loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • লিভারপুল হারলো এভারটনের কাছে, ম্যানইউ-এর শেফিল্ড-বাধা অতিক্রম

  • শুরু হলো স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা ২০২৪

  • জাভি এই মৌসুম শেষেই বার্সা ছাড়বেন না

  • নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি

  • ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করেই হারলো টাইগাররা


অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করেই হারলো টাইগাররা

টস জিতে আগে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া যখন ৩৮২ রানের লক্ষ্য ছুড়ে দিল বাংলাদেশকে, অনেকে ভেবেছিলেন ম্যাচটা হয়ত তখনই হেরে গেছে টাইগাররা। কিন্তু জবাব দিতে নেমে শুরুটা কিছুটা নড়বড়ে হলেও শেষ পর্যন্ত দারুণ লড়াই উপহার দিয়েছে দল। পরাজয়ের ব্যবধান ৪৮ রানের হলেও ৩৩৩ মোটেই ছোট স্কোর নয়। এটাই ওয়ানডেতে এখন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ স্কোর। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করা ৩৩০ রান ছিল আগের রেকর্ড। টেন্টিব্রিজে বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুই দল মিলে করেছে ৭১৪ রান - যা ক্রিকেট বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

মুশফিকুর রহিমের শতরান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ঝড়ো ফিফটি আর তামিম ইকবালের ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত - সবমিলিয়ে এই ম্যাচ থেকে বেশ কিছু ইতিবাচক বিষয় খুঁজে নিতে পারে বাংলাদেশ। এই ম্যাচে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সপ্তম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন মুশি। রিয়াদ আর সাকিব আল হাসানের পরে তৃতীয় বাংলাদেশি ব্যাটসম্যান হিসেবে এই বিশ্বকাপে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।

অজিদের বিশাল টার্গেট তাড়া করতে গিয়ে দলীয় ২৩ রানেই ওপেনার সৌম্য সরকারের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দুই ওপেনার তামিম-সৌম্য উইকেটে থিতু হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু প্যাট কামিন্সের চতুর্থ ওভারে অজি অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের সরাসরি থ্রোতে রান আউট হয়ে ফিরেছেন সৌম্য। মূলত তামিম আর সৌম্য’র ভুল বোঝাবুঝিতেই এই আউট।

সৌম্য’র বিদায়ের পরে ক্রিজে এসে তামিমের সঙ্গে ৭৯ রানের জুটি গড়েন সাকিব। কিন্তু আরও একটি পঞ্চাশোর্ধ্ব ইনিংস থেকে নয় রান দূরে থাকতেই অজি পেসার মার্কাস স্টইনিসের বলে ওয়ার্নারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। তাঁর ৪১ বলের ইনিংসটিতে ছিল সমান-সংখ্যক রান।

ইংল্যান্ড-ওয়েল্স বিশ্বকাপে নিজের প্রথম অর্ধশত রানের দেখা পাওয়ার পরে ভালোই খেলছিলেন তামিম। কিন্তু অজি ফাস্ট বোলার মিচেল স্টার্কের দ্রুতগতির বল তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে ষ্ট্যাম্প ভেঙে দিলে শেষ হয় তামিমের ৭৪ বলে ৬২ রানের ইনিংস। এই ইনিংসটি ছয়টি বাউন্ডারিতে সাজানো। তামিমের পরে লিটন দাস (২০) বিদায় নেন অ্যাডাম জাম্পার বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে। তবে এরপর আসল লড়াই উপহার দেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ।

দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ। করেছিলেন নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২১তম অর্ধশত রান। তবে সেখানেই থেমে থাকেননি, তাঁর ব্যাট কথা বলেই যাচ্ছিল। কিন্তু নাথান কোল্টার-নাইলের করা ইনিংসের ৪৬তম ওভারে প্যাট কামিন্সের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ। তাঁর কাছ থেকে আসে ৫০ বলে ৬৯ রানের ইনিংস।

মাহমুদউল্লাহর বিদায়ের পরে ক্রিজে এসে মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই বোল্ড হয়ে ফিরে যান চলতি বিশ্বকাপে এই প্রথম সুযোগ পাওয়া সাব্বির রহমান। জেতার সম্ভাবনা মূলত সেখানেই শেষ হয়ে যায়। ৯৭ বলে নয়টি চার ও এক ছক্কায় সাজানো ইনিংস খেলে মুশফিক ১০২ রানে অপরাজিত থাকলেও ৩৩৩ রানেই থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দুইটি করে উইকেট পেয়েছেন মিচেল স্টার্ক, কোল্টার-নাইল ও স্টইনিস। বাকি উইকেটটি জাম্পা’র।

শুরুতে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের বোলারদের উপর রীতিমত তাণ্ডব চালিয়েছেন অজি ব্যাটসম্যানরা। বিশেষ করে ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার। ১৪৭ বলে ১৬৬ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পথে তিনি হাঁকিয়েছেন ১৪টি বাউন্ডারি ও পাঁচটি ছক্কা। এই ইনিংস চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। সাকিবকে ছাড়িয়ে তিনিই এখন এই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক (৪৪৭)।

ওয়ার্নার ছাড়াও অধিনায়ক ফিঞ্চের ৫১ বলে ৫৩ রানের ইনিংস ও উসমান খাজার ৭২ বলে ৮৯ রানের ইনিংস দু’টি অজিদের বিশাল সংগ্রহ এনে দিয়েছে। এছাড়া গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েলের ১০ বলে ৩২ রানের ইনিংসটিও - যেখানে ছিল দুইটি চার ও তিনটি ছক্কা - রেখেছে বড় ভূমিকা।

পাঁচ উইকেট হারিয়ে পাওয়া ৩৮১ রানের এই স্কোর অজিদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৫ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪১৭ রান বিশ্বকাপে দেশটির সেরা স্কোর - যা বিশ্বকাপ ইতিহাসেও সর্বোচ্চ।

টাইগারদের মধ্যে সেরা বোলিং করেছেন সৌম্য। আট ওভারে ৫৮ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন তিনি। এক উইকেট পেলেও নয় ওভারে ৬৯ রান খরচ করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। আট ওভারে ৫৬ রান খরচ করে উইকেট-শূন্য থাকেন অধিনায়ক মাশরাফি। মেহেদি হাসান মিরাজ ১০ ওভারে ৫৯ রান খরচ করেছেন। 

যাকে দলে নিতে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে সেই রুবেল হোসেন নয় ওভারে দিয়েছেন ৮৩ রান। এছাড়া সাকিব ছয় ওভারে দিয়েছেন ৫০ রান। অর্থাৎ, রান খরচের ক্ষেত্রে সব বোলারই ব্যর্থ ছিলেন।

এদিন  ম্যাচ-সেরা নির্বাচিত হয়েছেন ডেভিড ওয়ার্নার।

এই জয়ে ছয় ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে উঠে এলো অস্ট্রেলিয়া। অন্যদিকে ছয় ম্যাচে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে পঞ্চম স্থানেই আছে বাংলাদেশ।

Loading...