loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • লিভারপুল হারলো এভারটনের কাছে, ম্যানইউ-এর শেফিল্ড-বাধা অতিক্রম

  • শুরু হলো স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা ২০২৪

  • জাভি এই মৌসুম শেষেই বার্সা ছাড়বেন না

  • নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি

  • ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড


নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড

আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৯ 

সংক্ষিপ্ত স্কোর

নিউজিল্যান্ড: ২৪১/৮ (৫০ ওভারে) (নিকোল্স ৫৫, ল্যাথাম ৪৭, উইলিয়ামসন ৩০; ওক্স ৩/৩৭, প্লাঙ্কেট ৩/৪২, উড ১/৪৯, আর্চার ১/৪২)
ইংল্যান্ড: ২৪১ (৫০ ওভারে) (স্টোক্স ৮৪, বাটলার ৫৯, বেয়ারস্টো ৩৬; ফার্গুসন ৩/৫০, নিশাম ৩/৪৩, হেনরি ১/৪০, গ্রান্ডহোম ১/২৫)
ফলাফল: সুপার ওভারে বেশি সংখ্যক বাউন্ডারি মেরে ইংল্যান্ড জয়ী
ম্যান অফ দি ম্যাচ: বেন স্টোক্স

নাটকীয় এক ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে দ্বাদশ ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা জিতেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড। রোববার (১৪ জুলাই) লর্ডসে অনুষ্ঠিত ফাইনালে নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে সুপার ওভারেও রান সংখ্যা সমান হলে বাউন্ডারি বিবেচনায় কিউইদের হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তুললো ক্রিকেটের জন্মভূমি।

রান-সংখ্যা সমান হওয়ায় এবারের বিশ্বকাপের ফাইনাল গড়ালো সুপার ওভারে। তাতেও আলাদা করা যায়নি না কোনো দলকে; স্কোর সেখানেও সমান। শেষ পর্যন্ত বেশি-সংখ্যক বাউন্ডারি মারার সুবাদে নিউজিল্যান্ডকে হতাশায় ডুবিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতার স্বাদ নিয়েছে ইংল্যান্ড।

রোববার (১৪ জুলাই) লর্ডসে টাই হয় স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার নির্ধারিত ৫০ ওভারের ফাইনাল ম্যাচটি। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনাল শেষ হলো সমতায়। কিউইদের আট উইকেটে ২৪১ রানের জবাবে ইংলিশরাও গুটিয়ে যায় ২৪১ রানে। ফলে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।

সুপার ওভারে ইংল্যান্ডের বেন স্টোক্স ও জস্ বাটলার মিলে করেন ১৫ রান। জবাবে নিউজিল্যান্ডও ১৫ রান করে জিমি নিশাম ও মার্টিন গাপটিলের ব্যাটে ভর করে। তাতে ফের টাই হয় ম্যাচ। 

যাহোক, নিয়মানুসারে, বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোর সুবাদে ম্যাচ জিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইংল্যান্ড। সুপার ওভারসহ নিউজিল্যান্ডের ১৪টি চার ও তিনটি ছয়ের বিপরীতে ইংল্যান্ডের চার ২৪টি ও ছয় দুইটি।

সুপার ওভারে নিউজিল্যান্ডের হয়ে বল করেন ট্রেন্ট বোল্ট। প্রথম বলে তিন রান নেন স্টোক্স। দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নেন বাটলার। পরের বলে দারুণ এক বাউন্ডারি তুলে নেন স্টোক্স। চতুর্থ বলে সিঙ্গেল। পঞ্চম বলে দুই রান। শেষ বলে বাটলারের ব্যাট থেকে আসে আরও একটি বাউন্ডারি। এতে স্কোরবোর্ডে মোট ১৫ রান যোগ করে ইংল্যান্ড।

এরপর নিউজিল্যান্ডের হয়ে ব্যাট করতে আসেন গাপটিল ও হার্ডহিটার নিশাম। প্রথমেই ওয়াইড দেন বোলার জোফ্রা আর্চার। প্রথম বলে নিশামের ব্যাট থেকে আসে দুই রান। দ্বিতীয় বলে দারুণ এক ছক্কা হাঁকান তিনি। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে নেন দুই রান করে। শেষ দুই বলে দরকার হয় তিন রানের। পঞ্চম বলে সিঙ্গেলের বেশি আসেনি, ফলে শেষ বলে দরকার ছিল দুই রান। কিন্তু এক রানের বেশি নিতে পারেননি গাপটিল। ডাবল নিতে গিয়ে জেসন রয়ের থ্রোতে রানআউট হয়ে যান তিনি। আর এতেই পার্থক্য তৈরি হয়ে যায় ম্যাচে।

২৩ বছর পরে নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পেল ক্রিকেট। এমন একটি ম্যাচ শেষে বিজয়ীর হাসি হাসলো ইংল্যান্ড - যেটিকে সর্বকালের সেরা ওয়ানডে ম্যাচ বললেও চলে। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ভারত, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার পরে ষষ্ঠ দল হিসেবে শিরোপা জিতলো ক্রিকেটের জনক দেশটি, এবং তা নিজেদের আঙিনায়। অন্যদিকে, টানা দুইবার ফাইনাল খেলা নিউজিল্যান্ডের বিশ্বজয়ীর মুকুট পরার অপেক্ষা আরও দীর্ঘ হলো।

