কাতার বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে পর্তুগাল। সোমবার (২৮ নভেম্বর) রাতে লুসাইল স্টেডিয়ামে ‘এইচ’ গ্রুপে উরুগুয়েকে ২-০ গোলে হারিয়েছে দলটি। এই জয়ে ফ্রান্স ও ব্রাজিলের পরে তৃতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলো নিশ্চিত করলো পর্তুগাল।
ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোর পর্তুগাল ব্রুনো ফার্নান্দেসের দুই গোলে এক ম্যাচ বাকী রেখেই কাতার বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে উঠা নিশ্চিত করেছে। ‘এইচ’ গ্রুপে সোমবার (২৮ নভেম্বর) নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে পর্তুগাল ২-০ গোলে হারায় প্রথম বিশ্বকাপের শিরোপা জয় করা উরুগুয়েকে। ম্যাচের ৫৪ ও দ্বিতীয়ার্ধের ইনজুরি সময়ে গোল দুটি করেন ব্রুনো।
এই জয়ে গত বিশ্বকাপের শেষ ষোলোয় উরুগুয়ের কাছে পরাজয়ে প্রতিশোধও নিলো পর্তুগাল।
দুইটি খেলা শেষে দুই জয়ে পূর্ণ ছয় পয়েন্ট নিয়ে এই গ্রুপ থেকে প্রথম দল হিসেবে শেষ ষোলো নিশ্চিত করলো পর্তুগাল। সমান-সংখ্যক ম্যাচে একটি পরাজয় ও ড্রতে মাত্র এক পয়েন্ট উরুগুয়ের। গ্রুপের অন্য দুই দল – ঘানার তিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার পয়েন্ট এক। অবশ্য, শেষ ষোলোতে যাওয়ার এখনো সুযোগ রয়েছে ঘানা, দক্ষিণ কোরিয়া ও উরুগুয়ে – তিন দলেরই।
পর্তুগাল জয় দিয়ে এবারের বিশ্বকাপ শুরু করলেও, প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে দু’বারের চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে। বিশ্বকাপের মঞ্চেই পর্তুগালের বিপক্ষে সুখস্মৃতি আছে উরুগুয়ের। গতবারের বিশ্বকাপের শেষ ষোলোতে পর্তুগালের বিপক্ষে ২-১ গোলে জিতেছিল দেশটি।
এদিন, দলের তারকা খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোকে ঘিরে আক্রমণভাগ সাজানো পর্তুগাল প্রথম আক্রমণে যাওয়ার পরে বল দখলে নেয়। মূলত: মাঝমাঠ থেকে আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল তাঁরা। তবে, সতীর্থদের কাছ থেকে বল পেলেও উরুগুয়ের ডিফেন্স ভাঙতে পারছিলেন না সিআর সেভেন।
৩২ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার ভলো সুযোগ পেয়েছিল উরুগুয়ে। এডিনসন কাভানির পাস থেকে বল পেয়েই ডি বক্সের মধ্যে ড্রিবলিং করে ঢুকে যান রড্রিগো বেনটান্কার। সামনে ছিল পর্তুগালের গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তা। এগিয়ে এসে বেনটান্কারের শট রুখে দিয়ে উরুগুয়েকে গোলবঞ্চিত করেন কস্তা।
ঐ আক্রমণের পরে সমানতালে লড়তে থাকে দুই দল। আক্রমণের চেষ্টা করেও প্রতিপক্ষের ডিফেন্সে এসে আটকে যায় তাঁদের চেষ্টাগুলো।
৪২ মিনিটে বড় ধাক্কা খায় পর্তুগাল। ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন ডিফেন্ডার নুনো মেন্ডেস। কোনো গোল ছাড়াই শেষ হয় ম্যাচের প্রথমার্ধ। এই অর্ধে ৭০ শতাংশ বল দখলে ছিল পর্তুগালের। প্রথমার্ধে পর্তুগাল আটটি ও উরুগুয়ে চারটি আক্রমণ করতে পেরেছে।
বিরতির পরে মাঠে ফিরে উরুগুয়েকে চেপে ধরে খুব দ্রুতই সাফল্য পেয়ে যায় পর্তুগাল। মিডফিল্ডার ব্রুনো ফার্নান্দেসের গোলে এগিয়ে যায় দলটি। স্ট্রাইকার রাফায়েল লিয়াওর পাস থেকে গোলমুখে শট নেন ব্রুনো। বল গোল মুখে যাওয়ার সময় বলে স্পর্শ করার চেষ্টা করেন রোনাল্ডো; তবে, তাঁর স্পর্শ ছাড়াই বল জালে প্রবেশ করে (১-০)।
গোল হজমের পরে আক্রমণের ধার বাড়ায় উরুগুয়ে। উরুগুয়ের আক্রমণের চাপে রক্ষণাত্মক খেলতে থাকে পর্তুগাল। ৭৮ মিনিটে মিডফিল্ডার জর্জিয়ান ডি আরাস্কাটার ক্রস থেকে লুইস সুয়ারেজের শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন পর্তুগালের গোলরক্ষক। ৮৫ মিনিটে সুয়ারেজের আরও একটি শট পর্তুগালের গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়।
৯০ মিনিটে ভিএআর-এর সিদ্ধান্তে পেনাল্টি পায় পর্তুগাল। স্পট কিক থেকে ম্যাচের ও নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ব্রুনো।
আগামী ২ ডিসেম্বর এই গ্রুপের শেষ রাউন্ডে লড়বে পর্তুগাল ও দক্ষিণ কোরিয়া এবং উরুগুয়ে ও ঘানা।