loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • লিভারপুল হারলো এভারটনের কাছে, ম্যানইউ-এর শেফিল্ড-বাধা অতিক্রম

  • শুরু হলো স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা ২০২৪

  • জাভি এই মৌসুম শেষেই বার্সা ছাড়বেন না

  • নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি

  • ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

আফগানিস্তানকে হারাতে পারেনি ভারত


আফগানিস্তানকে হারাতে পারেনি ভারত

আফগানিস্তানকে হারাতে পারলো না ভারত। ২০১৮ এশিয়া কাপ ক্রিকেটের সুপার ফোর পর্বে ভারত ও আফগানিস্তানের ম্যাচটি ড্র হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ওপেনার মোহাম্মদ শেহজাদের ১২৪ রানের সুবাদে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ২৫২ রান করে আফগানিস্তান। জবাবে এক বল বাকি থাকতে ২৫২ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত। ফলে ম্যাচটি অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। অর্থাৎ ক্রিকেটবিশ্বে নতুন শক্তি হিসেবে আবিভর্ভুত হওয়া আফগানদের হারাতে ব্যর্থ হলো পরাক্রমশালী ভারত।

দুবাইয়ে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় আফগানিস্তান। ব্যাট হাতে নেমেই ভারতীয় বোলারদের উপর মারমুখি হয়ে উঠেন আফগানিস্তানের ডান-হাতি ব্যাটসম্যান আহমেদ শেহজাদ। রান তোলার কাজটা একাই করেছেন তিনি। আরেক ওপেনার জাভেদ আহমাদি ছিলেন দর্শক। ফলে ইনিংসের ৫০তম বলেই অর্ধশতক স্পর্শ করে আফগানিস্তান। এরমধ্যে শেহজাদেরই রান ছিলো ৪৫।

নবম ওভারে আউট হওয়া থেকে বেঁচে গিয়ে নিজের অর্ধশত রান পূর্ণ করেন শেহজাদ। ৩৭ বলে অর্ধশতকে পা দিয়েও ক্ষান্ত হননি শেহজাদ। আহমাদিকে নিয়ে দলের রানের চাকা একাই ঘুড়িয়েছেন তিনি। তবে দলীয় ৬৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় আফগানিস্তান। আহামাদিকে ৫ রানের থামিয়ে দেন ভারতের বাঁ-হাতি স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজা।

আফগানিস্তানের প্রথম উইকেট তুলে নিয়ে খেলায় ফেরে । দলীয় ৮১ ও ৮২ রানে তিনটি উইকেট হারায় তাঁরা। রহমত শাহকে তিন রানে জাদেজা, হাসমতউল্লাহ শাহিদি ও অধিনায়ক আসগর আফগানকে শূন্য রানে বিদায় দেন কুলদীপ।

৮২ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যাওয়া আফগানিস্তানকে সামনের এগিয়ে নিয়ে যাবার চেষ্টা করেন শেহজাদ। সাথে সঙ্গী হিসেবে পান গুলবাদিন নাইবকে। নাইব ধীরলয়ে থাকলেও, বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলে ক্যারিয়ারের পঞ্চম সেঞ্চুরির দোড় গোড়ায় পৌঁছে যান শেহজাদ।

২৯তম ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারি মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন শেহজাদ। এ-সময় দলের স্কোর ১৩১ দাঁড়ায় । যার মধ্যে ১০৩ রানই অবদান শেহজাদের। তাঁর সেঞ্চুরি পাওয়া ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফিরেন নাইব। শেহজাদের সাথে পঞ্চম উইকেটে ৫০ রান যোগ করা নাইব ব্যক্তিগত ১৫ রানে চাহারের শিকারে পরিণত হন।

এরপর ক্রিজে শেহজাদের সাথে জুটি বাঁধেন সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী। এই দু’জন ৫৫ বলে ৪৮ রান যোগ করেন তারা। সেঞ্চুরিয়ান শেহজাদকে প্যাভিলিয়নে ফিরিয়ে জুটি ভাঙ্গে যাদব । ১১টি চার ও সাতটি ছক্কায় ১২৪ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংসের পথে শেহজাদ বল খেলেছেন ১১৬টি।

শেহজাদ যখন ফিরেন তখন আফগানিস্তানের স্কোর ছিলো ৩৭ দশমিক ৫ বলে ৬ উইকেটে ১৮০ রান। শেষ দিকে দায়িত্বশীল ইনিংস খেলে দলকে লড়াকু স্কোর এনে দেন নবী। দ্বাদশ অর্ধশত রান পাওয়া ইনিংসে তিনটি চার ও চারটি ছক্কায় ৫৬ বলে ৬৪ রান করেন নবী। এছাড়া নাজিবুল্লাহ জাদরান ২০ বলে ২০, রশিদ খান ১৯ বলে ১২ ও আফতাব ছয় বলে দুই রান যোগ করেন। ভারতের জাদেজা তিনটি ও কুলদীপ দুইটি উইকেট নেন।

