স্বাধীনতা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যব্যক্তিত্ব ও শিক্ষক ড. ইনামুল হক আর নেই। রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। সোমবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে বাসায় হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন ইনামুল হক। পরে, ইসলামিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
ইনামুল হক ১৯৪৩ সালে ফেনী সদরের মটবী এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। জীবনসঙ্গী নাট্যজন লাকী ইনাম। তাঁদের সংসারে দুই মেয়ে হৃদি হক ও প্রৈতি হক।
নাট্যজগতে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১২ সালে ড. ইনামুল হক একুশে পদক লাভ করেন। ২০১৭ সালে তাঁকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে সরকার।
ড. ইনামুল হকের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁরা ড. ইনামুল হকের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ইনামুল হক ফেনী পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি, ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে এইচএসসি এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরবর্তীকালে তিনি মানচেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি লাভ করেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি দীর্ঘ ৪৩ বছর শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত থাকার সময় ১৫ বছর রসায়ন বিভাগের সভা-প্রধান এবং দুই বছর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দুর্দান্ত অভিনয়ের পাশাপাশি চমৎকার গল্পের নাটক লিখেছেন ড. ইনামুল হক। টেলিভিশনের জন্য ৬০টি নাটক লিখেছিলেন তিনি। তাঁর লেখা আলোচিত টিভি নাটকের মধ্যে রয়েছে – ‘সেইসব দিনগুলি’ (মুক্তিযুদ্ধের নাটক), ‘নির্জন সৈকতে’ ও ‘কে বা আপন কে বা পর’।
নাট্যকার হিসেবে ড. ইনামুল হকের পথচলা শুরু ১৯৬৮ সালে। তাঁর প্রথম লেখা নাটক ‘অনেকদিনের একদিন’ বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রচারিত হয়েছিল। নাটকটি প্রযোজনা করেন আরেক কিংবদন্তি আবদুল্লাহ আল মামুন।
ইনামুল হকের লেখা প্রথম মঞ্চ-নাটক নাটক ‘বিবাহ উৎসব’, লিখেছিলেন উদীচীর জন্য। তাঁর নিজ দল ‘নাগরিক নাট্যাঙ্গন’-এর জন্য প্রথম লেখা নাটকের নাম ‘গৃহবাসী’। মঞ্চ ও টেলিভিশনে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন ইনামুল হক।
