loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • মার্টিনেজের গোলে আর্জেন্টিনার জয়; ব্রাজিলের ড্র

  • মাস্টারকার্ড ‘এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করলো পূবালী ব্যাংক

  • বিএনপি যেকোনো মূল্যে দেশে ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনবে: তারেক

  • জ্বালানি রূপান্তর ও পর্যাপ্ত জলবায়ু অর্থায়ন জরুরি: পরিবেশ উপদেষ্টা

  • অতি প্রয়োজনীয় সংস্কার করে নির্বাচন দেওয়া হবে: আইন উপদেষ্টা

ঝলমলে সকাল দিনভর সাফল্যেরই সূচক: অর্থ উপদেষ্টা


ঝলমলে সকাল দিনভর সাফল্যেরই সূচক: অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারের সাফল্যের কথা তুলে ধরে বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের শুরুটা ঝলমলে সকালের মতোই, যেখানে অন্ধকারের কোনো দৃশ্য নেই। সরকারের সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, সাফল্যের সূর্য ইতোমধ্যে উদিত হয়েছে। এটা সত্য যে, সরকারের কাছে অনেক প্রত্যাশা আছে; তবে আমরা শুরুটা খারাপ করিনি। অর্থ উপদেষ্টা মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাল্টিপারপাস হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে বিধ্বংসী অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ পেয়েছে এবং বাইরে থেকে তা অনুধাবন করা যায়-না। বিগত সরকারের সময়ে ব্যাংকিং সেক্টর থেকে পুঁজিবাজার পর্যন্ত সর্বত্র একটি অন্ধকার দৃশ্য ছিল; এমনকি উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে অনিয়ম ও দুর্নীতি চিহ্নিত ছিল। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার ও তাঁর মন্ত্রণালয় সবকিছু সঠিক পথে আনতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সরকার এ-সমস্ত অসঙ্গতিগুলি সংশোধন করার জন্য কঠোর চেষ্টা  করে যাচেছ। সরকারি কর্মচারীদের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ ভ্রমণকে নিরুৎসাহিত করা এবং কিছু জরুরি কারণ ছাড়া সরকারি যানবাহন ক্রয়ের বিষয়ে সরকার কঠোরতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে বলেও  তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বাজেটকে যৌক্তিক করার কথা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের ব্যয় এবং বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছি। আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হলো – আরও রাজস্ব সংগ্রহ করা। আমরা যদি রাজস্ব উৎপাদন না বাড়াই – আমাদের উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করতে পারবো-না।’

আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা আনার ক্ষেত্রে অর্থ উপদেষ্টা জানান, সরকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)’র আওতায় রাজনৈতিক বা অপ্রয়োজনীয়ভাবে গৃহীত প্রকল্পগুলো যাচাই-বাছাই করছে।

ব্যাংকিং খাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতকে সুষ্ঠুভিত্তিক করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ড. সালেহউদ্দিন বলেন, আগের শাসনামলে ব্যাংকিং খাতের অবস্থা ছিল খারাপ। এখন ক্ষমতার পরিবর্তনের পর কিছু ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিগত সহায়তায় পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চলছে। ইসলামী ব্যাংক পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে; যদিও এটি একটি চ্যালেঞ্জ ছিল – এ-কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যদিও কিছু ব্যাংক  প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তবে আমাদের কোনো ব্যাংক বন্ধ করার পরিকল্পনা নেই।’

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা ছিল; যা এখনো রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে নিজেই তাঁদের সংস্কার করতে হবে। শুধু আইনের সংস্কারে কাজ হবে-না। তিনি মনে করেন, মনিটরিং, তত্ত্বাবধায়ন ও নীতি নির্ধারণেরও সংস্কার করা দরকার।

পুঁজিবাজারের অবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং সরকার তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা করছে, যদিও কিছুটা সময় লাগবে।

পুঁজিবাজার পুনরুজ্জীবিত করার জন্য ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অফ বাংলাদেশ (আইসিবি)’কে তিন হাজার কোটি টাকার সহায়তাসহ পুঁজিবাজারকে চাঙ্গা করতে সরকারের কিছু পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাজারে যাতে আরও নতুন কোম্পানি আসার সুযোগ পায়, সেজন্য চেষ্টা চলছে। তিনি বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে আর্থিক খাতে আমাদের সংস্কারের উদ্যোগ এবং পদক্ষেপগুলো জনগণের কল্যাণ ও দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা অর্জনের জন্য নেওয়া হয়েছে। আমরা কোনো অ্যাড-হক ভিত্তিতে সমাধান করবো-না।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর পরিষেবা এবং কার্যক্রমের আরও আধুনিকায়নের উপর জোর দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ইতোমধ্যে ই-রিটার্ন দাখিল চার লাখ ছাড়িয়েছে। এনবিআরকে তাঁদের কাজের ক্ষেত্রে অত্যন্ত স্বচ্ছ হতে হবে এবং ব্যবসায়ী ও সাধারণ করদাতারা যাতে রাজস্ব বোর্ডকে ভয় না-পায় – সেজন্য কার্যক্রম পরিচালনা করার আহ্বান জানান তিনি।

তিনি মূল্যস্ফীতির বিষয়ে বলেন, এটা রাতারাতি বাড়েনি এবং এটা একটা জটিল সমস্যা। আগের সরকার ৬০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়েছিল, যা একটি সমস্যা তৈরি করেছিল। উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে কোনো অর্থ না-নিয়ে বকেয়া বিল ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ৪০০ মিলিয়ন ডলারে কমিয়ে এনেছে।

বিভিন্ন সেক্টরে সংস্কার একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অবিলম্বে কিছু স্বল্পমেয়াদী সংস্কার করছে এবং দীর্ঘমেয়াদী সংস্কারগুলো পরবর্তী সরকারের জন্য ছেড়ে দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি পদচিহ্ন রেখে যাবো। আমরা সংস্কারের একটি রূপরেখা দিচ্ছি এবং পরবর্তী সরকার সেগুলো অনুসরণ করবে।’

সংবাদ সম্মেলনে অর্থ সচিব মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)র সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)-এর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।

Loading...