জয়ের জন্য ২৫৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দারুণ সূচনা করেন ভারতের দুই অনিয়মিত ওপেনার লোকেশ রাহুল ও আম্বাতি রাইদু। নয় ওভারেই দলের স্কোর অর্ধশত পার করেন তাঁরা। এখানেই থেমে যাননি রাহুল-রাইদু। স্কোর তিন অংকে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছেন এই জুটি। ১৪তম ওভারের প্রথম বলে শতরানে পৌছায় ভারতের স্কোর।

ভারতের স্কোর ১০০-তে পৌঁছার কিছুক্ষণ পরে হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ পান রাইদু। তবে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরির ইনিংসটি বড় করতে পারেননি তিনি। মোহাম্মদ নবীকে ছক্কা মারতে গিয়ে মিড-অনে ক্যাচ দেন রাইদু। চারটি করে চার-ছক্কায় ৪৯ বলে ৫৭ রানে থেমে যায় রাইদুর ইনিংস। দলীয় ১১০ রানে বিচ্ছিন্ন হয় উদ্বোধনী জুটি।

রাইদুর মত হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়েছেন রাহুলও। তবে নিজের ইনিংসটি বড় করতে পারেননি তিনিও। রশিদ খানের শিকার হওয়ার আগে পাঁচটি চার ও একটি ছক্কায় ৬৬ বলে ৬০ রান করেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়া রাহুল।

১২৭ রানের মধ্যে দুই ওপেনারের বিদায়ের পরে ভারতকে সামনে টেনে নিয়ে যাবার দায়িত্ব পায় মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু চার নম্বরে নামা অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি ও মনীষ পান্ডে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি।

অধিনায়ক হিসেবে ২০০ ম্যাচ খেলতে নামা ধোনি ও পান্ডে উভয়েই আট রান করে আউট হন। ফলে ১৬৬ রানে চার উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায় ভারত। এ-অবস্থায় দলকে চাপমুক্ত করার চেষ্টা করেন দিনেশ কার্তিক ও কেদার যাদব। পঞ্চম উইকেটে ৩৮ রান যোগ করে দলকে জয়ের পথেই রাখেন তাঁরা।

তবে ৩৯ ও ৪০তম ওভারে প্যাভিলিয়নে ফিরে যেতে হয় যাদব ও কার্তিককে। আম্পায়ারের ভুল সিদ্বান্তে বিদায় নিতে হয় কার্তিককে। চারটি চারে ৬৬ বলে ৪৪ রান করেন তিনি। ২৬ বলে ১৯ রান করেন যাদব। ভারতের শেষ দুই স্বীকৃত ব্যাটসম্যানকে তুলে নিয়ে ম্যাচের চালকের আসনে বসে আফগানিস্তান। তখন ভারতের হাতে ছিলো চার উইকেট এবং ৬২ বলে প্রয়োজন ছিলো ৪৮ রান। 

ম্যাচ জয়ের কাজটা ভারতের টেইল-এন্ডারদের উপর দায়িত্ব থাকায় ম্যাচ জয়ের সুর্বণ সুযোগ তৈরি হয় আফগানদের। অন্যদিকে, দুই টেইল-এন্ডার দীপক চাহার ও কুলদীপ যাদবকে নিয়ে ম্যাচ জয়ের লড়াই শুরু করেন জাদেজা। সপ্তম উইকেটে চাহারের সাথে ২১ ও অষ্টম উইকেট কুলদীপের সাথে ১৬ রান যোগ করেন জাদেজা। চাহার ১২ ও কুলদীপ নয় রান করে ফিরে গেলেও, ভারতের শেষ আশা হিসেবে টিকে ছিলেন জাদেজা। জয়ের জন্য শেষ ওভারে ভারতের সামনে সমীকরণ সাত রানে নামিয়ে আনেন জাদেজা।

ইনিংসের শেষ ওভারে রশিদের করা প্রথম বল থেকে কোন রান নিতে পারেননি জাদেজা। তবে দ্বিতীয় বলে বাউন্ডারি মারেন তিনি। তৃতীয় বলে এক রান নিয়ে শেষ ব্যাটসম্যান খলিল আহমেদকে স্ট্রাইকে দেন জাদেজা। চতুর্থ বলে এক রান নিয়ে ম্যাচ টাই করেন খলিল। ফলে ম্যাচ জিততে শেষ দুই বলে এক রান দরকার পড়ে ভারতের। কিন্তু ঐ ওভারের পঞ্চম বলটি মিড-উইকেট দিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন জাদেজা। পতন ঘটে ভারতের শেষ উইকেটের। 

ম্যাচটি টাই হয়। ৩৪ বলে ২৫ রান করেন জাদেজা। আফগানিস্তানের আফতাব, নবী ও রশিদ দুইটি করে উইকেট নেন। 

ম্যাচের সেরা হয়েছেন আফগানিস্তানের শেহজাদ।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ফাইনাল খেলতে নামবে ভারত। আজ বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচের বিজয়ী দল ভারতের সাথে ফাইনাল খেলবে।

Loading...