ীর প্রত্যেককে এক কোটি টাকা করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, সেরা ৫০টি স্টার্টআপের প্রত্যেকেই ১০ লাখ টাকা করে মোট পাঁচ কোটি টাকার অনুদান পেয়েছে। অর্থাৎ, সেরা ৫২টি স্টার্টআপকে মোট সাত কোটি টাকা অনুদান প্রদান করা হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান বলেন, বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা কিভাবে পৌঁছে যাবো – সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। সরকারের কাজ হলো – অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া, আর বেসরকারি খাতকে সুযোগ দিয়ে দেওয়া। তিনি বলেন, ফ্রিল্যান্সারদের জন্যে আইডি কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তাঁরা ব্যাংক লোন সুবিধাসহ বিভিন্ন সুযোগ গ্রহণ করতে পারছেন।
সভাপতির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ-প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা ২০১৫ সালের শুরু থেকে ১০ বছরে প্রায় ৪০০ স্টার্টআপ আইডিয়া প্রকল্পকে ফান্ড করেছি। এর থেকে প্রায় ৩০ শতাংশ স্টার্টআপ এখনও বেঁচে আছে ও লড়াই করে টিকে আছে। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০ শতাংশ স্টার্টআপ প্রি-সিড এবং গ্রোথ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই আমরা চালু করেছি বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট। তিনি আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য তিনটি। সেগুলো হলো – ইনোভেশন ইকোসিস্টেম, উদ্যোক্তা সাগ্লাই চেইন তৈরি করা এবং স্টার্টআপ কালচার ডেভেলপ করা। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা স্টার্টআপ পলিসি চূড়ান্ত করতে যাচ্ছি।
পলক আরও বলেন, আমাদের লক্ষ্য – ২০২৫ সালের মধ্যে আরও পাঁচটি বিলিয়ন ডলার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি স্টার্টআপ খাতের ৩০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা।
ফ্যাব্রিক লাগবে লিমিটেড এবং মার্কোপলো এআই (মার্কেটিয়ার এআই লি.) ছাড়া বাকি সেরা ৫০টি স্টার্টআপ হলো: এগ্রিস্মার্ট, অ্যান্ট স্যুট, অ্যাকোয়ালিংক বাংলাদেশ লিমিটেড, আয়করি ডিজিটাল লিমিটেড, বাংলা ইস্কুল বিডি লিমিটেড, বাজার৩৬৫ লিমিটেড, কার্ডিকেয়ার, ছাদ বাজার, চেকবক্স, দেশিফার্মার লিমিটেড, ডিগারমা, ডকটাইম লিমিটেড, ডিপ ইরিগেশন বিডি লি., ই-ইরিগেশন, ই-ওস্তাদ, ইজি গো, এডু এসিস্ট-দি ফিউচার অফ ইনক্লিউসিভ এজুকেশন, এনগেজ, ইপল্লি, ফার্মহাউস বিডি, জি-উইজেটস স্মার্ট এনার্জি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (এসইএমএস), গ্রামশপ, হিশাবি টেকনোলজিস লিমিটেড, ইনকাম, ইন্টারেক্টিভ কেয়ারস্, জেআরসি বোর্ড, কৃষি স্বপ্ন, লাইল্যাক, ম্যাভেরিক ইনোভেশন, মিমবা, মমিকিডস্ লি., মোর টেক বিডি, নিরাময় হেলথটেক, রোবট্রি বাংলাদেশ, রিওগ্যাস, স্বাস্থ্য সেবা, শালবৃক্ষ লি., সম্ভব, সঠিক এআই, সক্রিয় টেকনোলজিস লিমিটেড, সোল শেয়ার-সোল মবিলিটি, স্টাফবেস লিমিটেড, টেকরেভ ৪.০- স্মার্ট ফ্যাক্টরি (টেকনোভাস লিমিটেড, টয়লেন্ড, টয়ো, ভিআর বাংলা, ওয়ান্ডার ওম্যান, ওয়েস্ট বাংলাদেশ, ইয়োর ক্যাম্পাস এবং যায়ন্যাক্স হেলথ লিমিটেড।