এদিন হালকা বৃষ্টির কারণে ১৫ মিনিট দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে নিউজিল্যান্ড। ইংলিশ পেসারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিপরীতে খুব বেশি সুবিধা করতে পারেননি তাঁরা। নির্ধারিত ৫০ ওভারে আট উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান করে কিউইরা।

মার্টিন গাপটিলের বিদায়ের পরে আরেক ওপেনার হেনরি নিকোলস ও অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন মিলে ৯৮ বলে ৭৪ রানের জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে গড়ে দেন বড় সংগ্রহের ভিত। তবে বাকি ব্যাটসম্যানরা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত পাঁচে নামা টম ল্যাথামের কারণে আড়াইশোর কাছাকাছি পৌঁছাতে পেরেছে নিউজিল্যান্ড।

নিকোল্স ৫৫, ল্যাথাম ৪৭ ও উইলিয়ামসন ৩০ রান করেন। ইংল্যান্ডের পক্ষে সফল বোলার ওক্স ও প্লাঙ্কেট। দু’জনেই শিকার করেছেন তিনটি করে উইকেট। সেমিফাইনালে জয়ের নায়ক ওক্সের এদিনের খরচ ৩৭ রান। প্লাঙ্কেট দিয়েছেন ৪২ রান। একটি করে উইকেট পেয়েছেন মার্ক উড ও জোফ্রা আর্চার।

২৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের ২৪তম ওভারে দলীয় ৮৬ রানের মধ্যে চার উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। দলকে চাপে ফেলে একে একে বিদায় নেন জেসন রয়, জো রুট, জনি বেয়ারস্টো ও অধিনায়ক ওয়েন মরগান।

এরপর জুটি বাঁধেন বেন স্টোক্স ও জস্ বাট্লার। পঞ্চম উইকেটে তাঁরা যোগ করেন ১৩০ বলে ১১০ রান। দু’জনেই অর্ধশত রান করেছেন। এই জুটিতে মারমুখী ভূমিকায় থাকা বাটলারের অবদান ৬০ বলে ৫৯ রান।

৪৫তম ওভারে লোকি ফার্গুসনের ডেলিভারিতে বদলি ফিল্ডার টিম সাউদির হাতে ধরা পড়েন বাট্লার। তখনও প্রথম শিরোপা জয়ের জন্য ইংলিশদের দরকার ৩১ বলে ৪৬ রান। ইংল্যান্ডের দিকে হেলে পড়া ম্যাচে আসে নতুন মোড়।

একপ্রান্ত আগলে বুঝেশুনে ব্যাটিং করতে থাকা স্টোক্সকে সঙ্গ দিতে পারেননি ক্রিস ওক্স। এক ওভার পরে ফের বল হাতে নিজের তৃতীয় উইকেটের দেখা পান ফার্গুসন। ওই ওভারে মাত্র পাঁচ রান দেন এই কিউই পেসার।

শেষ দুই ওভারে উত্তেজনার মাত্রা চরমে পৌঁছায়। ইংল্যান্ডের প্রয়োজন তখন ২৪ রান, আর নিউজিল্যান্ডের চার উইকেট। জিমি নিশামের করা ৪৯তম ওভারের তৃতীয় বলে ফিরে যান লিয়াম প্লাঙ্কেট। পরের বলেই সাজঘরে ফিরতে পারতেন স্টোক্সও, কিন্তু সীমানার কাছাকাছি তাঁর ক্যাচ লুফে নিলেও শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করতে গিয়ে লাইনে পা ফেলে দেন ট্রেন্ট বোল্ট।

ওভারের শেষ বলে আবার উল্লাস নিশামের, উল্লাস নিউজিল্যান্ডের। ইংল্যান্ড শিবিরে তখন পিনপতন নীরবতা; বোল্ড হন জোফ্রা আর্চার।

নাটকের শেষ অঙ্ক মঞ্চায়িত হয় শেষ ওভারে। ১৫ রান ও দুই উইকেটের সমীকরণ। বোল্টের প্রথম দুই বল ডট। তৃতীয় বলে ছক্কা মারেন স্টোক্স। চতুর্থ বলেও আসে ছয় রান। ভাগ্যও যে এদিন ইংল্যান্ডের পক্ষে ছিল, তার সেরা প্রমাণ এটি। মার্টিন গাপটিলের থ্রো দুই রান সম্পন্ন করতে ডাইভ দেওয়া স্টোক্সের ব্যাটে লেগে মাঠের বাইরে চলে যায়। ফলে শেষ দুই বলে তিন রান দরকার হয় স্বাগতিকদের।

অন্যদিকে স্নায়ুচাপ ধরে রেখে দারুণ দু’টি ডেলিভারি দেন বোল্ট। ফলে দু’টি বলেই একটি করে রানের বেশি নিতে পারেননি স্ট্রাইকে থাকা স্টোক্স। উল্টো দুই বলেই ডাবল নিতে গিয়ে রানআউট হন যথাক্রমে আদিল রশিদ ও মার্ক উড। পুরো ৫০ ওভার ওভার খেলে ইংল্যান্ড অলআউট হয় ২৪১ রানেই। স্টোক্স অপরাজিত থেকেছেন ৯৮ বলে ৮৪ রান করে।

Loading...