মহাকাশ বিজ্ঞানে শিশু-কিশোরদের আগ্রহী করতে এবং মহাকাশের বিভিন্ন বিষয়ে জানার উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরাম ও স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্পের যৌথ উদ্যোগে এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সহযোগিতায় ঢাকায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো 'অ্যাস্ট্রনট ক্যাম্প'। আয়োজনটি ২৮-২৯ জুন ঢাকার ধানমন্ডিতে অবস্থিত ৭১ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল থেকে ৪ থেকে ১৬ বছর বয়সী ৩০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। দুই দিনব্যাপী এই আয়োজনে ছিল অ্যাপোলো মিশন নিয়ে ইন্টারএকটিভ সেশন – যা স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্পের খুদে বিজ্ঞানীদের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যেখানে চাঁদে অবতরণের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেই সাথে ২৪ টি টিমে বিভক্ত হয়ে তাঁরা বানিয়েছে স্পেইস রোবট, মুন-ল্যান্ডার, ওয়াটার রকেট ও ক্যান স্যাটেলাইট।
আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য ছিল – শিশু-কিশোরদের মধ্যে মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং তাঁদেরকে মহাকাশ গবেষণার বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অবহিত করা। প্রতিটি ওয়ার্কশপ-এর জন্য একজন অভিজ্ঞ মিশন কন্ট্রোলার এবং একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট মিশন কন্ট্রোলার ছিলেন, যাঁরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সৃজনশীল কার্যক্রম এবং কর্মশালার মাধ্যমে তাঁদের প্রজেক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা প্রদান করে।
প্রোগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ধারণা অর্জন করতে পেরেছে। তাঁরা অ্যাপোলো মিশনের ইতিহাস ও গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পেরেছে এবং মহাকাশ যাত্রার বিভিন্ন ধাপ নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছে। স্পেস রোবট, মুন-ল্যান্ডার, ওয়াটার রকেট ও স্যাটেলাইট তৈরির মাধ্যমে তাঁরা বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করেছে, যা তাঁদের সৃজনশীল চিন্তাভাবনা ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বৃদ্ধি করবে। এছাড়া, দলগত কার্যক্রমের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সহযোগিতা ও নেতৃত্বের গুণাবলী আয়ত্ত করতে পেরেছে। এই অভিজ্ঞতাগুলো ভবিষ্যতে তাঁদের মহাকাশ গবেষণা ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উন্নত ক্যারিয়ার গড়তে সহায়ক হবে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি তাঁদের আগ্রহ আরও বাড়াবে।
প্রোগ্রাম চেয়ার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড্যাফোডিল ফ্যামিলির গ্রুপ সিইও মোহাম্মদ নুরুজ্জামান। তিনি বলেন, “এই ধরনের আয়োজন আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য অত্যন্ত মূল্যবান। মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি তাঁদের আগ্রহ এবং জ্ঞানার্জনের ইচ্ছা বৃদ্ধি পাবে। আমরা আশা করি, এই অভিজ্ঞতা তাঁদের সৃজনশীলতা ও গবেষণার প্রতি মনোযোগ আরও গভীর করবে এবং ভবিষ্যতে তাঁদেরকে মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে নেতৃত্বদানকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করবে।"
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের প্রধান শিক্ষক ডঃ মোঃ মাহমুদুল হাসান বলেন, "আমাদের স্কুল সবসময়ই শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহিত করে। এই ক্যাম্পের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মহাকাশ বিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করে এবং বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভ করেছে – যা তাঁদের শিক্ষা জীবনে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।"
বাংলাদেশ ইনোভেশন ফোরামের প্রেসিডেন্ট আরিফুল হাসান অপু বলেন, “এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য হলো – শিশু-কিশোরদের মধ্যে মহাকাশ বিজ্ঞানের প্রতি ভালোবাসা এবং কৌতূহল জাগানো। আমরা আশা করি, এই ধরনের উদ্যোগের মাধ্যমে তাঁরা ভবিষ্যতে মহাকাশ গবেষণায় নিজেদের উজ্জ্বল ক্যারিয়ার গড়তে অনুপ্রাণিত হবে।"
আয়োজনটিতে নলেজ পার্টনার হিসেবে ছিল – ক্রিয়েটিভ জুনিয়র, টেক পার্টনার ড্রিমার্জ ল্যাব এবং রোবাস্ট রিসার্চ এন্ড ডেফেলপমেন্ট লিমিটেড। ই-টিকেটিং পার্টনার ই-সফট। এছাড়াও সহযোগিতায় ছিল সায়েন্টিফ্লাই এবং ৩৬৯ অসটক।
– সংবাদ বিজ্ঞপ্তি