প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষ্যে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। তিনি বুধবার (১৭ এপ্রিল) সকাল সাতটায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ-সময় স্বাধীনতার স্থপতি এই মহান নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
পরে, দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলীয় প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আরেকবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। দিবসটি স্মরণে এদিন রাজধানীর বনানী কবরস্থানে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ ও এম মনসুর আলীর কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। দিবসটির কর্মসূচির মধ্যে আরও ছিল – সকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণসহ সারাদেশে দলটির কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা। খবর – স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।
১৯৭১ সালের এই দিনে (১৭ এপ্রিল) তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করেchilo। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠন উপলক্ষ্যে প্রতিবছর ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালিত হয়ে থাকে।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালোরাতে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনী গণহত্যা শুরু করে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন, যা ইপিআর (বর্তমান বিজিবি) ওয়্যারলেসযোগে এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মাধ্যমে সারাদেশে প্রচার করা হয়। ১৭ এপ্রিল আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের জন্য মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় সমবেত হন। তৎকালীন মেহেরপুর মহকুমার বৈদ্যনাথতলা ছিল মূলত একটি আমের বাগান। পরে বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠনের পর এর নাম হয় মুজিবনগর। সেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তাজউদ্দীন আহমদকে প্রথম প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করা হয়। ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামানকে মন্ত্রিসভার সদস্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়।
মুজিবনগরের অস্থায়ী সরকারের সফল নেতৃত্ব ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাঙালিকে চূড়ান্ত বিজয় এনে দেয়।
