বাংলার চিরায়ত উৎসব চৈত্র সংক্রান্তি আজ। চৈত্র মাসের শেষ দিন চৈত্র সংক্রান্তি। আবার একটি বাংলা বর্ষের শেষ দিনও। পরের দিন বুধবার পয়লা বৈশাখ, নতুন বাংলা বছর ১৪২৮-এর প্রথম দিন। জীর্ণ পুরাতন সবকিছু ভেসে যাক, ‘মুছে যাক গ্লানি’ এভাবে বিদায়ী সূর্যের কাছে আহ্বান জানাবে বাঙালি।
আবহমান বাংলার চিরায়িত নানা ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে এই চৈত্র সংক্রান্তি। বছরের শেষ দিন হিসেবে পুরাতনকে বিদায় ও নতুন বর্ষকে বরণ করার জন্য প্রতিবছর চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে থাকে নানা অনুষ্ঠান-উৎসবের আয়োজন। কথিত আছে, চৈত্র সংক্রান্তিকে অনুসরণ করেই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের এত আয়োজন। তাই, চৈত্র সংক্রান্তি বাঙালির আরেক বড় উৎসব।
তবে, এবারও দ্বিতীয়বারের মতো করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে পয়লা বৈশাখসহ সবধরনের সমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। সারাদেশে ১৪ এপ্রিল থেকে সাত দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত প্রথম লকডাউন আরও দুইদিন বর্ধিত করে ১৪ এপ্রিল ভোর পর্যন্ত চলমান করা হয়। এই অবস্থায় চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে কোনো আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না, থাকবে না উৎসবের আমেজ।
এখন চলছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। প্রথম ডেউয়ের চেয়েও এবার সংক্রমণ অনেক বেশি। সংগত কারণে একইভাবে গত বছরের মতো এবারও বর্ষবরণ উৎসবের উপর সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে লোক সমাগম এড়িয়ে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। একাত্তরের পর গত বছর নববর্ষের প্রথম প্রহরে রমনার বটমুলে ছায়ানটের অনুষ্ঠান হয়নি। তারই ধারাবাহিকতায় এবছরও থাকছে না ছায়ানটের নতুন বছরের বন্দনা। অন্যদিকে রমনার বটমূলে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান থেকে ছায়ানট সরে এলেও, জানা গেছে, এ উপলক্ষে নতুন কিছু গান রেকর্ড করা হয়েছে। নববর্ষের দিন সকালে গানগুলোসহ সভাপতি সনজীদা খাতুনের কথন বাংলাদেশ টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হবে।
আগামী বছরটা যেন হয়ে উঠে করোনাভাইরাসমুক্ত নতুন বিশ্ব, নতুন বালাদেশ। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বাঙালিরা করোনা মহামারি থেকে সহসা মুক্তির প্রত্যাশা নিয়েই আজ পুরনো বছরকে বিদায় আর পরের দিন নতুন বছরকে বরণ করে নেবে তেমন কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই।