loader image for Bangladeshinfo

শিরোনাম

  • লিভারপুল হারলো এভারটনের কাছে, ম্যানইউ-এর শেফিল্ড-বাধা অতিক্রম

  • শুরু হলো স্বাধীনতা দিবস জিমন্যাস্টিক্স প্রতিযোগিতা ২০২৪

  • জাভি এই মৌসুম শেষেই বার্সা ছাড়বেন না

  • নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার তাপ প্রবাহের সতর্কতা জারি

  • ইতালিয়ান কাপের ফাইনালে ইউভেন্টাস

যখন যেখানে প্রয়োজন সেখানে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করা হবে


যখন যেখানে প্রয়োজন সেখানে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করা হবে

দেশে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় যখন যে-এলাকায় প্রয়োজন, সে-এলাকাকে রেড জোন হিসেবে ঘোষণা করা হবে। রেড জোন ঘোষণা করা হলে তা ২১ দিনের জন্য কার্যকর হবে। মঙ্গলবার (১৬ জুন) সরকারের এক তথ্য বিবরণীতে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যেখানে যখন প্রয়োজন, তখন সেখানে রেড জোন ঘোষণা করা হবে এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তা বাস্তবায়ন করবে। পরিস্থিতি উন্নতির উপর ভিত্তি করে পরে ওই এলাকাকে ইয়েলো বা গ্রিন জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। খবর স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের।

তথ্য বিবরণীতে জানানাে হয়, জোনের সংজ্ঞা ও বাস্তবায়ন কৌশল পর্যালোচনা করে পরামর্শ দেওয়ার জন্য একটি কেন্দ্রীয় কারিগরি গ্রুপ গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জোনিং সিস্টেমের হালনাগাদ সংজ্ঞা ও বাস্তবায়ন কৌশল অনুযায়ী অব্যাহতভাবে স্থানীয় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে। জোনিং সিস্টেম চালু করতে হলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতামত সাপেক্ষে তা বাস্তবায়ন করবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারের অনুমোদন নিয়ে সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন অনুযায়ী কোনো এলাকাকে রেড, ইয়েলো বা গ্রিন জোন হিসেবে ঘোষণা করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে জেলার সিভিল সার্জনকে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, সিভিল প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা ও সশস্ত্রবাহিনী এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তা নিয়ে তিনি জোনিং কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবেন।

প্রাথমিকভাবে তিনটি জেলায় (গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী) এবং ঢাকা-উত্তর সিটি করপোরেশনের পূর্ব-রাজাবাজার এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়ারীতে পরীক্ষামূলকভাবে জোনিং সিস্টেম চালু করা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে রেড জোনের জন্য বিধিনিষেধ:

১. স্বাস্থ্যবিধি মেনে বর্ধিত সময়ে কৃষিকাজ কাজ করা যাবে।

২. স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রামাঞ্চলে কলকারখানা ও কৃষিপণ্য উৎপাদন কারখানায় কাজ করা যাবে। তবে শহরাঞ্চলে সব বন্ধ থাকবে।

৩. বাসা থেকেই অফিসের কাজ করতে হবে।

৪. কোনো ধরনের জনসমাবেশ করা যাবে না। অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে যেতে পারবেন।

৫. স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে পারবেন। রিকশাভ্যান, সিএনজি অকেটারিকশা, ট্যাক্সি বা নিজস্ব গাড়ি চলাচল করা যাবে না।

৬. সড়কপথ, নদীপথ ও রেলপথে জোনের ভিতরে কোনো যান চলাচল করবে না।

৭. জোনের ভিতরে ও বাইরে মালবাহী নৌযান ও জাহাজ শুধুমাত্র রাতে চলাচল করতে পারবে।

৮. প্রত্যেক এলাকায় সীমিত পরিমাণে প্রবেশ ও বহিরাগমন পয়েন্ট নির্ধারণ করে কঠোরভাবে জনগণের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

৯. এই জোনের অন্তর্গত মুদি দোকান ও ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। রেস্টুরেন্ট ও খাবার দোকানে শুধুমাত্র হোম ডেলিভারি সার্ভিস চালু থাকবে। বাজারে শুধু প্রয়োজনে যাওয়া যাবে। তবে শপিংমল, সিনেমা হল, জিম/স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ থাকবে।

১০. আর্থিক লেনদেনবিষয়ক কার্যক্রম যেমন টাকা জমাদান/উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেবল এটিএম-এর মাধ্যমে করা যাবে। তবে সীমিত ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু করা যেতে পারে।

১১. এলাকার রোগীদের পর্যাপ্ত কোভিড-১৯ নমুনা পরীক্ষা করা হবে। শনাক্ত রোগীরা হোম আইসোলেশন বা প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে থাকবে।

১২. শুধু মসজিদের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মসজিদ/উপাসনালয়ে সামাজিক দূরত্ব রেখে ইবাদত করতে পারবেন।

১৩. সাধারণভাবে রেড জোন ২১ দিনের জন্য বলবৎ হবে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে রেড জোন পরিবর্তন করা হবে।

রেড জোনসহ দেশের সব অঞ্চলের জন্য সাধারণ নির্দেশ:

১. সবাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরতে হবে। হাত ধোয়া, জীবানুমুক্তকরণ ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।

২. করোনা রোগ/ সংক্রমণ শনাক্তকরণ, তাদের আইসোলেশন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

৩. সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং ও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে।

৪. স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র, হাসপাতাল ও জরুরি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে। অসুস্থ ব্যক্তি পরিবহনকারী যান/ ব্যক্তিগত গাড়ি ও অ্যাম্বুলেন্স কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে চলাচল করবে।

৫. সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান - স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার পরবর্তী নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

৬. এসব কার্যক্রমের তদারকির জন্য কার্যকরী সামাজিক সম্পৃক্ততা এবং মাঠকর্মীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

এছাড়াও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১৫ জুন জারি করা প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করতে হবে। রেড জোন বাস্তবায়নকালে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সবার প্রযোজনীয় নাগরিক সেবাসহ অন্য সুবিধা-অসুবিধার দিকে খেয়াল রাখবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

এদিকে, বাংলাদেশে করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা ৯৪ হাজার ছাড়িয়েছে। দেশে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৯৪,৪৮১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় ১৭,২১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩,৮৬২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এটি এ-পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। 

দেশে গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৫৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। বর্তমানে মৃতের সংখ্যা ১,২৬২ জন। (সূত্র: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর)

Loading...