বাংলাদেশের ‘পপসম্রাট’ আজম খানের আজ চলে যাওয়ার নয় বছর। ২০১১ সালের ৫ জুন পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন তিনি। ২০১০ সালের দিকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন দেশের প্রথম রকস্টার।
আজম খান ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার আজিমপুরে জন্ম নেন। তাঁর পুরো নাম মাহবুবুল হক খান। বাবা আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও মা জোবেদা খাতুন। তাঁরা চার ভাই ও এক বোন।
১৯৫৫ সালে আজম খান ঢাকেশ্বরী স্কুলে ভর্তি হন। ১৯৫৬ সাল থেকে কমলাপুরে থাকতেন সপরিবারে। সেখানেই আমৃত্যু ছিলেন। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময়ে আজম খান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তখন ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯৭০ সালে টিঅ্যান্ডটি কলেজ থেকে এইচএসসি উত্তীর্ণ হন এই গায়ক।
গেরিলাযোদ্ধা আজম খান ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছিলেন।
স্বাধীনতার পরে তাঁর গানের দল ‘উচ্চারণ’ দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৯৭২ সালে মূলত বন্ধু নিলু ও মনসুরকে নিয়ে ব্যান্ডের কার্যক্রম শুরু করেন। ওই বছরই তাঁর ‘এত সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে’ ও ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি বিটিভিতে প্রচারের পরে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। ১৯৭৪ সালে বিটিভিতে ‘রেললাইনের ঐ বস্তিতে’ শিরোনামের গানটি গেয়ে দেশব্যাপী আলোচনায় আসেন তিনি।
আজম খানের গাওয়া অন্যান্য জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে – ‘আমি যারে চাইরে’, ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘অ্যাকসিডেন্ট’, ‘অনামিকা’, ‘অভিমানী’, ‘আসি আসি বলে’, ‘হাইকোর্টের মাজারে’, ‘পাপড়ি’, ‘বাধা দিও না’, ‘যে মেয়ে চোখে দেখে না’ ইত্যাদি।
১৯৮২ সালে ‘এক যুগ’ নামে তাঁর প্রথম অ্যালবাম (ক্যাসেট) বের হয়। তাঁর গাওয়া গানের প্রথম সিডি বের হয় ১৯৯৯ সালে।
গানের পাশাপাশি কয়েকটি নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এছাড়া, বিজ্ঞাপনের মডেলও হয়েছিলেন পপসম্রাট।