জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ৭ দফা দাবি মেনে না নিলে তাহলে সরকার পতনের আন্দোলনের হুমকি দেওয়া হয়েছে বিরোধী এই রাজনৈতিক জোটের পক্ষ থেকে। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে সরকারের পদত্যাগ ও “নিরপেক্ষ” সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে “সুষ্ঠু”, “অবাধ” ও সব দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে করার জন্য জাতীয় সংসদ ভেঙে দিয়ে “নির্বাচনকালীন সরকার” গঠনের পরামর্শও দেন তাঁরা। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
এছাড়া, আজ (৭ নভেম্বর) সরকারের সঙ্গে ঐক্যফ্রন্টের দ্বিতীয় দফা সংলাপ ব্যর্থ হলে পরের দিন রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রোডমার্চ এবং ৯ নভেম্বর সেখানে জনসমাবেশ আয়োজন করা হবে বলেও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়। সংলাপ ব্যর্থ হলে আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশ্যে পদযাত্রার হুমকি দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল - বিএনপি মহাসচিব ও ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। অবশ্য তিনি পদযাত্রার তারিখ উল্লেখ করেননি।
ঐক্যফ্রন্ট ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ-রব)-এর নেতা আ স ম আবদুর রব বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত মুক্তি দাবি করেন যাতে বিএনপি-প্রধান নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন। “নিরপেক্ষ” নির্বাচনের স্বার্থে সরকারের পদত্যাগও দাবি করেন তিনি।
কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্ট নেতা আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সকলের অংশগ্রহণ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন করতে সরকারকে বাধ্য করা হবে বলে তিনি হুমকি দেন।
সমাবেশে ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
সিলেট ও চট্টগ্রামের পর ঢাকায় ঐক্যফ্রন্টের তৃতীয় সমাবেশ আয়োজিত হয়। বিকালে শুরু হওয়া এই সমাবেশে জোটের বিভিন্ন দলের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী-সমর্থক যোগ দেন।
যেভাবে গড়ে উঠলো জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ১৩ অক্টোবর গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে তিনটি দলের সমন্বয়ে গড়ে উঠে জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়া। এর সঙ্গে বিএনপি যোগ দিলে যাত্রা শুরু হয় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নামের বিরোধী জোটের।
জাতীয় ঐক্যপ্রক্রিয়ার অন্য দুটি দল হলো - আ স ম আবদুর রবের নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল এবং মাহমুদুর রহমান মান্নার নেতৃত্বাধীন নাগরিক ঐক্য। এরপর, কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে যোগ দেয়।