মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের মতো দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সমন্বয়ে একটি বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল রোববার (৩০ জুলাই) নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং একটি সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন পরিচালনায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতার প্রতি তাঁদের আস্থা প্রকাশ করেছে। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সফররত দলের এক সদস্য মার্কিন রাজনৈতিক বিশ্লেষক টেরি এল ইসলে বলেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আহ্বান ‘অসাংবিধানিক’ ও ‘অবৈধ’ হবে বলে আমরা মনে করি।” তিনি আরও বলেন, পর্যবেক্ষক প্রতিনিধি দলের প্রতিনিধি হিসেবে আমাদের সিদ্ধান্ত হলো – “আপনাদের নির্বাচন কমিশন সংবিধান দ্বারা অনুমোদিত ও স্বাধীন; এবং তাই উক্ত কমিশনের পরিচালনায় সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে।”
এটি ছিল দ্বিতীয় বিদেশি নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের বাংলাদেশ সফর, যার নেতৃত্বে রয়েছেন – আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক সাংবাদিক নিক পল, যিনি বর্তমানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাজনৈতিক বিষয়াদি কভার করছেন।
“আপনাদের সংবিধান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি দেয় না। এটি করার জন্য আপনাদেরকে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে” উল্লেখ করে ইসলে বলেন, “এমনকি যদি এটি একটি ভালো ধারনাও হয়, বা যদি তাঁরা এটি করতেও চান, তাহলেও তাঁরা এটি করতে পারবেন না। কারণ, এটি করার জন্য কোনো আইনি কাঠামো নেই।” তিনি বলেন, প্রতিনিধি দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সম্ভাব্যতা বারবার পর্যালোচনা করে দেখেছে যে, এটি সম্ভব কি-না এবং এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে – “এখন এটা সম্ভব নয়।”
ইসলে বলেন, তিনি একজন পর্যবেক্ষক হিসেবে মার্কিন সরকারের প্রতিনিধিত্ব করছেন না। তবে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য হতে এবং ক্ষমতাসীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জবাবদিহি দেখতে চায়। তাই তিনি বলেন, ‘সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্র বিশেষ করে এটি নিশ্চিত করার দিকে নজর রাখছে’। আর মার্কিন প্রশাসন তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গিতে সঠিক ছিল। তবে, সরকার, কমিশন ও সংশ্লিষ্ট অন্যরা যথাযথভাবে তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে পারে বলে তিনি আস্থা প্রকাশ করেন।
কমিশনের সঙ্গে দেখা করার জন্য প্রতিনিধিদলে অন্য যাঁরা ছিলেন, তাঁরা হলেন – জাপানি সমাজকর্মী ইউসুকি সুগু ও চীনা রাজনৈতিক বিশ্লেষক অ্যান্ডি লিন। সফরকালে প্রতিনিধি দল ২৯ জুলাই নির্বাচন-পূর্ব পরিস্থিতি ও রাজনৈতিক পরিবেশের মূল্যায়ন নিয়ে নাগরিক সংলাপে অংশ নেয়।
এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি, জার্মানি, নেপাল, ভারত ও ভুটানের আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের প্রথম দল বাংলাদেশ সফর করে এবং পুলিশ, নির্বাচন কমিশন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে।