অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ এর তৃতীয় দিনে নতুন বই এসেছে ৩২টি। এরমধ্যে গল্প একটি, উপন্যাস আটটি, প্রবন্ধ তিনটি, কবিতা ১০টি, গবেষণা একটি, শিশুসাহিত্য একটি, জীবনী দুইটি, বিজ্ঞান একটি, ভ্রমণ একটি, ইতিহাস একটি, রাজনীতি দুইটি ও অন্যান্য একটি।
এদিন বইমেলার মূলমঞ্চে দীপা দত্তের সভাপতিত্বে ‘হায়দার আকবর খান রনো : আজীবন বিপ্লব-প্রয়াসী’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সোহরাব হাসান। প্রবন্ধ বিষয়ে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন আবদুল্লাহ আল ক্বাফী রতন, জলি তালুকদার ও অনন্যা লাবণী পুতুল।
প্রাবন্ধিক বলেন, হায়দার আকবর খান রনো বাংলাদেশের বাম রাজনীতির অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি এদেশের বাম রাজনীতিক একই সঙ্গে ছাত্র ও শিক্ষক ছিলেন। তিনি কখনো কট্টরপন্থার অনুসারী ছিলেন-না; ভিন্ন মেরুর বামপন্থী নেতাদের একসঙ্গে বসিয়ে আলোচনার পথ খুলে দিতে সচেষ্ট ছিলেন। বাষট্টির ছাত্র আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং তৎপরবর্তী স্বৈরাচারবিরোধী প্রতিটি আন্দোলনে রনোর ভূমিকা ছিল প্রত্যক্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ। রাজনীতির বাইরেও বিচিত্র বিষয়ে তাঁর আগ্রহ ছিল। রনো মার্ক্সবাদী দর্শন ও বিজ্ঞানের জটিল বিষয়গুলো অত্যন্ত সহজ ভাষায় পাঠকদের কাছে তুলে ধরেছেন।
আলোচকবৃন্দ বলেন, ছোটবেলা থেকেই হায়দার আকবর খান রনো প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার মধ্য দিয়ে বড় হয়ে উঠেছেন। মার্ক্সীয় তত্ত্ব অধ্যয়ন ও অনুশীলনের সমন্বয় ঘটেছিল তাঁর জীবনে। শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল গভীর। মানুষ হিসেবে অত্যন্ত বিনয়ী হায়দার আকবর খান রনো বামপন্থীদের অনেক বিভেদের মধ্যেও নিজের নীতিতে ছিলেন অটল। তিনি সমাজতন্ত্রের যে-স্বপ্ন নিজের ভেতর লালন করেছেন, তা নিয়েই আজীবন লড়াই সংগ্রাম করেছেন।
দীপা দত্ত বলেন, হায়দার আকবর খান রনো ছিলেন আজীবন বিপ্লবী। তিনি কেবল কমিউনিস্ট নেতা-ই নন, একজন তাত্ত্বিকও। তাঁর লেখনী, রাজনৈতিক আদর্শ, সততা, নিষ্ঠা, একাগ্রতা আমাদের জন্য আগামীর প্রেরণা হয়ে থাকবে।
লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন কবি চঞ্চল আশরাফ ও শিশুসাহিত্যিক আতিক হেলাল।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন – কবি মোহন রায়হান ও রেজাউদ্দিন স্টালিন। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মাহমুদা সিদ্দিকা সুমি ও হ্যাপি হাবিবা। ড. ইঞ্জিনিয়ার খালেকুজ্জামানের পরিচালনায় ছিল সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘বাঁশরী’র পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী এ কে এম শহীদ কবির, রেজাউল করিম, মিরাজুল জান্নাত সোনিয়া, রত্না দাস, দেবাশীষ শর্মা ও মাহমুদুল হাসান।
একুশে বইমেলার মূলমঞ্চে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল চারটায় আয়োজন করা হবে ‘কুমুদিনী হাজং’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন পাভেল পার্থ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মতিলাল হাজং ও পরাগ রিছিল। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন আবু সাঈদ খান।