loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে এগিয়ে আসার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার

  • বিশ্বকবি’র ১৬৪তম জন্মবার্ষিকীতে তিনদিনের কর্মসূচি শুরু

  • ঈদ উপলক্ষ্যে ১১ ও ১২ জুন ছুটির প্রজ্ঞাপন জারি

  • আর্সেনালকে হারিয়ে স্বপ্নপূরণের কাছাকাছি পিএসজি

  • প্রধান উপদেষ্টা ও দেশবাসীর প্রতি বিএনপি-প্রধানের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ

আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী


আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা শনিবার (১ জুলাই) আগামী নির্বাচনে তাঁর দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’য় ভোট চেয়েছেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতা এনেছে, এ-দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং দেশবাসীর জন্য খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছে। তাই, আগামী সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’-কে ভোট দিন। প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ-কথা বলেন। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য বদলে যায়। এ-সময়ে তিনি গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য তাঁর সরকারের প্রচেষ্টা সংক্ষেপে তুলে ধরেন। পাশাপাশি, এসব উন্নয়ন যাঁরা দেখতে পায়না, তাঁদের কঠোর সমালোচনা করে তিনি তাঁদেরকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তাঁরা এই উন্নয়নের সুফল কিন্তু ঠিকই ভোগ করছেন।’ এরপর তিনি বলেন, যাঁরা আওয়ামী লীগকে কখনো ক্ষমতায় দেখতে চায় না এবং দেশের উন্নয়নও দেখতে পায় না, তাঁদের ব্যাপারে আমার কিছুই বলার নেই। যাঁরা দেশের উনয়ন চায় না, তাঁদের চ্যালেঞ্জ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি অবশ্যই দেশের এই উন্নয়ন অব্যহত রাখবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি নিজের বাবা-মা ও ভাই হারিয়েছি। আপনারাই (কোটালীপাড়ার মানুষ) আমার আপনজন। আপনারা সবসময়ই আমার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।” তিনি বলেন, তাঁর নিজের আত্মীয়-স্বজন ও অন্যান্যের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় না-করেই তিনি কোটালীপাড়ার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গোপালগঞ্জে এসেছেন।

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ায় তাঁর দুই দিনের সফরের অংশ হিসেবে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তিন ঘণ্টার সড়কপথে পদ্মা সেতু পার হয়ে সকাল ১১টা ২৭ মিনিটে  কোটালীপাড়ায় পৌঁছান। এ-সময় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা ও একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁর সফরকে কেন্দ্র করে পুরো গোপালগঞ্জ উৎসবের আমেজে বর্ণিল পোস্টার, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে সেজেছে এবং জেলাজুড়ে বিরাজ করছে আনন্দঘন পরিবেশ। 

প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পৌঁছানোর পর নিম, বকুল ও আম – এই তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের অধিকাংশ নেতৃবৃন্দ এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তাঁদের অনুভূতি ব্যক্ত করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করেন। শেখ হাসিনা দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন বলেও তাঁরা আশাবাদ ব্যক্ত করে শুভেচ্ছা জানান এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’কে বিজয়ী করতে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। জবাবে, প্রধানমন্ত্রী সকলকে তাঁর জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানান, যাতে তিনি জনগণের সেবা করতে পারেন।

পরে, তিনি নবনির্মিত কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় উদ্বোধন করেন। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ এবং সঞ্চালনা করেন কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ।

অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশ্যে কোটালীপাড়া ত্যাগ করার কথা। টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছানোর পরে প্রধানমন্ত্রীর  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেওয়ার কর্মসূচি রয়েছে। রাতেও প্রধানমন্ত্রীর টুঙ্গিপাড়ায় থাকার কথা রয়েছে।

রোববার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। রোববার (২ জুলাই) বিকেলে তাঁর টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর চ্যালেঞ্জ হলো – বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত স্মার্ট ও সমৃদ্ধ দেশে উন্নীত এবং দেশের মানুষকে উন্নত জীবন দান করা । তিনি বলেন, “আমার লক্ষ্য হচ্ছে, দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অবকাঠামোর উন্নয়ন। আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি, জাতি যথাযথ সম্মানের সঙ্গে মাথা উচু করে বিশ্বদরবারে এগিয়ে যাবে। আমরা এই লক্ষ্য পূরণে কাজ করতে চাই।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন,  “কিছু লোক অভিযোগ করেই যাচ্ছে, যা বলার অধিকার তাঁদের নেই। তবু তাঁরা তা করছে; কারণ, তাঁরা নির্বিবাদে কথা বলতে পারছে। তিনি বলেন, “তাঁদের ক্ষমা করে দেওয়া ছাড়া, আমার কিছু করার নেই।”

আওয়ামী  লীগ সরকারের আমলে যেসব উন্নয়ন হয়েছে, তার বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, কোটালিপাড়ার মানুষের কষ্ট লাঘবের জন্য তাঁরা রাস্তা-ঘাট, সেতু ও  অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ করেছেন। মানুষ কোটালিপাড়ায় আসার ক্ষেত্রে আগে যে-কষ্ট পেত, যোগাযেগের উন্নয়নের ফলে এখন আর তাঁদের কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয় না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশি-বিদেশিদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা তাঁর সরকারের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। তিনি বলেন, “দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ মোকাবেলা করে নিজস্ব অর্থে আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছি; এটাই  সবচেয়ে বড় কথা এবং আপনারা আমাকে সেই ক্ষমতা দিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আমাদের নিজেদের ভাগ্য গড়ার জন্য নয়, বরং জনগণের ভাগ্য গড়ার জন্য আমরা ক্ষমতায় এসেছি।” দেশে কোনো দরিদ্র থাকবে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা চরম দারিদ্র কমিয়ে এখন পাঁচ শতাংশে নিয়ে এসেছেন। তাঁর পিতা সাধারণ লোকদের বিনামূল্যে বাড়ী দেওয়ার কাজ শুরু করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাঁর সরকার  দেশের প্রতিটি গৃহহীন ও ভুমিহীন  লোককে বাড়ী দিচ্ছে; ফলে, এদেশে কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না।

প্রধানমন্ত্রী সকলের প্রতি দেশের প্রতিটি ইঞ্চি পতিত জমি চাষের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়ে বলেন, করোনা-মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও দেশে কখনও কঠিন খাদ্য-সংকট হয়নি।

Loading...