সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ২০৯-৪ (আফিফ ৫৬, বসিস্টো ৫৫*, মাহিদুল ৩০*, নাঈম ২৭, মিরাজ ২৬; তাসকিন ২-৩৬)
দুর্বার রাজশাহী: ২০ ওভারে ২০২-৪ (এনামুল ১০০*, জিশান ৩০, বার্ল ২৫, ইয়াসির ২০; হাসান মাহমুদ ২-২৫)
ফলাফল: খুলনা টাইগার্স ৭ রানে জয়ী
ম্যাচ-সেরা: হাসান মাহমুদ
দুর্বার রাজশাহী দুঃসময় সময় অতিক্রম করে যেন দুর্বার হয়ে উঠেছিল। দলপতি এনামুল হক বিজয় সেই যাত্রার মূল কাণ্ডারী। তবে রোববার (১৯ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে যাত্রার শেষটা হলো অতৃপ্তিতে। সেঞ্চুরি করেও দলকে জেতাতে পারেননি অধিনায়ক।
এদিন খুলনা টাইগার্সের করা ২০৯ রান তাড়া করতে নেমে রাজশাহী শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিল, যার শেষটা গিয়ে ঠেকলো দুই ওভারে ২৫ রানের সমীকরণে। ম্যাচ জয়ের সম্ভাবনা তখনো ছিল; কারণ উইকেটে ছিলেন তাঁর আগেই ৪৯ বলে ৯০ রান করা এনামুল, সঙ্গে ১২ বলে ১৯ রান নিয়ে রায়ার্ন বার্ল। কিন্তু শেষটা দুর্বার হলো-না রাজশাহীর।
সালমান ইরশাদের করা ঊনবিংশ ওভারে এলো মাত্র আট রান, সেটাও শেষ বলে বার্লের উইকেট হারিয়ে। শেষ ওভারে লক্ষ্য আরও কঠিন – ছয় বলে ১৭। জিততে পারলে ৯১ রান নিয়ে ওভার শুরু করা এনামুলের সেঞ্চুরিটাও নিশ্চয়ই হয়ে যাবে! রাজশাহী তখন একসঙ্গে দুই উদ্যাপনের অপেক্ষায়।
অন্যদিকে, খুলনা মরণ-কামড় দিতে প্রস্তত। মিরপুরে প্রথম দুই ম্যাচ জেতার পর টানা চার ম্যাচে পরাজয়; এরপর ২০৯ রান করেও কী জেতার সুযোগ হাতছাড়া করা যায়?
অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ শেষ ওভারে বল দিলেন হাসান মাহমুদের হাতে। প্রথম বলে এনামুলের হাতে চার হলেও পরের প্রতিটি বলেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন জাতীয় দলের এই পেসার। বাকি পাঁচ বলে একটিও বাউন্ডারি না-দিয়ে খরচ হলো মাত্র পাঁচ রান।
রাজশাহীর অধিনায়ক এনামুল অবশ্য শেষ বলে এক রান নিয়ে ৫৭ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেছেন। কিন্তু সেঞ্চুরি এবং দলের পরাজয় এলো একই বলে! তিনি দারুণ ব্যাটিংয়ে সবাইকেই ছাপিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শেষটা জয় দিয়ে হলো-না বলেই উপরে উঠলো-না তাঁর ব্যাট। উদ্যাপনে মেতে উঠতে পারলো-না দুর্বার রাজশাহী।
এর আগে, খুলনার অধিনায়ক মিরাজ ওপেনিংয়ে মোহাম্মদ নাঈমের সঙ্গে জুটি বেঁধে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ছিলেন। সানজামুল ইসলামের করা ইনিংসের তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে শুরুটা নাঈমই করেছিলেন। শেষ দুই বলে মিরাজের দুই বাউন্ডারিতে প্রথম ওভারেই ১৭ রান। জিশান আলমের করা পরের ওভারে আসা ১৩ রানসহ পাওয়ারপ্লেতে খুলনার রান ছিল ৬০।
দুই ওপেনারসহ ওই ছয় ওভারে খুলনাকে অবশ্য তিনটি উইকেটও হারাতে হয়েছিল। আউট হওয়া তৃতীয় ব্যাটসম্যান দলের হয়ে এদিনই প্রথম খেলতে নামা অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার অ্যালেক্স রস। পাওয়ার প্লের শেষ বলে রসের রান আউটের পর একটু সময় নিলেন উইকেটে থাকা দুই ব্যাটসম্যান আফিফ হোসেন ও উইলিয়াম বোসিস্ট। পরের তিন ওভারে মাত্র একটাই বাউন্ডারি, বোসিস্টের ব্যাট থেকে।
সময় নিয়ে উইকেটে থিতু হচ্ছিলেন দুই ব্যাটার। দশম ওভারে মার্ক দেয়ালকে আফিফের ছক্কা যার প্রথম ফলাফল। এর পর থেকে প্রায় প্রতি ওভারেই বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি; কখনো বা দুটোই। ১০ থেকে ১৫ – এই পাঁচ ওভারে ৫২ রান। আর শেষ পাঁচ ওভারে ৬২। এর প্রায় পুরোটাই চতুর্থ উইকেটে আফিফ-বোসিস্টের ৭১ বলে ১১৩ রানের জুটির কারণে। ফিফটি করেছেন দুইজনই।
১৭.৫ ওভারে আউট হয়ে যাওয়া আফিফের (৪২ বলে ৫৬) চেয়ে বেশি আক্রমণাত্মক ছিল বোসিস্টের ব্যাট। ৩২ বলে ফিফটি করে তিনি অপরাজিত ছিলেন ৩৭ বলে ৫৫ রানে।
শেষ দিকে মাহিদুল ইসলাম ছোটখাটো একটা ঝড় তুললেন স্টেডিয়ামের উইকেটে। তিনি পঞ্চম উইকেটে বোসিস্টের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৩৬ রানের জুটি গড়েছেন মাত্র ১৩ বলে।