২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশের স্তর পেরিয়ে ধারাবহিক ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করে একটি শান্তিপূর্ণ, সুখী উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যকে সামনে রেখে ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট পাস করা হয়েছে। আজ জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে নির্দিষ্টকরণ বিল, ২০১৯ পাসের মাধ্যমে এই বাজেট পাস করা হয়। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ: সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ স্লোগান সম্বলিত এই বাজেট পেশ করেন।
বাজেট পেশের এক পর্যায়ে অসুস্থ অর্থমন্ত্রী বক্তৃতা দিতে অসুবিধা বোধ করায় সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার পক্ষে বাজেট বক্তৃতা উপস্থাপন করেন। এছাড়া গতকাল প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীর পক্ষে সংসদে অর্থ বিল, ২০১৯ পাসের প্রস্তাব এবং বিলের ওপর আনীত বিভিন্ন সংশোধনীসহ জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণের প্রস্তাবের জবাব দেন। গতকাল এই বিল পাস হয়।
আজ বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় মন্ত্রীগণ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ব্যয়নির্বাহের যৌক্তিকতা তুলে ধরে মোট ৫৯টি মঞ্জুরি দাবি সংসদে উত্থাপন করেন। এই মঞ্জুরি দাবিগুলো সংসদে কণ্ঠভোটে অনুমোদিত হয়।
এসব দাবির মধ্যে মঞ্জুরি দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে বিরোধীদলের সংসদ সদস্যারা মোট ৮৮৩টি ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এর মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, কৃষি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় খাতে চারটি মঞ্জুরী দাবিতে আনীত ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর বিরোধীদলের সদস্যরা আলোচনা করেন। পরে কণ্ঠভোটে ছাঁটাই প্রস্তাব গুলো নাকচ হয়ে যায়।
এরপর সংসদ সদস্যগণ টেবিল চাপড়িয়ে নির্দিষ্টকরণ বিল-২০১৯ পাসের মাধ্যমে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন করেন।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের পর এটি হচ্ছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারের প্রথম বাজেট। আর এটি আ হ ম মুস্তফা কামালেরও পেশ করা প্রথম বাজেট। এছাড়া গত অর্থবছরের মতো এবারও সংসদে বিরোধীদলের উপস্থিতিতে বাজেট পাস করা হয়।
এদিকে গত ১৬ জুন থেকে ২৯ জুন পর্যন্ত মোট ১২ কার্যদিবস সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় উপনেতা বেগম রওশন এরশাদ, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও অন্যান্য মন্ত্রীসহ সরকারি ও বিরোধীদলের সদস্যরা মূল বাজেট ও সম্পূরক বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ গ্রহণ করেন।
বাজেটে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৮.২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৫.৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা, যোগাযোগ অবকাঠামো, ভৌত অবকাঠামো, আবাস, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, কৃষি, মানবসম্পদ উন্নয়ন খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।